বয়স অনুযায়ী বেছে নিন ফেশিয়ালের ধরন। ছবি: শাটারস্টক।
সদ্য কেটেছে দুর্গাপুজোর আমেজ। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে এ বছর পুজোয় আড়ম্বর অন্য বছরগুলির তুলনায় খানিকটা হলেও কম ছিল। পুজোর আগে সালোঁগুলিতে চোখে পড়েনি উপচে পড়া ভিড়। তবে পুজোয় সাজগোজের সঙ্গে আপস করেননি অনেকেই। সকাল-বিকেল ভারী মেকআপ করে রোদ-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই তরুণী থেকে শুরু করে মহিলারা বেরিয়েছেন প্যান্ডেল দর্শনে। রূপচর্চাবিদ শর্মিলা সিংহ ফ্লোরা বলেন, ‘‘এ বছর পুজোর আগে অনেকেই তেমন করে রূপচর্চার দিকে নজর দেননি। মিটিং-মিছিলে বেরিয়েছেন, বাড়ি ফিরে ত্বকের সে ভাবে যত্ন না নিয়েই ভারী মেকআপ করে আবার ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পরেছেন। তার উপর মরসুম বদলের এই সময় ত্বকের চাই বাড়তি যত্নআত্তি। সেই দিকে নজর দিচ্ছেন না অনেকে। ফলে ত্বকের জেল্লা হারিয়ে যাচ্ছে, ত্বকের উপর কালচে ছোপ পড়ছে, ত্বক ঝুলে যাচ্ছে কারও কারও। এখনই সতর্ক না হলে কিন্তু পরে আফসোস করা ছাড়া উপায় থাকবে না।’’
এই পরিস্থিতিতে ত্বকের যত্ন নিতে হলে ভরসা রাখতে পারেন ফেশিয়ালের উপর। ত্বকের জেল্লাভাব ফিরিয়ে আনতে ফেশিয়ালের জবাব নেই। তবে সব বয়সের জন্য আবার সব ধরনের ফেশিয়াল উপযুক্ত নয়। পুজোর পর ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরিয়ে আনতে কোন বয়সিরা কোন ধরনের ফেশিয়াল করবেন, শর্মিলা দিলেন তার হদিস।
১৮ থেকে ২৫ বছরে: অল্পবয়সিরা বিভিন্ন রকম ফলের রস দিয়ে অরগ্যানিক ফেশিয়াল করাতে পারেন। ইদানীং এলইডি ফেশিয়ালের ট্রেন্ড চলছে। রঙিন আলো ব্যবহার করে এই ফেশিয়াল করা হয়। অরগ্যানিক ফেশিয়ালের সঙ্গে এলইডি ব্যবহার করলেও ভাল হয়।
২৬ থেকে ৪০ বছর বয়সে: মাঝবয়সিরা ত্বকের জেল্লা ফেরাতে হাইড্রা ফেশিয়ালের উপর ভরসা রাখতে পারেন। সাধারণ ফেশিয়ালের হাতের তালুতে চাপ দিয়ে মুখে ধীরে ধীরে মালিশ করা হয়। কিন্তু হাইড্রা ফেশিয়ালে সবটাই হয় যন্ত্রের সাহায্যে। পদ্ধতি অনেকটা ‘ভ্যাকিউম ক্লিনার’-এর মতো। ত্বকের গভীর থেকে ধুলো-ময়লা টেনে বার করে আনা। এ ক্ষেত্রেও ক্লেনজ়িং ও এক্সফোলিয়েশন করা হয় আগে। তার পর ফেশিয়ালটি হয় কয়েকটি ধাপে। সময়ও লাগে বেশি। এ ক্ষেত্রে হাইড্রা ফেশিয়ালের সঙ্গেও এলইডি ব্যবহার করা যেতে পারে আরও ভাল ফলের জন্য।
ত্বকের জেল্লাভাব ফিরিয়ে আনতে ফেশিয়ালের জবাব নেই। ছবি: সংগৃহীত।
৪০ বছরের উপরে: এই সময় চামড়া ঝুলে যাওয়ার মতো সমস্যা বেশি হয়। তাই এ ক্ষেত্রে যাঁদের এই সমস্যা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে, তাঁরা এজ লক ফেশিয়াল কিংবা স্কিন লিফটিং ফেশিয়ালের উপর ভরসা রাখতে পারেন। অনেকেই পয়সা খরচ করে চামড়া টান টান করতে বোটক্স করেন। তবে বোটক্সের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে। তাই ঝুঁকি এড়াতে এজ লক ফেশিয়াল কিংবা স্কিন লিফটিং ফেশিয়ালের উপর নির্ভর করতে পারেন।
ফেশিয়াল কত দিন অন্তর অন্তর করা যায়, সেই নিয়েও কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে। পুজোর পর যাঁদের ত্বকের অবস্থা বেহাল তাঁরা অন্তত ২৫ দিনে এক বার করে বা দু’মাসে তিন বার ফেশিয়াল করাতে পারেন। তার পর ত্বকের জেল্লা আগের মতো ফিরে এলে, মাসে একটা করে ফেশিয়াল করালেই যথেষ্ট।
তবে ফেশিয়াল করালেই হল না। ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে হলে সারা দিন ধরেই ত্বকের যত্ন নিতে হবে। নিয়ম করে ত্বকে ভাল ক্লিনজ়ার, ফেশ ওয়াশ, সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। এক বার নয়, ত্বকে বার বার সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এর পাশাপাশি বেশি করে জল ও ফল খেতে হবে ত্বক ভাল রাখার জন্য। ডায়েটে কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা কমিয়ে প্রোটিন বেশি করে খেতে হবে। সঙ্গে ত্বক ভাল রাখতে নিয়ম করে শরীরচর্চা কিংবা যোগাসন করাও জরুরি।