লক্ষ্মীপুজোর দিনে সুন্দর করে না সাজলে এত আনন্দ-আয়োজন যেন ম্লান হয়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত
চলছে উৎসবের মরসুম। দুর্গাপুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই লক্ষী দেবীর আরাধনায় মেতে উঠেছে বাঙালি। কমবেশি সকলের বাড়িতেই লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করা হয়। রাতে পুজো হলেও সকাল থেকেই অনেকে পুজোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। নাড়ু তৈরি, নানা রকম ভোগ রান্না, আলপনা দেওয়া, সিংহাসন গোছানো, ঠাকুর সাজানো— কাজ কিন্তু কম নয়। শুধু তো ভোগ রাঁধলে চলবে না। এ দিন বাড়িতে অনেক অতিথিকেও নিমন্ত্রণ করা হয়। তাঁদের আপ্যায়নের ব্যবস্থাও করতে হবে। সব মিলিয়ে সকাল সকাল তোড়জোড় শুরু করা ছাড়া উপায় নেই। এত ব্যস্ততার মধ্যে নিজেকে সাজাতে ভুললে কিন্তু চলবে না। লক্ষ্মীপুজো হোক বা দীপাবলি— উৎসব মানেই জমিয়ে সাজগোজ। লক্ষ্মীপুজোর দিনে সুন্দর করে না সাজলে এত আনন্দ-আয়োজন যেন ম্লান হয়ে যায়।
লক্ষ্মীপুজোয় অনেকেরই প্রথম পছন্দ শাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
লক্ষ্মীপুজোয় অনেকেরই প্রথম পছন্দ শাড়ি। সারা বছর শাড়ি থেকে যাঁরা শতহস্ত দূরে থাকেন, লক্ষ্মীপুজোয় তাঁদেরও পরনে ওঠে নকশা পাড়ের শাড়ি। পুজো মানেই লাল-সাদা শাড়ি পরতে হবে, তার কোনও মানে নেই। লাল, বাসন্তী বা সবুজ একরঙা কোনও শাড়ি পরতে পারেন। ভারী শাড়ি হলে সঙ্গে পরতে পারেন সোনার গয়না। তা না চাইলে শাড়ির ধরন এবং রং অনুযায়ী বেছে নিন গয়না।
লক্ষ্মীপুজোর দিন আলমারিতে সযত্নে তুলে রাখা বেনারসি শাড়িটিও কিন্তু বার করতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত
লক্ষ্মীপুজোর দিন আলমারিতে সযত্নে তুলে রাখা বেনারসি শাড়িটিও কিন্তু বার করতে পারেন। ভারী বলে অনেকেই সচরাচর বেনারসির দিকে হাত বাড়ান না। তবে একটা দিন পরাই যায়। শুধু বেনারসি পরলেই তো হল না, তার সঙ্গে আনুষঙ্গিক সাজগোজও জমকালো হওয়া চাই। এই ধরনের শাড়ির সঙ্গে সোনার গয়না ভাল মানায়। সঙ্গে কেশসজ্জাও অতি গুরুত্বপূর্ণ। হাতখোঁপা বাঁধতে পারেন। তাতে জড়ানো থাক বেল ফুলের মালা। অতিথি তো বটেই, এমন সাজে চমকে যাবে প্রিয়জনেরাও।
পুজোয় লেহরিয়া নকশা করা শাড়ি বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। আধুনিকতা এবং ঐতিহ্যের যুগলবন্দি হয়ে উঠবে এই শাড়ি। পুজো মানেই সাবেকি সাজ— এই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে এমন একটি শাড়ি পরতেই পারেন। এই ধরনের হালকা শাড়ির সঙ্গে হাতাকাটা ব্লাউজ পরে নিতে পারেন। চুল খুলে রাখুন। কানে একটা বড় দুল পরুন। কপালে ছোট্ট টিপ আর হালকা মেক আপ। লক্ষ্মীপুজোর আয়োজনে মধ্যমণি আপনিই।
শরৎকাল হলেও গরমের ভাবটা রয়েই গিয়েছে। পোশাক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সে বিষয়টিও মাথায় রাখা জরুরি। বাড়িতে পুজো মানেই অনেক দায়িত্ব। পুজোর কাজ, অতিথির দেখাশোনা সবটাই সামলাতে হয়। তা ছাড়া অনেকের বাড়িতেই বেশ রাত করে পুজো হয়। অনেকটা সময় ভারী শাড়ি পরে থাকতে কষ্ট হয়। সে ক্ষেত্রে হ্যান্ডলুম বা সুতির কোনও শাড়িও পরতে পারেন। শাড়ির সঙ্গে পরতে পারেন জাঙ্ক গয়নাও। শাড়ি পরার কায়দায় যদি নতুনত্ব আনতে পারেন, তা হলে সকলের চেয়ে আলাদা দেখাতে বাধ্য।
একান্তই শাড়ি পরতে না চাইলে আনারকলি সালোয়ার-কামিজ পরুন। ওড়নাটা এক কাঁধে ফেলে রাখুন। কানে বড় ঝোলা দুল। হাতে রকমারি চুড়ি। আপনার লক্ষ্মীপুজোর সাজ তৈরি। লক্ষ্মীপুজোতে যেহেতু বাইরে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার বিষয়টি নেই, সে ক্ষেত্রে খুব বেশি মেক আপ না করলেও চলে। বাড়ির পুজোর অনেক দায়িত্ব থাকে। সব কিছু সামাল দিতে গিয়ে মেক আপ গলে যাওয়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই সুন্দর অথচ ছিমছাম সাজুন।