Skincare Tips

‘এক্সফোলিয়েশন’ কী? মুখের হারানো জেল্লা ফিরে পেতে স্নো-সাবান কি যথেষ্ট নয়?

সাপ যেমন খোলস ছাড়়ে, ঠিক তেমনই আমাদের ত্বকও সময়ে সময়ে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। তবে তা চোখে দেখা যায় না। অনবরত এই প্রক্রিয়া শরীরে চলতে থাকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:১৭
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

ক্রিম বা জেলের মতো একটি প্রসাধনী। তার মধ্যে অসংখ্য দানা-যুক্ত সব জিনিস। ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়ার পর ওই জিনিসটি মুখে ঘষলে নাকি হারানো জেল্লা ফিরে আসে। বিষয়টা অনেকটা শিরীষ কাগজের মতো। মরচে পড়া ধাতব কোনও জিনিস বা কাঠের আসবাব রং করার আগে যেমন শিরীষ কাগজ দিয়ে ঘষে নেওয়া হয়, তেমনই ত্বকের উপরিভাগে জমে থাকা ধুলোময়লার স্তর সরিয়ে ফেলতেও সাহায্য করে এক্সফোলিয়েটর।

Advertisement

এক্সফোলিয়েশন আসলে কী?

সাপ যেমন খোলস ছাড়়ে, ঠিক তেমনই আমাদের ত্বকও সময়ে সময়ে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। তবে তা চোখে দেখা যায় না। চিকিৎসকেরা বলছেন, ত্বকের উপর জমে থাকা মৃত কোষ সরিয়ে ফেলার যে পদ্ধতি, তাকেই ‘এক্সফোলিয়েশন’ বলা হয়। চর্মরোগ চিকিৎসক সুরজিৎ গরাই বলেন, “আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই পুরনো, মৃত কোষ সরিয়ে ফেলতে পারে। মরা চামড়া সরিয়ে নতুন কোষ আসতে মোটামুটি এক থেকে তিন মাস সময় লাগে।” তা সত্ত্বেও নিয়মিত বাইরে থেকে প্রাকৃতিক বা রাসায়নিক উপাদান দিয়ে এক্সফোলিয়েট করার প্রয়োজন হয়। চিকিৎসকের মতে, “বয়স, জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাবার কিংবা দূষণের কারণে স্বাভাবিক এই প্রক্রিয়ার গতি অনেক সময় শ্লথ হয়ে পড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই ত্বক জেল্লা হারায়। পোরসের মুখ বন্ধ হয়ে গেলে ব্রণের উপদ্রব বেড়ে যায়।” এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসকেরাও এক্সফোলিয়েট করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

Advertisement

এক্সফোলিয়েট করলে শুধুই কি জেল্লা বৃদ্ধি পাবে?

ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, ত্বকের উপর সেবাম, মৃত কোষ জমতে থাকলে তা প্রাণহীন, নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। ত্বকের মসৃণতা হারিয়ে যায়। ত্বকের রন্ধ্রে সেবাম জমে ব্রণের বাড়বাড়ন্ত হতে পারে। এই সব সমস্যার ‘ওয়ান স্টপ সলিউশন’ হতে পারে এক্সফোলিয়েটর।

কত দিন অন্তর এক্সফোলিয়েট করা উচিত?

কে কত দিন অন্তর এক্সফোলিয়েট করবেন, তা নির্ভর করে ত্বকের ধরনের উপর। তবে ফেসওয়াশ, টোনার বা ময়েশ্চারাইজ়ারের মতো ত্বকে এক্সফোলিয়েটর যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করা যায় না। চিকিৎসক গরাইয়ের মতে, “ত্বক তৈলাক্ত হলে সপ্তাহে দু’-তিন দিন এক্সফোলিয়েট করাই যথেষ্ট। কিন্তু যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক বা স্পর্শকাতর, তাঁদের মাসে দু’বার এক্সফোলিয়েট করতে বলা হয়।” এ ছাড়া ত্বকে যদি আগে থেকে কোনও সমস্যা থেকে থাকে, সে ক্ষেত্রেও এক্সফোলিয়েশন করা যাবে না।

অতিরিক্ত এক্সফোলিয়েট করলে কি ত্বকে কোনও রকম সমস্যা হতে পারে?

এক্সফোলিয়েশন দু’রকম ভাবে করা যেতে পারে। প্রাকৃতিক এবং রাসায়নিক। প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর হোক বা রাসায়নিক এক্সফোলিয়েটর, কোনওটিই ঘন ঘন ব্যবহার করা যায় না। তাতে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক বা স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে। ত্বকে প্রদাহজনিত নানা রকম সমস্যাও দেখা দিতে পারে। চিকিৎসক গরাই বলেন, “এক্সফোলিয়েট করে ত্বকের উপরের পরত সরিয়ে ফেলার পর ত্বক কিন্তু আরও স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে। তার পর সঠিক ভাবে ত্বকের যত্ন না নিলে সমস্যা বেড়ে যায়। ত্বকের আর্দ্রতা, পিএইচের সমতা ধরে রাখতে যথেষ্ট পরিমাণে ময়েশ্চারাইজ়ারও ব্যবহার করতে হয়।”

‘এক্সফোলিয়েট’ না করলে কী হবে?

কিচ্ছু হবে না। চিকিৎসকেরা বলছেন, যদি কেউ এক্সফোলিয়েট করতে না চান, না-ই করাতে পারেন। তাতে সমস্যার কিছু নেই। এক্সফোলিয়েট না করলে সাময়িক ভাবে ত্বকের জেল্লা চাপা পড়তে পারে। এ ছাড়া আলাদা করে আর কিছু হবে না। তবে কয়েক সপ্তাহ পর, শরীরের স্বাভাবিক নিজস্ব এক্সফোলিয়েশন পদ্ধতিতে তা নিজে থেকেই সরে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement