Rupanjana-Ratool

বিয়ের পরে প্রথম পুজো, নতুন মেজাজে দেখা দেবেন রূপাঞ্জনা, কেমন সাজবেন দম্পতি?

বিয়ের পর প্রথম পুজো রূপাঞ্জনা-রাতুলের। সিঁদুর খেলা থেকে সপ্তমী— পুজোর সাজে কে কাকে দশ গোল দেবেন? আনন্দবাজার অনলাইনের পাতায় রইল তার ঝলক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৪৬
Share:
০১ ১৮

এ বছর এপ্রিলের মাঝামাঝি নতুন জীবনে পা রেখেছেন অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র। নতুন বিয়ের পর এটাই প্রথম পুজো। দাম্পত্যের গায়ে ৬ মাসের পুরনো গন্ধ। তবে তিনি এখনই নতুন বৌয়ের লুক থেকে বেরোতে চান না। শাড়ি, সিঁথিভর্তি সিঁদুর, হাতজোড়া শাঁখা-পলা— বাঙালি বধূর সাজেই স্বচ্ছন্দ রূপাঞ্জনা।

০২ ১৮

৬ বছরের প্রেম পর্বে পুজোয় একসঙ্গে সময় কাটাননি, তা নয়। তবে এ বছর পরিচালক রাতুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণ বদলে গিয়েছে রূপাঞ্জনার। প্রেম পরিণতি পেয়েছে। তাঁরা এখন স্বামী-স্ত্রী। ভরা শরতে তাঁদের সম্পর্কে আপাতত বসন্তের রং। দু’জনের দশমীর সাজেও রয়েছে সেই রঙের ছোঁয়া।

Advertisement
০৩ ১৮

রাতুলের দেওয়া লাল সিঁদুরে রঙিন হয়েছে রূপাঞ্জনার সিঁথি। পুজোর বাকি দিনগুলির চেয়েও তাই সিঁদুরখেলা নিয়ে বেশি উত্তেজিত অভিনেত্রী। দুর্গাবরণ, সিঁদুরখেলার ছাড়পত্র পেয়েছেন। তাই দশমীর সাজে লাল ছাড়া আর কিছু ভাবতেই পারেন না অভিনেত্রী। শুধু সিঁথি নয়, তাই দশমীর সাজও রাঙা হওয়া চাই। ব্লক প্রিন্টের লাল কাতান সিল্কের সঙ্গে সোনালি রঙের নকশা করা ব্লাউজ়, কানে কানপাশা, গলায় সোনালি চোকার, নাকে টানা নথ— রূপাঞ্জনার দশমীর সাজে মুগ্ধ রাতুল।

০৪ ১৮

তবে এ বছর রূপাঞ্জনা সিঁদুর খেলবেন মায়ের পৈতৃকবাড়ি ঝাড়গ্রামে। নবমীর দিন কলকাতা ছাড়বেন সপরিবার। তবে ঝাড়গ্রামে যাওয়ার উৎসাহ যার সবচেয়ে বেশি, সে হল রূপাঞ্জনার ছেলে রিয়ান। সাউথ সিটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির এই পড়ুয়ার কাছে পুজো মানেই ঝাড়গ্রাম। কারণ, সেখানেই রয়েছে তার বন্ধু, খেলার সাথী, ভাইবোনেরা। মায়ের মতো সে-ও তাই দশমীতে সেখানে যাওয়ার জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে আছে। তা ছাড়া, পুজোর সময়ে কাছের মানুষগুলি একসঙ্গে থাকলে, আর কিছু চাই না। তাঁরা বলেন, রূপাঞ্জনা-রাতুল-রিয়ান একসঙ্গে থাকলে বছরের যে কোনও সময়ে উৎসবের আবহ তৈরি হয়ে যায়।

০৫ ১৮

বিয়ের পর থেকে রাতুলের পাঞ্জাবির প্রতি টান জন্মেছে। বিয়ের আগে পাঞ্জাবি বিশেষ পরতেন না। পাঞ্জাবিতে তাঁকে কেমন দেখাবে, তা নিয়ে একটা সংশয় ছিল মনে। তবে রূপাঞ্জনা প্রশংসা করার পর মন থেকে সব দ্বিধা বার করে দিয়েছেন। রাতুলের আলমারিতে এখন পাঞ্জাবির সংখ্যা বেশি। দশমীর সাজেও তাই স্ত্রীর সাজের সঙ্গে মিলিয়ে পরে নিয়েছেন পাঞ্জাবি। হলুদ জমির উপর লাল সুতোর কাজ করা পাঞ্জাবি আর ধুতিতে সেজে কি বিয়ের দিনের কথা নতুন করে মনে পড়ে গেল রাতুলের?

০৬ ১৮

রূপাঞ্জনা শুধু রাতুলকে নয়, রিয়ানকেও পাঞ্জাবি পরাতে চান। পুজোর সময় অন্তত এক দিন সাবেকি সাজে ছেলেকে দেখতে চান তিনি। তাই সুতোর কাজ করা লাল-সাদা পাঞ্জাবি আর মেরুন রঙের ধোতি প্যান্টে রিয়ানের লুকে ফিদা তাঁর মা। কিন্তু রিয়ান বোধহয় ততটাও খুশি নয়। মুখ জুড়ে তার বিরক্তির খেলা। তবে রূপাঞ্জনা ছেলের মেজাজ ঠিক করতে কোনও ত্রুটি রাখেননি।

০৭ ১৮

রিয়ানের সঙ্গে তাঁর ‘চ্যাম্পসের’ সম্পর্কটা একেবারেই বন্ধুর মতো। রিয়ান রাতুলকে ওই নামেই ডাকে। দু’জনের খুনসুটি যেমন চলে, তেমনই চলে আবদার। বাড়িতে রিয়ানের খেলার সঙ্গী রাতুল। পুজোর আবহেও তার ব্যতিক্রম নেই। পাঞ্জাবি-ধুতিতে সেজে তাই দু’জনে বসে গিয়েছে পাঞ্জা লড়াই করতে।

০৮ ১৮

প্রেম ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ। তাই রাতুল আর রূপাঞ্জনা ফিরে গিয়েছেন তাঁদের প্রেমের কাছে। দু’জনেই চা খেতে ভালবাসেন। মাঝেমাঝেই ঢুঁ দেন কফিশপে। তবে পুজোর সময় ভিড় এড়িয়ে একান্তে সময় কাটাতে মাটির ভাঁড়ের গরম চায়ে চুমুক দিলেন দু’জনে। সম্পর্কও খানিক উষ্ণতা পেল।

০৯ ১৮

দশমীর সাজে লাল বেছেছেন রূপাঞ্জনা। তাই অষ্টমীতে একেবারে ভিন্নধারার লুকে তৈরি হয়েছেন তিনি। অষ্টমী মানেই পুজোর রং ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে। সে কারণে পোশাকে বিশেষ রঙের খেলা চাননি। অষ্টমীর সাজের জন্য বেছে নিয়েছেন ঘিয়ে রঙের সিল্ক টিস্যু। সঙ্গে জরির কাজ করা চকোলেট রঙা ব্লাউজ়।

১০ ১৮

এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায়! রূপাঞ্জনার সঙ্গে সাজগোজে সমান তালে পাল্লা দিচ্ছেন রাতুলও। রূপাঞ্জনার জন্য তাঁর মন জুড়ে অগাধ প্রেম। কিন্তু পুজোর সাজের ক্ষেত্রে রূপাঞ্জনাকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে রাজি নন রাতুল। অষ্টমীর সাজেও রাতুলের পরনে তাই পাঞ্জাবি। রাতুলের মেরুন রঙা পাঞ্জাবির বুকের কাছে সিল্কের সুতোর মিহি কাজ। পাঞ্জাবির হাতার শেষ প্রান্তেও একই নকশা। বোঝা যাচ্ছে রাতুলের পাঞ্জাবি প্রেম ক্রমশ গভীর হচ্ছে।

১১ ১৮

শাড়ি-পাঞ্জাবি, প্রেম, সাজগোজ— এগুলি ছাড়া পুজো সম্পূর্ণ নয়। রাতুল এবং রূপাঞ্জনাও সেটা বিশ্বাস করেন। তাই বিয়ের পরে প্রথম পুজোয় শুধু প্রেম নয়, সাজগোজেও চমক রাখার চেষ্টা করেছেন দু’জনে। এই যেমন রূপাঞ্জনার শাড়ি পরার ধরন কিন্তু বেশ চমকপ্রদ। সহজ অথচ সহজ নয়। একটু অন্য রকম। শাড়িতে কুঁচি আছে। কিন্তু কোমর ছাপানো আঁচল নেই।

