প্ল্যাটফর্মের একটা বড় অংশ জুড়ে সকাল-সন্ধে পড়াশোনা করেন বহু পড়ুয়া। ছবি: সংগৃহীত
গয়া-মুঘলসরাই জংশনের সাসারাম রেল স্টেশন। আপাত ভাবে আর পাঁচটি সাধারণ স্টেশনের মতোই। মানুষজন ট্রেন থেকে নামছেন। ট্রেনে চেপে দূরদূরান্তে চলে যাচ্ছেন। তবে সাসারাম স্টেশনের একটি বিশেষত্ব রয়েছে। এই স্টেশনে রোজ এমন ঘটনা ঘটে, যা ভারতবর্ষের অন্য স্টেশনে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না। প্ল্যাটফর্মের একটা বড় অংশ জুড়ে সকাল-সন্ধে পড়াশোনা করেন বহু পড়ুয়া।
সাসারাম স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নম্বর এক এবং দুইয়ে এই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। সকালের দু’ঘণ্টা এবং সন্ধ্যায় দু’ঘণ্টা প্ল্যাটফর্মে পড়াশোনা করেন পড়ুয়ারা। কিন্তু কেন হঠাৎ বাড়ি ঘর ছেড়ে সাসারাম রেল স্টেশনে এসে পড়াশোনা করছেন তাঁরা?
এরা সকলেই চাকরি পরীক্ষার্থী। স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পরীক্ষার জন্য নিজেদের তৈরি করেছেন। ২০০২-২০০৩ সাল থেকে প্ল্যাটফর্মে এসে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন এক দল পড়ুয়া। তার পর ক্রমে সংখ্যাটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এঁরা বেশির ভাগই আশেপাশের কোনও প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা। সেই সব গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। তা ছাড়ার মোটা টাকা দিয়ে কোচিং সেন্টারে পড়ারও আর্থিক সামর্থ্য নেই। স্টেশনের আলোয় তাঁরা পড়াশোনা করেন। স্টাডি মেটিরিয়াল নিয়ে আলোচনা করা, পড়াশোনা সংক্রান্ত জটিল কোনও সমস্যার সমাধান করা— সবটাই একসঙ্গে মিলেমিশে করেন। যত জন এখানে প্রস্তুতি নেন, সবাই হয়তো সাফল্য পান না। তা সত্ত্বেও চেষ্টাতে কখনও ভাঁটা পড়েনি। এঁদের পড়াশোনা করার ইচ্ছা আর চেষ্টা অজান্তেই অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছে দেশের অসংখ্য পড়ুয়াকে।