চিকিৎসার ভুলে মৃত্যু যুবকের। ছবি: সংগৃহীত।
মাথায় টিউমার হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসা চলছিল অ্যাপেন্ডিসাইটিসের। সম্পূর্ণ ভুল চিকিৎসার কারণে অকালে প্রাণ হারালেন ২৫ বছর বয়সি জোস ওয়ার্নার। আমেরিকার বাসিন্দা জোস সদ্য বাবা হয়েছেন। তিন মাসের একটি কন্যাসন্তান আছে তাঁর। মৃত যুবকের স্ত্রী চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
বিগত দু’সপ্তাহ ধরে অসহ্য মাথা যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিলেন জোস। সেই অত্যধিক শারীরিক দুর্বলতা। ওষুধ খেলে মাথা যন্ত্রণা সেরে যেত। কিন্তু কিছু ক্ষণ পর আবার হত। স্ত্রীর কথামতো হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করাতে গিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসক জোসকে জানান যে, তাঁর অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব অস্ত্রোপচার করতে হবে। মাথা যন্ত্রণার সঙ্গে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের কী সম্পর্ক থাকতে পারে, তা বুঝতে পারছিলেন না জোস। তবে চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান। অস্ত্রোপচার হয়।
অস্ত্রোপচারের দিন কয়েক পরে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন জোস। তিনি আবার হাসপাতালে যান। এ বার চিকিৎসককে খানিক জোর জিয়েই সিটি স্ক্যান করার কথা বলেন। সিটি স্ক্যানে মাথায় টিউমার ধরা পড়ে। কিন্তু চিকিৎসকের দাবি, সেটা আসলে যান্ত্রিক গোলযোগ। কম্পিউটারের সমস্যা। সে বারও হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া জোসকে।
তার পরেও এমন বহু বার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ছুটে গিয়েছেন জোস। কিন্তু প্রত্যেক বারই তাঁকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মাসখানেক এমন চলার পর হঠাৎই এক দিন স্নানঘরে জ্ঞান হারান জোস। তাঁর স্ত্রী এ বার অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁকে। সেখানে জোসের সিটি স্ক্যান হয়। ২৪ ঘণ্টা পর রিপোর্ট এলে জানা যায়, জোসের ব্রেন টিউমার হয়েছে। কিন্তু তখন জোসকে সুস্থ করে তোলার সময় এবং সুযোগ কোনওটাই ছিল না। চিকিৎসকেরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, জোসের বেঁচে থাকার মেয়াদ আর তিন মাস। কিন্তু জোস অত দিনও সময় পাননি। টিউমার ধরা পড়ার ১২ দিনের মাথায় মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতাল এবং চিকিৎসকের কঠোরতম শাস্তির দাবি তুলেছে জোসের পরিবার। জোসের স্ত্রী বলেছেন, ‘‘এমন ঘটনা যেন আর কারও সঙ্গে না ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি। আমি নিশ্চিত, দোষীরা শাস্তি পাবেই।’’