সত্তরের দশকে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে একটি ছোট রেস্তরাঁ চালাতেন আলি আহমেদ আসলাম। ছবি: সংগৃহীত।
রেস্তরাঁয় গেলে মুরগির যেই পদগুলি ভারতীয়রা সবচেয়ে বেশি চেখে দেখেন তার মধ্যে অন্যতম হল চিকেন টিক্কা মসালা! ইদ হোক কিংবা দুর্গাপুজো, নান কিংবা রুমালি রুটির সঙ্গে এই পদটি সব সময়ই থাকে ভারতীয়দের পছন্দের তালিকায়। তবে ভারতের এই জনপ্রিয় পদটি যে আদৌ ভারতীয় নয়, সে খবর রাখেন?
সত্তরের দশকে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে একটি ছোট রেস্তরাঁ চালাতেন আলি আহমেদ আসলাম। সেখানকার চিকেন টিক্কা কবাব চেখে এক গ্রাহক বলেন, ‘‘বড্ড শুকনো লাগছে পদটি, মোটেই খাওয়া যাচ্ছে না।’’ ব্যস, তখনই মালিকের মাথার মধ্যে ঢোকে কী করে এই শুকনো চিকেনের কবাবগুলি নরম আর রসালো করা যায়। সেই খাদ্যরসিক ক্রেতাই বলেন, একটু সস মিশিয়ে দেখুন না। কী সস মেশানো যায়? আলি আহমেদ ঠিক করেন, মাংসটি রাঁধার সময়েই তাতে দই, ক্রিম, আরও বেশ কিছু মশলা মেশাবেন। সেই থেকেই শুরু। আলি আহমেদ বানিয়ে ফেললেন পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় পদগুলির মধ্যে একটি। নাম দিলেন চিকেন টিক্কা মসালা। প্রয়াত হলেন সেই চিকেন টিক্কা মসালার আবিষ্কারক।
মৃত্যুকালে আলি আহমেদ আসলামের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। প্রায় ৫০ বছর আগে নিতান্ত পরীক্ষামূলক ভাবেই নিজের রেস্তরাঁয় চিকেন টিক্কা মসালা বিক্রি করতে শুরু করেন আলি আহমেদ। খাদ্যরসিকদের মহলে তাঁর পরিচিতি ‘মিস্টার আলি’ হিসাবে। পাকিস্তানের পঞ্জাবে জন্ম হলেও খুব অল্প বয়সেই পরিবারের সঙ্গে চলে যান স্কটল্যান্ড। আর খুলে ফেলেন নিজের সাধের রেস্তরাঁ— শিশমহল।
ইউরোপের বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখে কম ঝাল অথচ মশলাদার মুরগির পদ বানানোর কথা মাথায় আসে। ছবি: শাটারস্টক।
মশলাদার হলেও চিকেন টিক্কা মসালার স্বাদ হয় মিষ্টি মিষ্টি। খুব বেশি ঝাল হয় না। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলি আহমেদ বলেন, ‘‘এশিয়ার মানুষদের মতো খুব বেশি ঝাল ইউরোপের লোকেরা খেতে পারেন না। তাই তাঁদের কথা মাথায় রেখে কম ঝাল অথচ মশলাদার মুরগির পদ বানানোর কথা মাথায় আসে। আর সেখান থেকেই চিকেন টিক্কা মসালা বানানোর কথা মাথায় আসে।’’