কেশ প্রতিস্থাপন প্রায় ঝুঁকিহীন একটি পদ্ধতি
বাঙালি লালমোহন বাবুকে যতই ভালোবাসুক, চুলের ক্ষেত্রে এখনও বিদিশার নিশার অন্ধকারেই স্বচ্ছন্দ্য অধিকাংশ মানুষ। এই হীনমন্যতার যুক্তি কতটা তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই, কিন্তু এ কথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় মনের মতো বাহারি চুল পেতে যে ক্রমেই বাড়ছে কেশ প্রতিস্থাপনের প্রবণতা। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, কেশ প্রতিস্থাপন প্রায় ঝুঁকিহীন একটি পদ্ধতি, নেই তেমন কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও। কাজেই ভাল কেশের রহস্য সমাধানে ব্যোমকেশ হওয়ার দরকার নেই।
ক্রমেই জনপ্রিয়তা বাড়ছে কেশ প্রতিস্থাপনের। ছবি: সংগৃহীত
১। আপাত ভাবে মনে না হলেও, কেশ প্রতিস্থাপন কিন্তু আদতে এক প্রকার অস্ত্রোপচার। যেখানে চুলের আধিক্য রয়েছে সেখান থেকে ফলিক্ল ও চুলের গোড়া সংগ্রহ করে গ্রহীতা অঞ্চলে প্রতিস্থাপনের পদ্ধতিই হল হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট। অল্প কয়েক ঘণ্টার এই পদ্ধতিতে শুধু মাথার চুলই নয়, ভ্রু, চোখের পলক এমনকি, যৌনাঙ্গের কেশও প্রতিস্থাপন সম্ভব।
২। এক বার প্রতিস্থাপিত হয়ে গেলে প্রাকৃতিক চুলের সঙ্গে খুব একটা তফাত নেই প্রতিস্থাপিত চুলের, এর বৃদ্ধিও হয় সাধারণ চুলের মতোই । কাজেই অসুবিধা নেই পছন্দ মতো কাটতেও। প্রয়োজন নেই বিশেষ কোনও ধরনের যত্নের। ব্যবহার করা যেতে পারে সাধারণ প্রসাধনী।
৩। কেশ প্রতিস্থাপনের কথা শুনলেই যাঁদের মনে এই প্রশ্নটি আসে যে, এই প্রতিস্থাপিত চুলের আয়ু কত দিন, তাঁদের দুশ্চিন্তা নিরসন করে বিশেষজ্ঞদের আশ্বাস— প্রাকৃতিক চুলের মতই চিরস্থায়ী এই চুল। প্রতিস্থাপনের পর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চুল পড়ার ভয় থেকে মুক্ত থাকতে পারেন গ্রাহক। কিছু ক্ষেত্রে গ্রাফটিং এর সহায়তা নিলেও বর্তমানে চালু হওয়া বায়ো-এনহ্যান্সড সাইমালটেনাস ট্রানস্পলনটেশন বা ‘বেস্ট’ পদ্ধতিটিই সর্বাধুনিক বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
৪। আর পাঁচটি অস্ত্রোপচারের মতই এই পদ্ধতির পরেও সংক্রমণ আটকাতে খেতে হয় অ্যান্টিবায়োটিক। প্রদাহের জন্যেও খেতে হতে পারে ওষুধ। অস্ত্রোপচারের পর সপ্তাহ তিনেক সরাসরি রোদ লাগানো চলবে না। বন্ধ রাখতে হবে কঠোর শরীরচর্চা ও সাঁতার। অন্তত এক মাস ব্যবহার করা যাবে না কোনও ধরনের রসায়নিক প্রসাধনী।
৫। তবে মনে রাখা দরকার কেশ প্রতিস্থাপন জাদু নয়, চুলের বৃদ্ধি ব্যক্তিভেদে আলাদা হতে পারে। ঘনত্ব আলাদা হওয়াও খুবই স্বাভাবিক। তাই প্রতিস্থাপনের আগে ভাল করে চিকিত্সকের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া আবশ্যিক।