— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ঝিমিয়ে থাকলে হবে? হাত-পা চালিয়ে কাজও তো করতে হবে! উঠতে-বসতে এ ধরনের কথা আশপাশে অনেককেই বলতে শোনা যায়। কিন্তু বিছানা ছেড়ে উঠেই কি তরতরিয়ে কাজ করা যায়! আবার রাতভর ঘুম ভাল হলেও, সকালে ওঠার সময়ে গা-হাত-পায়ে অসহ্য ব্যথাও হয় অনেকেরই। সঙ্গী হয় মাসল ক্র্যাম্প, পা ঝিনঝিন, পিঠ-কোমর-ঘাড়ে ব্যথা… আরও অনেক কিছুই। নতুন কিছু কিন্তু নয়, এ ধরনের সমস্যা অনেকেরই হয়। অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে মাঝেমধ্যে এমনটা হতেই পারে। কিন্তু নিয়মিত এমন সমস্যা স্বাভাবিক নয়। ফিটনেস প্রশিক্ষক সৌমেন দাস বলছেন, এ ধরনের সমস্যাকে বলা হয় ‘মর্নিং মোবিলিটি প্রবলেম’।
সৌমেন বলছেন, অল্প বয়সে মর্নিং মোবিলিটির সমস্যা হতে পারে। তবে চল্লিশের পর থেকেই এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়। এ সময় অনেকেরই স্পাইনাল কর্ডের নীচের দিকে ব্যথা হয়। সঙ্গে হাঁটু, পা, থাইয়ের ব্যথায় কাবু থাকেন অনেকে। রাতে ঘুমানোর কারণে দীর্ঘ সময় পেশিগুলি রিল্যাক্সড থাকে। ফলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময়ে সমস্যা বেশি হয়। এ সমস্যার থেকে সমাধান কঠিন কিছু নয়। নিয়মিত বিছানায় মাত্র দশ মিনিটের সহজ কিছু ব্যায়ামই এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কী করতে হবে?
মনে রাখবেন, ব্যায়াম সেরেই তড়িঘড়ি খাট থেকে নেমে পড়বেন না। বরং ধীরেসুস্থে খাটের ধারে খানিক পা ঝুলিয়ে বসুন। গোড়ালি থেকে পায়ের পাতা প্রথমে ক্লকওয়াইজ় পাঁচ বার, পরে অ্যান্টি-ক্লকওয়াইজ় পাঁচ বার ঘোরান।
সৌমেন বলছেন, “মর্নিং মোবিলিটি বাড়াতে মূলত এই পাঁচ থেকে ছ’টি ব্যায়ামই যথেষ্ট। এতে আলস্য কেটে গিয়ে কাজে গতিশীলতা যেমন বাড়বে, তেমনই কম থাকবে শরীরের নানা যন্ত্রণাসমূহও। সকালে ঘুম থেকে উঠে জিমে যান অনেকেই। প্রশিক্ষকদের মতে, তাঁদের ক্ষেত্রেও কিন্তু মর্নিং মোবিলিটি বাড়ানোর এই ব্যায়াম ভাল। জিমে গিয়ে শারীরিক কসরতের সময় এতে সুবিধেই হয়। পাশাপাশি কেটে যায় মানসিক অবসাদও।”
তবে কেবল চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নয়, শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি, রক্তে লোহিত রক্তকণিকার অভাব, অতিরিক্ত ওজন কিংবা ভুল ভঙ্গিমায় শোয়া ইত্যাদি নানা কারণে অনেকেরই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরের নানা অংশে ব্যথা হতে পারে। সৌমেনের মতে, সকল বয়সের মানুষের পক্ষেই তাই এই ধরনের ব্যায়াম দিয়ে দিন শুরু করা ভাল। তবে দীর্ঘ দিন এই ধরনের শারীরচর্চার পরেও যদি ব্যথা না কমে, উপকার না পাওয়া যায়, তবে কিন্তু অবশ্যই শরীরে অন্য কোনও রোগের বাসা বাধার সম্ভাবনা থেকে যায়। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া একান্ত জরুরি।