বহু রোগে পথ্য হিসেবে দই খেতে বলা হয়।
রোজকার পাতে দই থাকলে হঠাৎ আসা রোগের সঙ্গে লড়াইটা কিছুটা হলেও সহজ হয়। বহু রোগে পথ্য হিসেবে দই খেতে বলা হয়। এর মধ্যে রয়েছে প্রো-বায়োটিক উপাদান অর্থাৎ বন্ধু ব্যাকটিরিয়া। যেগুলো শরীরের মধ্যে ক্ষতিকারক ব্যাকটিরিয়াকে ধ্বংস করে পরিপাকে সাহায্য করে। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এ ছাড়া প্রোটিন, ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন বি ১২ সহ নানা পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর টক দই। তাই দৈনিক গড়ে ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম টক দই খাদ্যতালিকায় রাখতে পারলে খুব ভাল। ‘‘দুধ খেলে অনেকেরই ডায়েরিয়া বা পেট ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। আবার যাঁরা দুধ ও ছানার মধ্যে থাকা ল্যাকটোজ় সহজে হজম করতে পারেন না, তাঁরা দুধের বিকল্প হিসেবে টক দই খেতে পারেন,’’ বললেন পুষ্টিবিদ সুবর্ণা রায়চৌধুরী।
• টক দই শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। আবার রক্তের এলডিএলের মাত্রাও কমিয়ে দেয়। ডায়াবিটিস, হৃদ্্রোগ বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় টক দই হতে পারে সাহায্যকারী বন্ধু।
• টক দই শরীরে টক্সিন জমতে দেয় না। ফলে কোষ্ঠ পরিষ্কার থাকে।
• চল্লিশ বছরের ঊর্ধ্বে মহিলাদের জন্য টক দই খুব জরুরি। প্রতি ২৫০ গ্রাম দইয়ে ২৭৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। রোজ এই ক্যালসিয়াম গ্রহণে হাড় শক্ত হয়। অস্টিয়োপোরোসিস প্রতিরোধের অব্যর্থ দাওয়াইও টক দই।
• আবার শরীরের মেদ বৃদ্ধিতে সহায়ক হরমোন তৈরিতেও বাধা দেয় টক দইয়ে থাকা ক্যালসিয়াম। তাই টক দই খেলে বাড়তি ওজন কমার সম্ভাবনাও রয়েছে। একই কারণে রোজ টক দই খেলে দাঁতের গঠনও মজবুত হয়।
• টক দইয়ে উপস্থিত মিনারেল ত্বক ও চুল ভাল রাখে।
• পেট ব্যথা, পেশিতে টান ধরার মতো সমস্যায় ভুগলেও টক দই খেতে পারেন।
কিন্তু দই খাওয়া নিয়ে ভ্রান্ত ধারণাও আছে। পুষ্টিবিদ সুবর্ণা রায়চৌধুরীর মতে, ‘‘কেউ কেউ মনে করেন যে, দই খেলে অ্যাসিড হবে। কিন্তু দই নিজেই অন্য খাদ্যের পরিপাক করিয়ে অ্যাসিড নষ্ট করে বলে, ফলে এটি খেলে অ্যাসিড হয় না। মাংস খাওয়ার পরে নির্দ্বিধায় খেতে পারেন টক দই। বরং হজমে সাহায্য করবে। অনেকের ধারণা দই খেলে ঠান্ডা লাগে। কিন্তু দইয়ের সঙ্গে সরাসরি ঠান্ডা লাগা বা গলা নষ্ট হওয়ার যোগাযোগ নেই। তবে ঠান্ডা দই খাবেন না।’’
দই খাওয়ার ব্যাপারেও সতর্কতা আবশ্যক। দই পাতার পরে ২৪ ঘণ্টার বেশি রাখা থাকলে দইয়ের পুষ্টিগুণ কিন্তু ক্রমশ কমতে থাকে।