আলিয়া ভট্টের সেই ঝুমকো দুল। ছবি : সংগৃহীত।
পুজো পেরোলেই বিয়ের মাস শুরু। তাই বিয়ের কেনাকাটি শুরু হয়ে গিয়েছে এখন থেকেই। প্রথমেই নিশ্চয়ই পোশাকের মন দিয়েছেন। তার পরে গয়না? কিন্তু কনে সাজাতে যাঁরা সিদ্ধহস্ত, তাঁরা বলছেন, পোশাক বাছার আগে গয়না বাছা দরকার। তারও আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কানের দুলের ব্যাপারে।
বিয়ের সাজ হিসাবে দুল বরাবরই একটু কম গুরুত্ব পায়। তার অবশ্য কারণও আছে। অনেকেই ভেবে নেন, দুল তো ওড়না বা চুলের সাজে ঢাকা পড়ে যাবে। পোশাক আর গলার নেকলেস পেরিয়ে দুল পর্যন্ত কারও নজর পৌঁছবে না। কিন্তু অভিজ্ঞ কনে সাজানোর শিল্পীরা বলছেন, দুল মুখের ছাঁদ ঠিক করে দেয়। তা ছাড়া, বিয়ের সাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কনের চুল পিছন দিকে টেনে বাঁধা হয়। তাই গালের দু’পাশের সাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে দুল ঠিক না হলে।
বিয়ের দিন পরার জন্য সাধারণত ঝুমকো, বড় ঝোলা দুল, কানপাশা, চাঁদবালি, টানা কানের দুল বেছে নেন কনেরা। কিন্তু আপনার মুখে কোন দুল মানাবে বুঝবেন কী করে?
ঝুমকা গিরা রে
ঝুমকা বা ঝুমকো দুল যে কোনও ধরনের মুখের সঙ্গেই মানিয়ে যায়। মুখ লম্বাটে হোক বা গোল, ঝুমকো সব মুখেই একটা আলগা সৌন্দর্য আনে। আবার তাতে ঐতিহ্যের ছোঁয়াও থাকে ভরপুর। আলিয়া ভট্ট, ক্যাটরিনা কইফ নিজেদের বিয়ের সাজের জন্য বেছে নিয়েছিলেন ঝুমকো দুলই।
বিয়ের সাজে ক্যাটরিনা কাইফ। ছবি: সংগৃহীত।
দোলে দোদুল দোলে ড্যাঙ্গলার
খুব ঐতিহ্যবাহী সাজগোজ এড়াতে চাইলে ঝুমকোর বদলে অন্য ধাঁচের ঝোলা দুল বেছে নেওয়া যেতে পারে। আরও আধুনিক সাজতে চাইলে গলায় কোনও নেকলেস না পরে শুধুই দু’টি জমকালো ঝোলা দুল পরতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে লম্বা মুখের থেকে গোলগাল মুখেই ঝোলা দুল ভাল লাগে বেশি। অঙ্কিতা লোখণ্ডে তাঁর বিয়েতে হিরে বসানো পোলকির ঝোলা দুল পরেছিলেন।
বিয়েতে ড্যাঙ্গলার পরেছিলেন অঙ্কিতা লোখন্ডে। ছবি: সংগৃহীত।
কানপাশায় কিস্তিমাত
কানপাশা যেমন এক দিকে ঐতিহ্যবাহী হতে পারে। তেমনই আধুনিক সাজের সঙ্গেও মানিয়ে যেতে পারে। কান অনেকটা ঢাকা বড় বসা দুল অবশ্য লম্বাটে মুখে ভাল লাগবে বেশি। দক্ষিণী অভিনেত্রী নয়নতারা তাঁর বিয়ের সাজে লাল শাড়ির সঙ্গে পরেছিলেন পান্না আর হিরে বসানো বড় কানপাশা। কানপাশার সুবিধা হল গলার ভারী নেকলেসের সঙ্গে দিব্যি সঙ্গত করতে পারে এই দুল।
পান্না-হিরের কানপাশায় নয়নতারা। ছবি: সংগৃহীত।
ইয়ে তেরে চাঁদবালিয়া
হিন্দিতে দুলকে বলা বয় বালিয়া। চাঁদবালি বা চাঁদবালিয়া আসলে চাঁদের মতো দেখতে দুল। এই ধরনের দুলে মুঘল অনুপ্রাণিত নকশা দেখা যায় বেশি। আকারেও অন্য দুলের থেকে বড় হয় এই দুল। পানের মতো মুখের আকৃতিতে এই দুল মাননসই। তবে গোল বা লম্বাটে মুখেও মন্দ লাগবে না। কনে সাজানোর শিল্পীরা বলছেন, চাঁদবালির সঙ্গে মাথায় টিকলি পরলে ভাল লাগবে। যেমনটা নিজের বিয়ের সাজে পরেছিলেন অভিনেত্রী করিশ্মা তন্না।
করিশ্মা তন্না পরেছেন চাঁদবালি দুল। ছবি: সংগৃহীত।
দেবসেনার সেই দুল
এই দুল শুধু কানে নয়। কান থেকে পৌঁছে যাবে মাথাতেও! বাহুবলী ছবিতে দেবসেনার চরিত্র ওই দুল পরেছিল। তার পর থেকে পুরনো এই দুলের নকশা নতুন করে ফিরেছে ট্রেন্ডে। সাধারণত চাঁদবালির সঙ্গে বা ঝুমকোর সঙ্গে নকশাদার চেন টেনে চুলের পিছন দিকে আটকে দেওয়া হয় এই ধরনের দুলে। এই টানা কানের চেন যে কোনও দুলের সঙ্গেই মিলিয়ে পরা যেতে পারে। তবে এই ধরনের দুল পরলে ব্লাউজের গলা একটু নিচু করে নিতে ভুলবেন না। দুলের নকশাই বোঝা যাবে না তা হলে।
বাহুবলী ছবির দৃশ্যে দেবসনার চরিত্রে অনুষ্কা শেট্টি। ছবি: সংগৃহীত।