করোনায় আক্রান্ত যে সব রোগীর উপরে ডক্সিসাইক্লিন প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের অবস্থা মারাত্মক সঙ্কটজনক হয়নি। প্রতীকী ছবি।
করোনা অতিমারিতে ‘ডক্সিসাইক্লিন’-এর প্রয়োগ অনেকাংশে কমিয়েছিল সঙ্কটজনক রোগীর হার। যদিও, বহু পুরনো ও কম দামি ওই ওষুধ তেমন কদর পায়নি অতিমারি-পর্বে। কিন্তু, আন্তর্জাতিক গবেষণায় উঠে এল ডক্সিসাইক্লিনের গুরুত্বের কথা। সম্প্রতি ওই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান পত্রিকা ‘প্লস ওয়ান’-এ। সেখানে প্রমাণ করা হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত যে সব রোগীর উপরে ডক্সিসাইক্লিন প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাঁদের অবস্থা মারাত্মক সঙ্কটজনক হয়নি। সেই হার প্রায় ৪৩ শতাংশ।
২০২০-র শেষ থেকে ২০২১-এর জুনের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় পর্যন্ত দেশের ছ’টি হাসপাতালে এই ওষুধের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলেছিল। কলকাতার সিএমআরআই হাসপাতালের সঙ্গে গাজ়িয়াবাদ, দিল্লি, পুণে, বরোদা ও হায়দরাবাদের পাঁচটি হাসপাতাল এই গবেষণায় অংশ নিয়েছিল। যার মুখ্য গবেষক তথা ফুসফুসের রোগের চিকিৎসক রাজা ধর জানাচ্ছেন, ছ’টি হাসপাতাল মিলিয়ে ৩৮৭ জন রোগীর উপরে পরীক্ষামূলক গবেষণা করা হয়েছিল। সেখানে ৪০ থেকে ৯০ বছর বয়সি রোগীদের মধ্যে করোনার প্রথাগত চিকিৎসা পেয়েছিলেন ১৯৫ জন। বাকি ১৯২ জনকে ওই চিকিৎসার পাশাপাশি ডক্সিসাইক্লিন-ও দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, ওই সমস্ত রোগীর মধ্যে যাঁদের শারীরিক অবস্থা অতি সঙ্কটজনক হয়েছিল, তাঁদের অধিকাংশ ডক্সিসাইক্লিন পাননি।
রাজা বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবহৃত, সস্তার অ্যান্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিন প্রয়োগের সুফল ক্রমশ বোঝা যাচ্ছিল। সেই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে অনেক রোগীকে বিপদ থেকে বাঁচানো সম্ভব হয়। এত দিন পরে গবেষণাটি স্বীকৃতি পেল।’’ সোমবার গবেষণার সাফল্য উদ্যাপন করতে সাংবাদিক বৈঠক করে একবালপুরের সেই হাসপাতাল। ব্রিটেনের গবেষক লরা গিলবার্ট, জার্মানির গবেষক মার্সেল স্টার্ন ও অলিভার কেপলারও যুক্ত ছিলেন এই গবেষণায়। রাজার কথায়, ‘‘অতিমারির সময়ে এমন একটি গবেষণায় যে ভারত নেতৃত্ব দিয়েছিল, সেটিও অত্যন্ত গর্বের।’’