ভাইফোঁটার সাজগোজও হোক জমাটি। ছবি: সংগৃহীত।
দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো পেরিয়ে ভাইফোঁটা। বাঙালির দীর্ঘ উৎসবের একেবারে শেষ প্রান্তে ভাই-বোনের এই উদ্যাপন। সারা বছর যে ভাইয়ের সঙ্গে খুনসুটি, রাগ-অভিমান, ঝগড়াঝাঁটি চলে, তাঁর কপালে ফোঁটা দেওয়ার এই উৎসব জমাজমাট করে তোলেন বোনেরা। আয়োজনে যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে, সে দিকে কড়া নজর থাকে বোনেদের। আর আয়োজকের ভূমিকা পালন করতে গিয়ে সাজগোজই করা হয়ে ওঠে না তাঁদের। অনেকেই হাতের সামনে যা পান, সেটাই পরে নেন। মূলত পূর্বপরিকল্পনার অভাবেই আর গুছিয়ে সাজগোজ করা হয়ে ওঠে না। তবে এ বারের ভাইফোঁটায় শুধু আয়োজন নয়, সাজগোজও হোক জমকালো। ভাইফোঁটার ‘শো-স্টপার’ হলেন ভাইয়েরা। তাই সাজগোজে বোনেদের পাল্লা দিতে পারেন তাঁরা। কী পরবেন, কী ভাবে সাজবেন— পরামর্শ দিলেন দুই পোশাকশিল্পী।
ভাইফোঁটার সাজ হোক ঘরোয়, স্নিগ্ধ। ছবি: সংগৃহীত।
বোনেদের সাজ
ভাইফোঁটায় বোনেদের ছোটাছুটির শেষ নেই। খাবারের আয়োজন করা থেকে ভাইফোঁটার থালা সাজানো— কাজ তো কম নয়! ইচ্ছা থাকলেও ঝক্কির ভয়ে অনেকেই তাই শাড়ি পরতে চান না। কিন্তু পোশাকশিল্পী তনয় পাল অভয় দিচ্ছেন, কেউ চাইলে শাড়ি পরতেই পারেন। উৎসব এলেই সাজগোজের তাগিদ বাড়ে। সেই সুযোগ একেবারেই মিস্ করা উচিত নয়। তনয়ের মতে, ভাইফোঁটার মতো এমন স্নিগ্ধ এবং ঘরোয়া উৎসবে শাড়ি পরার কোনও বিকল্প নেই।
এমনিতে উৎসবের মেজাজ অনুযায়ী সাজগোজের কথা বলে থাকেন পোশাকশিল্পীরা। সে ক্ষেত্রে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে কী ধরনের শা়ড়ি পরা যেতে পারে? তনয়ের পরামর্শ, ভাইফোঁটায় সুতি, খাদি, হালকা চান্দেরি শাড়ি পরা যেতে পারে অনায়াসে। এখনও যে হেতু শীত পড়েনি, ফলে শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে স্লিভলেস ব্লাউজ পরলেও বেশ সপ্রতিভ দেখাবে। ভাইফোঁটা মূলত দুপুরের অনুষ্ঠান। সে ক্ষেত্রে শাড়ির সঙ্গে হালকা গয়না পরলে ভাল দেখাবে। শাড়ির মধ্যে সিল্কও ভাল বিকল্প হতে পারে বলে জানালেন তনয়। তাঁর কথায়, ‘‘সে ক্ষেত্রে প্রিন্টেড পিয়োর সিল্ক পরলে বেশ অন্য রকম দেখাবে।’’ অনেকেই বুঝতে পারেন না, ভাইফোঁটার সাজে কোন রঙের পোশাক বাছবেন। সেটাও বলে দিলেন পোশাকশিল্পী। পিচ, পেস্তা, নীলচে সবুজ, উজ্জ্বল হলুদ রঙের পোশাক পরার কথা বলছেন তিনি। কেউ যদি শাড়ি পরতে না চান, তা হলে আনারকলিও পরতে পারেন।
সাবেকি সাজেও হতে পারে ভাইফোঁটা।
ভাইয়েদের সাজ
হোক না বিকল্প কম, তাই বলে বোনেদের কাছ থেকে ফোঁটা নিতে বসার আগে ছেলেরা একটু সাজগোজ করবেন না? ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান যতটা বোনেদের, ঠিক ততটা তো ভাইদেরও। এমন দিনে সাজগোজের পাল্লা দু’পক্ষেরই ভারী হওয়া চাই। ভাইদের ভাইফোঁটার সাজ কেমন হবে? পোশাকশিল্পী শ্রীপর্ণা কর বলেন, ‘‘ভাইয়েরা চাইলে বোনেদের সঙ্গে পোশাকে রংমিলন্তি করতে পারেন। ছবিও বেশ দারুণ উঠবে। আবার দেখতেও ভাল লাগবে। বোনেদের সঙ্গে মিলিয়ে পোশাক পরার এমন সুযোগ সচরাচর আর আসে না।’’ এমনিতেই অনেক উৎসব ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। ফলে খুব ভারী, জমকালো পোশাক পরতে চান না অনেকেই। কেউ ফিউশন পোশাকেও সাজতে পারেন বলে জানালেন পোশাকশিল্পী। ডেনিমের সঙ্গে কেউ কুর্তা পরতে পারেন। একরঙা কুর্তা হলে দেখতে ভাল লাগবে বলে জানালেন পোশাকশিল্পী। ফ্লোরাল প্রিন্টের শার্ট কিংবা কুর্তাও কেউ চাইলে বেছে নিতে পারেন।