সবসময়ে দেরি? জেনে নিন সময়ানুবর্তী হয়ে উঠবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
অফিসে ঢুকতে পরপর কয়েক দিন দেরি হওয়ায়, সকলের সামনেই চার কথা শুনতে হয়েছে সোহিনীকে। শুভমের সঙ্গেও এ নিয়ে ঝামেলা। কারণ, শুভমের সঙ্গে দেখা করার জন্য কখনও ২ ঘণ্টা, অন্তত পক্ষে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়েছে সোহিনী।
সোহিনীর মতো এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা অফিস থেকে জরুরি কাজ, এমনকি প্রেম করার সময়ও সময়ে পৌঁছতে পারেন না। অফিসের কাজ হোক, জরুরি কোনও মিটিং বা পারিবারিক অনুষ্ঠান, দেরি করে পৌঁছলে সব সময়ই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
এখন প্রশ্ন হল, এই ধরনের মানুষ কি ইচ্ছা করেই দেরি করেন? না কি এটাই তাঁদের স্বভাব? নিয়মানুবর্তী হতে গেলে কী করা দরকার রইল সেই পরামর্শ।
দেরি কেন?
১. সাধারণত দেখা যায়, যাঁরা দেরি করে ফেলেন, তাঁরা মূল কাজ থেকে ‘ফোকাস’টা সরিয়ে ফেলেন। আনুষঙ্গিক কিছু কাজ যা হয়তো সেই সময়ে তত প্রয়োজনীয় নয়, সেটা করতে গিয়েই দেরি হয়ে যায়। হয়তো দেখা গেল, অফিস বের হওয়ার আগে বা অন্য কোনও কাজে যাওয়ার আগে মোবাইলে কিছু দেখছেন বা এমন কোনও কাজ করছেন যা পরে করলেও হয়, সেটা করতে গিয়েই সময়ে পৌঁছনো গেল না।
২.কিছু মানুষ থাকেন যাঁরা অলস। করছি, করব গোছের মনোভাব। তাঁদের ক্ষেত্রে দেখা যায় শেষ মুহূর্তে গিয়ে সময় ‘ম্যানেজ’ করতে না পেরে ছোটাছুটি করছেন।
৩. অনেক সময়ে দেখা যায় যে, পরিমণ্ডলে রয়েছেন সেখানেও সকলে সময়ানুবর্তী নন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের মানসিকতার প্রভাব পড়তে পারে।
৪.অনেকে মনে করেন, এখন বরোলে তাড়াতাড়ি পৌঁছে যাব। এত আগে গিয়ে লাভটা কী! তার পরেই বেরোতে গিয়ে তাড়াহুড়ো হয়, আর শেষ মুহূর্তে দেরি।
সময়ে কাজ করার, সময়ে পৌঁছনোর অভ্যাস কী ভাবে হবে?
১. মানসিকতা ও কাজের সামান্য বদলে সহজেই সময়ানুবর্তী হওয়া সম্ভব। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে নয়তো সকালে খানিকটা আগে উঠে জামাকাপড়-সহ জরুরি কাগজপত্র প্রস্তুত করে রাখতে পারেন। সব কিছু আগে গুছিয়ে নিলে যাওয়ার সময় অসুবিধে হবে না।
২. অনেকেই কিছুটা অলস হন। কাজের কথা সময়ে মনে থাকে না। ঘুম থেকে ওঠার ব্যাপারেও আলসেমি থাকে। তাঁরা একাধিক বার অ্যালার্ম দিতে পারেন। বার বার বাজলে উঠতেই হবে। কখন কোন কাজটা করতে হবে আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখলে সুবিধা হবে।
৩. বা়ড়ির টেবল, ওয়াড্রোব, অফিসে কাজের জায়গা সপ্তাহে এক থেকে দু’দিন গুছিয়ে রাখার অভ্যেস করলে সুবিধা হবে। তাতে কাজের সময়ে জামাকাপড় ও জরুরি জিনিস কাগজপত্র, ফাইল পেতে সুবিধা হয়। অনেক সময়ই বেরোনোর সময় প্রয়োজনের জামা, জুতো, ফাইল খুঁজতে গিয়ে দেরি হয়ে যায়।
৪. অন্য দিকে মন দেওয়া বন্ধ করতে হবে। যখন কোথাও বেরাতে হবে তার আগে ঠিক যে কাজগুলি করা দরকার, সেটাই করতে হবে। বেরোনোর আগে আলসেমি করে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, মোবাইল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা এগুলি সেই সময়ের জন্য বন্ধ করে কোনটা জরুরি সেটা দেখতে হবে।
প্রতিদিন ছোট ছোট এই অভ্যাসগুলি করতে পারলে, একটা সময় আসবে যখন কেউ সময়ানুবর্তী হয়ে উঠবে।