স্ট্রেচ মার্কসের জন্য অনেক মহিলাই হীনম্মন্যতায় ভোগেন। ছবি: সংগৃহীত।
এক বছর হল মা হয়েছেন অনন্যা। এখন সাধের জামাগুলি পরার আগে ১০ বার চিন্তা করতে হয়! ক্রপ টপ পরার উপায় নেই তাঁর। কারণ, পেটে স্ট্রেচ মার্কস যে ভর্তি! কয়েক মাসে বেশ খানিকটা ওজন বেড়েছে অনন্যার। ঊরুতেও একাধিক স্ট্রেচ মার্কসের কারণে এখন আর শর্টস পরতে ভাল লাগে না তাঁর!
ঠিক উল্টোটা হয়েছে রীতির সঙ্গে। জিমে গিয়ে এক ঝটকায় অনেকটা ওজন কমিয়ে ফেলেছেন ঠিকই, কিন্তু হাতকাটা পোশাক পরতে পারছেন না তিনি। হাতের স্ট্রেচ মার্কস অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ফ্যাশনের পথে।
স্ট্রেচ মার্কসের জন্য অনেক মহিলাই হীনম্মন্যতায় ভোগেন। বিশেষ করে মা হওয়ার পরে এই সমস্যা বেশ চিন্তায় ফেলে। যদিও এই ব্যাপারটি সে ভাবে শরীরের ক্ষতি করে না। কিন্তু অনেকেই মনে করেন এই কারণ শ্রী নষ্ট করে। নিজের পছন্দ মতো পোশাক পরতে না পারার জন্য অনেকেই মানসিক অবসাদে ভুগতে পারেন। শুধু মেয়েরা নয়, বিভিন্ন কারণে ছেলেরাও এই সমস্যার শিকার।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গর্ভে সন্তানের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পেট, ঊরু এবং স্তনের ত্বক। যে জায়গায় পেশির বৃদ্ধি বা সঙ্কোচন হয়, সেখানে ত্বকের উপরে পড়তে থাকে লম্বাটে দাগ। যাকে বলে স্ট্রেচ মার্কস। ছেলে বা মেয়ে বয়ঃসন্ধির সময়ে দ্রুত লম্বা হয়, কখনও ওজন কমে বা বাড়ে। এর ফলে ঊরু, হাত, কোমরে স্ট্রেচ মার্কস দেখা যায়। ওজন কমলে যেমন স্ট্রেচ মার্কস হয়, তেমনই দ্রুত ওজন বাড়লেও হয়।
স্ট্রেচ মার্কস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের ক্রিম, ওষুধ। কিন্তু ক্রিম হোক বা খাওয়ার ওষুধ, তাতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকবেই। এ সব এড়াতে চাইলে সাহায্য নিতে পারেন কিছু ঘরোয়া প্রতিকারের।
আলুর রস দাগ হালকা করতে সাহায্য করে। ছবি: সংগৃহীত।
কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই স্ট্রেচ মার্কস থেকে মুক্তি পাবেন কী ভাবে?
১) লেবুর রসকে বলে ন্যাচরাল ব্লিচিং। যে কোনও দাগ দ্রুত হালকা করতে সাহায্য করে। অর্ধেক পাতিলেবুর রস নিংড়ে নিয়ে নিংড়ানো লেবুটি রসে ডুবিয়ে স্ট্রেচ মার্কসের জায়গায় ঘষে নিন। তবে এক সপ্তাহ করেই ফলের আশা করলে হবে না।
২) এই দাগ তুলতে সাহায্য করে হাই প্রোটিন ও অ্যামাইনো অ্যাসিড। দু’টিতেই আছে ডিমের সাদা অংশে। ডিমের সাদা অংশ তুলো দিয়ে লাগিয়ে নিন দাগের উপরে। শুকিয়ে গেলে জলে ধুয়ে ফেলুন।
৩) আলু কুরিয়ে তার রস দাগ হালকা করতে সাহায্য করে।
৪) অলিভ অয়েলে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা ত্বকের পক্ষে ভাল। জলপাই তেল দিয়ে রোজ স্নানের আগে দাগের উপরে মালিশ করলে অনেকটাই হালকা হয়ে যাবে। আরও ভাল হয়, জলপাই তেলের সঙ্গে চিনি ও লেবুর রস মিশিয়ে মলিশ করা যায়।
৫) ১৫-৩০ মিনিট ক্যাস্টর অয়েলও লাগিয়ে রাখার পরে তার উপরে একটা সুতির কাপড় জড়িয়ে হটপ্যাড দিয়ে সেঁক দিলে দ্রুত দাগ কমে।
৬) চায়ের লিকারে থাকে ভিটামিন ও মিনারেল। বিশেষ করে ভিটামিন বি ১২, যা কালো দাগ তুলতে সাহায্য করে। এক কাপ লিকার ঠান্ডা করে তাতে নুন মিশিয়ে দাগের জায়গায় লাগাতে পারেন।
৭) শিয়া বাটার এবং কফি স্ক্রাব ব্যবহার করলেও দাগ দূর হয়।
ওষুধের চেয়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে দাগ তুলতে সময় বেশি লাগবে। কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ভরসা করা বুদ্ধিমানের কাজ।