Anuttama Banerjee

পড়ানোর সময় খুদের গায়ে হাত তুলি, লোকে কী বলবে? পরিস্থিতি সামলানোর পথ দেখালেন মনোবিদ

আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে কিছু সমস্যার কথা সরাসরি শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:৪৪
Share:

মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

‘লোকে কী বলবে’-র প্রতিটি পর্বে ইতিমধ্যেই অনেকে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বে জীবন এবং সমাজের এমন কিছু দিক উঠে এসেছে যেগুলি নিয়ে কথা বলা কঠিন। সেই সব ছুৎমার্গ, সামাজিক চাপ যেখানে অনেক লজ্জা, ভয় জুড়ে আছে, সেই সব বিষয় নিয়েই ‘লোকে কী বলবে’-র প্রতিটি পর্বে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি পর্বের আগে এমন অনেক প্রশ্ন এসেছে, যার সঙ্গে শুধু সামাজিক সঙ্কট জুড়ে নেই, আরও অনেক ধরনের বিপন্নতাও থেকে যাচ্ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে তেমনই কিছু সমস্যার কথা সরাসরি শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। মল্লিকা দে অনুত্তমার কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘‘৫ বছরের মেয়েকে পড়ানোর সময় ধৈর্য রাখতে পারছি না। বিরক্ত হয়ে মাঝে মাঝে মেয়ের গায়ে হাত তুলে দিচ্ছি। তার পর দেখছি মেয়ে পড়া থেকে আরও দূরে চলে যাচ্ছে। কী করব এখন বুঝতে পারছি না।’’

বাচ্চার গায়ে হাত তুলে তাকে পড়া মুখস্ত করানো খুব একটা কাজের কথা নয়, এতে ফল হিতের বিপরীত হতে পারে। অনুত্তমা বললেন, ‘‘যখন দেখছেন বাচ্চাকে প়ড়াতে গিয়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন, তখন বলব কয়েক দিন ওকে পড়াতে কম বসানোই ভাল। ৫ বছরের মেয়ে এখনই পড়াশোনা নিয়ে খুব বেশি শৃঙ্খলাবদ্ধ হবে, সারা ক্ষণ ওর পড়তে বসতে ইচ্ছে করবে, এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই। আমরাও ছেলেবেলায় পড়াশোনা নিয়ে এতটা আগ্রহী ছিলাম? ছিলাম না তো? ধীরে ধীরে যত বড় হয়েছি, পড়াশোনার গুরুত্ব বুঝেছি। আপনার যদি মনে হয় বাড়ির সব কাজ সামলে যখন আপনি ওকে পড়াতে বসাচ্ছেন তখন আপনার বিরক্ত লাগছে, ধৈর্য রাখতে পারছেন না, সেই সময় ওই কাজটা থেকে কয়েক দিন নিজেকে সরিয়ে রাখুন। ওকে ক’দিন ওর মতোই থাকতে দিন। ও এখন যে স্কুলে পড়ছে সেখানে যেটুকু পড়াশোনা হচ্ছে হোক। ওর উপর বাড়তি চাপ দেবেন না। এই বয়সে ও যদি ক্লাসে প্রথম না হতে পারে, বাকিদের মতো পড়াশোনায় ততটাও ভাল না হতে পারে, তাতে কিন্তু আখেরে ওর কোনও ক্ষতি হবে না। ও ৫ বছর বয়সে কেমন ফল করেছিল, তাতে ওর ভবিষ্যৎ জীবনে সাংঘাতিক রকম কোনও পরিবর্তন আসবে না। কিন্তু ওর মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন তার উপরে ওর জীবনের অনেক কিছু নির্ভর করবে। বহু ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই, সন্তানের সঙ্গে তাঁদের বাবা-মায়ের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। অনেক সময় কিন্তু এর সূত্রপাত হয় এমন ছোট ছোট ঘটনা থেকেই। আমরা সন্তানের গায়ে হাত তুলছি এই ভেবে যে ও নিজেকে সংশোধন করবে। তবে এর ফলে আপনার সঙ্গে ওর সম্পর্কে যে অদেখা ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে, সেটা কিন্তু এখনই আঁচ করা মুশকিল। ওর পড়ানোর দায়িত্ব যে আপনাকে নিতেই হবে এমনটা তো কোথাও লেখা নেই। প্রয়োজনে অন্য কারও হাতে সেই দায়িত্ব তুলে দিন। তিনি হয়তো আরও আকর্ষণীয় ভাবে খুদেকে পড়াতে পারবেন। কয়েক দিন খুদেকে তার মতো থাকতে দিয়ে দেখুন। তখন যদি আপনার মনে হয় যে মন মেজাজ ভাল আছে, ভাল লাগছে, সে দি না হয় ওর সঙ্গে খানিকটা গল্পের ছলে পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা করুন। ওকে পড়াতে বসুন। কোনও প্রজেক্ট শেষ করার আগের দিন ওকে নিয়ে বসবেন না। এতে আপনার ও আপনার কন্যার মধ্যে একটা ঘর্ষণ আসছে, সেটাকে আর বাড়তে দেবেন না।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement