গলার ত্বকে বলিরেখা পড়লে কী করবেন। ছবি: ফ্রি পিক।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক নিয়মে ত্বক কুঁচকে যায়। কিন্তু যদি কম বয়সেই ত্বকে বলিরেখা পড়তে শুরু করে তখন তা চিন্তার ব্যাপার। মহিলারা যে বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তা করেন, তা হল গলার চামড়া ঝুলে যাওয়া বা কুঁচকে যাওয়া। চল্লিশের পর থেকে অবধারিত ভাবেই গলার ত্বকের সেই টান টান ভাবটা চলে যেতে থাকে। আর ঘাড়-গলার ত্বকে বলিরেখা পড়লেই কেমন যেন বুড়োটে ছাপ চলে আসে। তখন মুখে গাদা গাদা প্রসাধনী লাগিয়েও লাভ হয় না। মুখের পাশাপাশি গলার ত্বকও টান টান রাখতে তাই অনেকেই বিভিন্ন রকম স্কিন থেরাপি করান, বোটক্সও করান। কিন্তু এই সবের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকে। তাই যদি কিছু ঘরোয়া নিয়ম মেনে চলেন, তা হলে এই সমস্যাই হবে না। আপনার বয়স বুঝতে পারবে এমন সাধ্য কার!
সবচেয়ে আগে রোজের জীবনে কিছু নিয়ম মানতে হবে। প্রতি দিন অন্তত ২০ মিনিট হলেও গায়ে সূর্যের আলো লাগান। দুপুরের চড়া রোদে নয়, সকালের রোদই ত্বকের জন্য ভাল। এতে ভিটামিন ডি তৈরি হবে ত্বকে। ভিটামিন ডি থেকেই পুষ্টি পাবে ত্বক, অকালে বলিরেখা পড়বে না। খাওয়াদাওয়ায় নজর দিতে হবে। প্রচুর শাকসব্জি, টাটকা ফল, ফলের রস খেতে হবে। বাইরের খাবার খাওয়া একেবারেই চলবে না। বেশি চিনি দেওয়া পানীয়, প্যাকেটজাত পানীয়, অ্যালকোহল, প্রক্রিয়াজাত মাংস কম খেলেই ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। ধূমপানের নেশা থাকলে তা কমাতে হবে। তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যেরও খারাপ প্রভাব পড়ে ত্বকে।
শুষ্ক ত্বকে বলিরেখা পড়ে দ্রুত। তাই ত্বকের চাই আর্দ্রতা। তার জন্য শুধু প্রসাধনী মাখলেই হবে না। বরং বেশি করে জল খেতে হবে। ত্বক টান টান রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া জরুরি।
প্রতি দিন সকালে স্নানের পরে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং ফেরুলিক অ্যাসিডযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্রিম ত্বকে পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখে। চামড়া ঝুলে যাওয়া বা বলিরেখা পড়ার মতো সমস্যা সহজে হয় না।
ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে হলে সঠিক ময়েশ্চারাইজ়ার বেছে নিতে হবে। নিষ্প্রাণ, কুঁচকানো ত্বকে জেল্লা ফেরাতে এমন ময়েশ্চারাইজ়ার বাছতে হবে, যাতে হায়ালুরনিক অ্যাসিড আছে। ত্বকে কোনও রকম ক্ষত সৃষ্টি হলে তা চট করে নিরাময় করতে পারে এই অ্যাসিড। কারণ ক্ষতস্থানে দ্রুত নতুন কোষ তৈরি করতে এবং ক্ষতের দাগ দূর করতেও হায়ালুরনিক অ্যাসিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বলিরেখার মতো সমস্যা দূর করতে ‘রেটিনল’ যুক্ত ক্রিম, ইমালশন বা সিরাম ব্যবহার করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরাই। তবে এই অ্যাসিডের মাত্রা একটু বেশি হয়ে গেলেই ত্বকের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। রেটিনলের প্রধান উপাদান হল ভিটামিন এ। রেটিনলযুক্ত ক্রিম ত্বকের বলিরেখা দূর করতে পারে। তবে স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য এই ক্রিম উপযুক্ত নয়।
ঘাড়-গলার ত্বকে নিয়মিত টি ট্রি তেল বা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ মোরিঙ্গা তেল দিয়ে মালিশ করতে পারেন। তা ছাড়া নারকেল তেল যে কোনও ত্বকের জন্যই স্বাস্থ্যকর।
এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। অনেকেরই ত্বক স্পর্শকাতর। অ্যালার্জির সমস্যাও থাকতে পারে। তাই বলিরেখা দূর করতে কোন ধরনের ময়শ্চারাইজ়ার বা তেল ব্যবহার করা উচিত তা জানতে ত্বক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।