ছবি: সংগৃহীত।
লেমনগ্রাসের সঙ্গে লেবুর কোনও সম্পর্ক নেই। শুধু গন্ধটুকু ছাড়া। এটি আসলে একধরনের ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। লেমনগ্রাস পাতার নির্যাস থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে এই অয়েল সংগ্রহ করা হয়। অ্যারোমাথেরাপি বা সুগন্ধ চিকিৎসায় এই অয়েল ব্যবহারের চল ছিল বহু দিন। মহাদেশীয় রান্নাতেও এই পাতা ব্যবহার করা হয়। চাইলে এখন ভাল মানের চায়ের মধ্যেও লেমনগ্রাস ঘ্রাণ মেলে। অনেকে আবার স্নানের জলেও লেমনগ্রাসের শুকনো পাতা কিংবা কয়েক ফোঁটা লেমনগ্রাস অয়েল মিশিয়ে নেন। সেই জলে স্নান করলে সারা দিনের ক্লান্তি, ধকল এক নিমেষে দূর হয়ে যায়। ঝিমিয়ে পড়া মনটা আবার তরতাজা হয়ে ওঠে।
তবে রূপচর্চা বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, চুলের জন্যও এই অয়েল একই ভাবে উপকারী। লেমনগ্রাস অয়েলের গুণে মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। নতুন চুল গজায়, মাথার ত্বকের পিএইচের সমতাও বজায় থাকে। বর্ষাকালে মাথায় খুশকির উপদ্রব হয়। ঘরোয়া উপায়ে তা দূর করার নানা রকম টোটকা রয়েছে। তার মধ্যে একটি হল লেমনগ্রাস অয়েল। অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদানে সমৃদ্ধ লেমনগ্রাস অয়েল। কিন্তু এই তেল তো সরাসরি মাথায় মাখা যায় না। কী ভাবে মাখলে উপকার মিলবে জেনে নিন।
তেলে লেমনগ্রাস অয়েল:
নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের মধ্যে কয়েক ফোঁটা লেমনগ্রাস অয়েল মিশিয়ে নিন। যদি হালকা গরম তেল মাথায় মালিশ করতে হয়, সে ক্ষেত্রে এসেনশিয়াল অয়েল মেশানোর আগে তেল গরম করে নেবেন। পরে তেল গরম করলে এসেনশিয়াল অয়েলের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এ বার ভাল করে চুল আচঁড়ে মাথার ত্বকে ওই তেল মেখে নিন। আধঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। চাইলে সারা রাতও রেখে দিতে পারেন।
শ্যাম্পুতে লেমনগ্রাস অয়েল:
ছোট একটি পাত্রে প্রয়োজনমতো শ্যাম্পু এবং কয়েক ফোঁটা লেমনগ্রাস অয়েল ভাল করে মিশিয়ে নিন। এ বার ভেজা মাথার ত্বক বা চুলে ভাল করে মেখে শ্যাম্পু করে নিতে পারেন। একই ভাবে কন্ডিশনারের সঙ্গেও লেমনগ্রাস মিশিয়ে নেওয়া যায়।
শ্যাম্পু করার শেষে:
গরম জলে কয়েক ফোঁটা লেমনগ্রাস অয়েল মিশিয়ে নিন। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শ্যাম্পু করার পর ওই জল দিয়ে ভাল করে মাথা ধুয়ে ফেলুন। মিনিট দুয়েক অপেক্ষা করুন। তার পর আবার সাধারণ জল দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
কী কী মনে রাখতে হবে?
কোনও অবস্থাতেই এই উপাদানটি সরাসরি ত্বকে মাখা যায় না। জলে, তেলে বা শ্যাম্পুতে মিশিয়ে ব্যবহার করলেই তা ভাল ফল দেয়।
লেমনগ্রাস অয়েলের মধ্যে ওই পাতার নির্যাস সক্রিয় অবস্থায় থাকে, তাই কারও কারও ত্বকে অস্বস্তি হতে পারে। মাথার ত্বকে ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ‘প্যাচ টেস্ট’ করে নেওয়া জরুরি।
কতটুকু অয়েল ব্যবহার করবেন তা নিয়েও সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এক কাপ জলে এক ফোঁটা লেমনগ্রাস নিলেই কাজ চলে যায়। জলের মাপ বুঝে এসেনশিয়াল অয়েল মেশাবেন।