গত বছর দুই সন্তান এসেছে হিন্দি ছোট পর্দার জনপ্রিয় জুটি দেবিনা বন্দ্যোপাধ্যায় ও গুরমিত চৌধুরীর জীবনে। ছবি: জয়দীপ মণ্ডল।
গত বছর দুই সন্তান এসেছে হিন্দি ছোট পর্দার জনপ্রিয় জুটি দেবিনা বন্দ্যোপাধ্যায় ও গুরমিত চৌধুরীর জীবনে। তাঁদের অন্দরমহলে এখন খুশির হাওয়া। বড় মেয়ে লিয়ানার জন্মদিন পালন করতেই কলকাতায় এসেছিলেন গুরমিত-দেবিনা। এই ঝটিকা সফরে পত্রিকার ফোটোশুটের জন্য সময় বার করেন তাঁরা। ফোটোশুটের মধ্যেই শোনালেন ঘরকন্নার গল্পও।
বরাবরই ফোটোশুটে স্বচ্ছন্দ দেবিনা এবং গুরমিত। সমাজমাধ্যমে তাঁদের ছবি তাক লাগিয়ে দেয় অনুরাগীদের। মেকআপের ফাঁকে জমে উঠল গল্প। গুরমিত বললেন, ‘‘আমার চেয়ে দেবিনা এখন বেশি ব্যস্ত। নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলেছে। রাতদিন তার ফোটোসেশন চলছেই। তবে সেই সঙ্গে দুই মেয়েকে ও-ই সময় দেয় বেশি, সামলায়ও। স্ত্রী হিসেবে দেবিনা যতটা ভাল, মা হিসেবে ও তার চেয়েও বেশি ভাল।’’ চার মাস বয়সি ছোট মেয়েকে খাইয়ে মেকআপে বসলেন দেবিনা। গুরমিতের কথার রেশ টেনেই শুরু করলেন, ‘‘দুই মেয়ে হওয়ার পর আমার জীবন বদলে গিয়েছে। আগে নিজের জন্য ভাবতাম। এখন ওদের কীসে সুবিধে হবে, ওরা ভাল থাকবে, তা ভেবেই প্রতিটা পা ফেলি।’’
বাইরে তখন রোদের প্রচণ্ড তেজ। ঘরের ভিতরে এসির আরামদায়ক পরিবেশ থেকে বেরোলেই দরদর করে ঘাম, তার উপরে মেকআপ করা থাকলে তো কথাই নেই। কিন্তু গরমেও অনুষ্ঠানে তো যেতেই হয়। ফোটোশুট শেষ হলেই এক বন্ধুর জন্মদিনে যাবেন সেলেব দম্পতি। তাই এ সময়ে নিজের স্টাইলিংয়ে বদল আনা দরকার। গুরমিত-দেবিনার লুক থেকে স্টাইলিং টিপস নিতেই পারেন আপনিও। স্টাইলিস্ট পুষ্পক সেন বলছেন, গরমের অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ কিছু লুক ক্রিয়েট করতে হবে। পোশাক হবে এমন যা আপনাকে সকলের থেকে আলাদা করবে, আবার তা পরে আরামও হবে। গুরমিত-দেবিনার জন্য পুষ্পক বেছে দিলেন সে রকমই পোশাক। গাঢ় নীল রঙের অ্যাসিমেট্রিক্যাল কুর্তা, সঙ্গে স্ট্রেট প্যান্টস। নীল রং যে কোনও সময়ে ট্রেন্ডিং। আর তার মধ্যে এমব্রয়ডারি নতুনত্ব নিয়ে এসেছে। গুরমিতের ব্যক্তিত্বকেও অন্য মাত্রা দিয়েছে। এ দিকে দেবিনা পরলেন লং প্যাটার্ন ড্রেস। এই ধরনের পোশাকের বিশেষত্ব, চেহারার আদল সহজে ধরা পড়ে না। তার সঙ্গে গলায় পরলেন চোকার।
‘রামায়ণ’, ‘গীত হুই সবসে পরাই’, ‘পুনর্বিবাহ জ়িন্দেগি’-র মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিক ছাড়াও একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন গুরমিত। দেবিনার সঙ্গে গুরমিতের প্রেম ‘রামায়ণ’-এর সেটেই। সেই প্রেমে কখনও ভাটা পড়েনি বলেই জানালেন যুগলে। পরের শটের জন্য এ বার তাঁরা তৈরি। গরমের পোশাকের রং বাছাই করাটা খুবই জরুরি। দেবিনা বললেন,‘‘আমার কালেকশনের পঞ্চাশ শতাংশ পোশাকই সাদা। কিন্তু চোখের আরামের জন্য যে কোনও প্যাস্টল শেড আমার খুব পছন্দ।’’ স্টাইলিস্টের বেছে দেওয়া হলুদ রঙের কাফতানটি খুবই পছন্দ হল বঙ্গতনয়ার। মা হওয়ার পরে অনেকটাই ওজন বেড়েছে দেবিনার। তাই পোশাক বাছাইয়ের ব্যাপারে তিনি এখন সাবধানী। বললেন, এমন পোশাকই তিনি পরতে পছন্দ করেন, যাতে তাঁকে ভাল লাগে এবং ভারী না দেখায়। তাই কাফতান তাঁর বিশেষ পছন্দের, সকাল-সন্ধে যে কোনও সময়েই পরা যায়। ভিন্নতা আনতেই সঙ্গে রাখা হল স্পোর্টস শু। তার সঙ্গে মানিয়ে গুরমিতের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে হলুদ ব্লেজ়ার। দম্পতির একই রঙের পোশাক এখন ফ্যাশনেও চলছে।
পরের শটের জন্য গুরমিত বেছে নিলেন ডেনিমের বন্ধগলা। যার মূল আর্কষণ জালি কাজের এমব্রয়ডারি। ‘‘এমন পোশাক পরতে ভালবাসি যেখানে আমার চেহারা ভাল ভাবে বোঝা যায়। অনেক শারীরিক কসরত করে নিজের চেহারা বানিয়েছি। সেটা পোশাকের ভিতর থেকে বেরিয়ে না এলে চলে?’’ হেসে বললেন গুরমিত। তাই বন্ধগলার চেন খানিকটা খুলে রাখলেন তিনি। থ্রি পিস পোশাকটিও দেবিনাকে মানিয়ে গিয়েছে। প্যাস্টল শেডের পোশাকের দিকে এখন ফ্যাশনপ্রেমীরা ঝুঁকছেন। দেবিনার ক্রপ টপ, পাতিয়ালা ও কেপের কিছু অংশে স্টোন দিয়ে হাইলাইট করা হয়েছে। স্ত্রীর পছন্দের তারিফ করে গুরমিত বললেন, ‘‘ফ্যাশনের ব্যাপারে দেবিনাকে ফলো করি। ও হল আমার ফ্যাশন মেন্টর।’’
মেকআপ: বাবুসোনা সাহা স্টাইলিং:পুষ্পক সেন
পোশাক (গুরমিত): অভিষেক দত্ত (ডেনিম বন্ধগলা), হাউজ় অফ দেবারুন (সামার ব্লেজ়ার), যজ্য বাই আদিত্য জৈন (গাঢ় নীল কুর্তা),
পোশাক (দেবিনা): সৌন্ধ (কাফতান, লং ড্রেস), সাস্যা (পাটিয়ালা, কেপ)
গয়না: ইন্ডিয়ান জেম অ্যান্ড জুয়েলরি ক্রিয়েশন, আভামা জুয়েলার্স
ফুড পার্টনার:চাওম্যান