ছবি: সংগৃহীত।
নাকের শত্রু ধোঁয়া!
ইএনটি চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বিশ্ব জুড়ে দূষণ বাড়ায় নিত্য নতুন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তার মধ্যে অন্যতম হল নাকের সমস্যা। তাই রাজ্যের ইএনটি চিকিৎসকদের সংগঠনের বার্ষিক সম্মেলনে এ বার আলোচনার বিষয় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে সেই বিষয়টিই। নাকের জন্য ধোঁয়া কতটা ক্ষতিকর, তা-ই আলোচিত হবে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের সেই সম্মেলনে। পাশাপাশি, উন্নত প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার নানা কর্মশালা হবে সেখানে।
এ দিনের আলোচনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) রিপোর্ট তুলে ধরে চিকিৎসকেরা জানান, তামাকজাত দ্রব্য থেকে তৈরি হওয়া ধোঁয়া সব চেয়ে ক্ষতিকর। যাঁরা তামাক সেবন করছেন, তাঁদের তো শারীরিক ক্ষতি হচ্ছেই সঙ্গে ক্ষতি হচ্ছে আশপাশে থাকা মানুষের। হু-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ফি বছর পরোক্ষ ধূমপানের জেরে মোট মৃতের ১০ শতাংশ শিশু।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ধোঁয়া থেকে নাকে নানা রকম অ্যালার্জি হয়। তা দূষণের কারণে হোক, বা রান্নার উনুন থেকে হোক। এমনকী মশা মারার ধূপ পুড়ে উৎপন্ন ধোঁয়াও বিপদ ডেকে আনতে পারে। এ সব ধোঁয়ার কারণে হাঁপানি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাঁরা জানান, সচেতনতা না বাড়লে এই সমস্যার মোকাবিলা করা মুশকিল। সংগঠনের সম্পাদক চিকিৎসক দ্বৈপায়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হু-র রিপোর্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে, বাড়িতেও বিপদ কম নয়। সন্তানকে সুস্থ রাখার জন্য বাবা-মাকে সচেতন হতে হবে। প্রকাশ্যে ধূমপানের জেরে নিজে তো অসুস্থ হবেনই, সঙ্গে সন্তান-সহ বাড়ির অন্য মানুষেরাও ভুগবেন। সেটা মনে রাখা জরুরি।’’
ফুসফুস সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে নাক-কানের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাঁরা জানাচ্ছেন, নাক বন্ধ, নাক কিংবা কান দিয়ে জল পড়ার মতো সমস্যা দীর্ঘ দিন ধরে থাকলে সেখান থেকে নানা ধরনের অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। যার ফলে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা তৈরি হয়। ফুসফুস সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাই নাকের সমস্যা অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ইএনটি চিকিৎসক দেবাশিস স্যান্যাল বলেন, ‘‘নাক বন্ধ থাকলে অনেকেই নানা ধরনের ড্রপ কিংবা স্প্রে ব্যবহার করেন। সেটা অনেক সময়ে ক্ষতিকর। সমস্যা তো কমেই না, বরং তৈরি হয় ওই ওষুধের প্রতি আসক্তি।’’