১২ ১৮

অষ্টমী মানেই অনেকের কাছে সাদা-লাল। তবে রূপাঞ্জনা সেই চিরাচরিত সাজে গা ভাসাতে চাননি। সাজ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। শাড়ির সঙ্গে খোঁপা কিংবা সাবেক কোনও ধরনের বদলে চুলের সাজে রেখেছেন আধুনিকতার ছোঁয়া। তবে শাড়ির সঙ্গে পনিটেল তাঁকে বেশ মানিয়েছে। কপালের ছোট্ট লাল টিপ আর পাথরের ঘন কাজের গয়নায়, অষ্টমীর সন্ধ্যার সাজে অনন্যা হয়ে উঠেছেন রূপাঞ্জনা।

১৩ ১৮

রূপাঞ্জনাকে শাড়িতে যে অসামান্য লাগে, সেটা স্বীকার করেন রাতুল। অষ্টমীর এমন ধামাকাদার সাজে তাই রূপাঞ্জনার থেকে চোখ ফেরাতে পারছেন না তিনি। বছরভর ক্যামেরার লেন্সবন্দি হন রূপাঞ্জনা। পুজোর সাজে রাতুলের চোখে বন্দি হলেন তিনি।

১৪ ১৮

রূপাঞ্জনার সাজে রাতুলের মন হারাল বটে, তবে সপ্তমীতে স্ত্রীর শাড়ির কুঁচি ধরে দিতে ভুললেন না তিনি। সপ্তমীতে রূপাঞ্জনা ‘ব্ল্যাক লেডি’। লিনেন সুতোর কাজ করা কালো অরগ্যাঞ্জায় নিজেকে সাজালেন তিনি। আর রাতুল তো ঠিক করেই নিয়েছেন, পুজোয় পাঞ্জাবি ছাড়া কিছু পরবেন না। রঙিন সুতোর ঠাসা কাজ করা পাঞ্জাবিতে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন রাতুল।

১৫ ১৮

সারা বছর চড়া মেকআপ করতে হয়। পুজোর সময়ে তাই হালকা, ছিমছাম মেকআপেই নিজেকে সাজিয়ে তুলতে চান রূপাঞ্জনা। কালো অরগ্যাঞ্জার সঙ্গে ছোট্ট টিপ, হালকা লিপস্টিক, আর গালে ব্লাশের গোলাপি ছোঁয়া— পুজোর শুরুতে হালকা সাজই পছন্দ রূপাঞ্জনার।

১৬ ১৮

কাঁধের উপর বিনা বাধায় পড়ে থাকা চুলের গোছা, সিঁথিতে সিঁদুরের রেখা, দু’হাতে বিয়ের চিহ্ন শাঁখা-পলার মাঝে উঁকি দিচ্ছে নোয়া, কানে ঝোলা দুল— ব্যস! সপ্তমীর সাজে রূপাঞ্জনার অলঙ্কারের সম্ভার এটুকুই। তবে শাড়িটি বেশ জমকালো। কালো শাড়িতে জরির সরু পাড় আর জরির অসংখ্য মোটিফ সাজগোজে একটা অন্য মাত্রা এনে দিয়েছে। সঙ্গে কালো রঙের ব্লাউজ়টিও বেশ শৌখিন।

১৭ ১৮

সপ্তমীতে রূপাঞ্জনা আয়নাবিলাসী। উৎসবের সাজে তিনি যেমন মায়াবী, তেমনি দৃঢ়ও। বিয়ের পরের প্রথম পুজো নিয়ে দু’জনেরই ঠাসা পরিকল্পনা ছিল। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সে সব খানিক তুলে রাখতে হয়েছে। তবু বাড়ির কর্ত্রী তিনি। স্বামী এবং সন্তানকে আগলে রাখেন তিনি। তাঁদের সুরক্ষিত রাখতে মাঝেমাঝে কঠিনও হতে হয়।

১৮ ১৮

রূপাঞ্জনা এবং রাতুল দু’জনের কাছে উৎসবের সংজ্ঞা শুধু হইচই করা নয়। বরং একে-অপরের হাত শক্ত করে ধরে থাকাটা তাঁদের কাছে উদ্‌যাপন। দু’জনে তাই দু’জনের চোখে খুঁজে নিচ্ছেন আশ্রয়, প্রেম আর ভালবাসা।

ভাবনা ও পরিকল্পনা: সুচন্দ্রা ঘটক। প্রয়োগ: রিচা রায় ও ঐন্দ্রিলা বসু সিংহ। প্রতিবেদন: রিচা রায়। চিত্রগ্রাহক: অর্চিষ্মান সাহা। পোশাক এবং সাজ : হাউস অফ তনয়, সেরেনিটি বাই সৈকত। রূপটান শিল্পী: সৌরভ দাস। স্থান: দ‍্য ক‍্যাফে অফবিট। অলঙ্কার সৌজন‍্যে: অভামা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement