শীতে ত্বকের জেল্লা বজায় রাখতে বডি অয়েল মাখবেন, কিন্তু কোন তেল আপনার ত্বকের জন্য ভাল বুঝবেন কী করে? ছবি: ফ্রিপিক।
শীতের মরসুমে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কমে যাওয়ায় ত্বকে নানা সমস্যা হয়। মুখে র্যাশ বেরোনো থেকে শুরু করে গা, হাত-পা খসখসে হয়ে যাওয়া, খড়ি ফোটা খুব সাধারণ ব্যাপার। শুষ্ক ত্বক যাঁদের, তাঁদের ক্ষেত্রে পুরু করে ক্রিম মাখলেও শুষ্ক ভাব যায় না। এই সময় কাজে আসতে পারে বডি অয়েল।
কী এই বডি অয়েল?
বিভিন্ন ধরনের উপকরণে তৈরি তেল, যা বিশেষ ভাবে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্যই তৈরি। লোশন বা ক্রিমও ত্বকের যত্ন নেয়। তবে তেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে আর্দ্রতা জোগায়। এতে থাকে ফ্যাটি অ্যাসিড-সহ নানাবিধ উপকরণ, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
উপকারিতা: চুলের জন্য যেমন তেল মালিশ করা ভাল, মুখের জন্য ফেশিয়াল মাসাজ তেমনই। সারা শরীরে সঠিক পদ্ধতিতে তেল মাসাজে রক্ত সঞ্চালন ভাল হয়। তেল মাখলেই তা রোমকূপের মধ্যে প্রবেশ করে ত্বকে পুষ্টি জোগায়। আর ত্বকের বাইরে এক প্রকার বর্ম তৈরি করে। ফলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে, বাইরের আবহাওয়াও তেলের এই বর্ম ভেদ করে ত্বকে প্রভাব ফেলতে পারে না। ফলে টানও পড়ে না। বলিরেখাও পড়ে না। পাশাপাশি, ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল এবং টান টান।
নারকেল তেল থেকে আর্গন অয়েল, অলিভ অয়েল, জোজোবা অয়েল-সহ রকমারি তেল রয়েছে। তার মধ্যে থেকে বেছে নেবেন কোনটি? তবে তার আগে জানা প্রয়োজন, কোন তেলের কী কার্যকারিতা?
আর্গন অয়েল: ভিটামিন ই এবং ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ আর্গন অয়েল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে, ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতেও তা সাহায্য করে।
নারকেল তেল: অ্যন্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ নারকেল তেল বছরভর ব্যবহার করা চলে। শুষ্ক ত্বকে জেল্লা ফেরাতে সাহায্য করে তেলটি। এতে রয়েছে অ্যন্টি ব্যাক্টিরিয়াল উপাদান, যা ছোটখাটো সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে।
জোজাবা অয়েল: জবা ফুল থেকে তৈরি এই তেল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর। এতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টি ইলফ্লেমেটারি উপাদান। এটি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি সংক্রমণ এবং প্রদাহ কমাতেও সহায়ক।
আমন্ড অয়েল: ভিটামিন এ এবং ই-তে ভরপুর তেলটি ত্বক কোমল, আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে।
এ ছাড়াও ল্যাভেন্ডার অয়েল, অলিভ অয়েল-সহ রকমারি তেল ব্যবহার করা যায় শীতে সারা শরীরে মালিশের জন্য। চাইলে কেউ অলিভ অয়েল, জোজোবা অয়েল বা নারকেল তেলের সঙ্গে ল্যাভেন্ডার-সহ একাধিক এসেনশিয়াল অয়েলও মিশিয়ে নিতে পারেন।
কোন ত্বকের জন্য কোনটি ভাল?
শুষ্ক ত্বক: ত্বক যদি অত্যন্ত শুষ্ক হয়, নখ দিয়ে হাতে বা পায়ে আঁচড় কাটলে সাদা দাগ হয়ে যায় বা খড়ি ফোটে, তা হলে ব্যবহার করুন অ্যাভোকাডো, নারকেল, অলিভ কিংবা আমন্ড অয়েল। এই সমস্ত তেলে থাকা ভিটামিন, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টের পাশাপাশি ফ্যাটি অ্যাসিড আর্দ্রতা ধরে রাখতে বর্মের মতো কাজ করবে।