১২ ঘণ্টা ধরে জ্বর থাকত, তার পর ১২ ঘণ্টা ধরে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা এবং ডায়রিয়া। কেন সোমবার করেই এমন হত, কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন কেউ-ই। ছবি: সংগৃহীত
টানা নয় সপ্তাহ ধরে ভুগেছেন সকলে। কিন্তু শুধু সোমবার করে! এমন ঘটনায় তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলেন পরিবারের সকলেই। কিন্তু কারণ কিছুতেই বুঝতে উঠতে পারছিলেন না কেউ-ই। অবশেষে তাঁরা রহস্যের সমাধান করতে পারলেন। সব কিছুর মূলে ছিল এক বিশেষ ধরনের মাখন!
আমেরিকার বাসিন্দা কেলসির দুই সন্তান। নয় সপ্তাহ ধরে কেলসির স্বামী, কেলসির আট বছরের ছেলে এবং কেলসি প্রতি সোমবার করে অসুস্থ হয়ে পড়তেন। ১২ ঘণ্টা ধরে জ্বর থাকত, তার পর ১২ ঘণ্টা ধরে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা এবং ডায়রিয়া। কেন সোমবার করেই এমন হত, কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন কেউ-ই। অথচ পরিবারের সবচেয়ে খুদে সদস্য, কেলসির আরেক সন্তান দিব্যি থাকত।
নয় সপ্তাহ ধরে কোথাও যাননি কেলসিরা। কাউকে বাড়িতেও আমন্ত্রণ জানাননি। কারণ তাঁদের মনে হচ্ছিল, বাড়িতে অতিথি এলে, তাঁরাও অসুস্থ হয়ে পড়বেন। বাড়ির খাবার খেতেন সকলে। বাড়ি অনেক বার পরিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু রোগের উৎস কিছুতেই খুঁজে বার করতে পারেননি। রাগে-হতাশায় ভেঙে পড়ছিল গোটা পরিবার।
অবশেষে এক চিকিৎসক এই ধাঁধার সমাধান করেন। তিনি কেলসিকে জানান, এক বিশেষ সংস্থার পিনাট-বাটার থেকেই স্যালমোনেলা ব্যাক্টেরিয়া যাচ্ছে তাঁদের শরীরে। সেই থেকে ফুড পয়জনিং হয়ে যাচ্ছে। সেই বিশেষ সংস্থার পিনাট-বাটার বাজারে আসার কিছু দিনের মধ্যেই তুলে নেওয়া হয়েছিল। কারণ, দেখা গিয়েছিল সেই পিনাট বাটার থেকে স্যালমোনেলার সংক্রমণ হচ্ছে।
সত্যিটা জেনেও বিভ্রান্ত লাগছিল কেলসির। কারণ তাঁরা বাড়িতে ওই সংস্থার পিনাট-বাটার ব্যবহার করেন না। বাড়ি ফিরে তাঁরা স্বামীকে জানাতে গোটা ঘটনাটা পরিষ্কার হয়। জানা যায়, সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে কেলসি রান্না করেন। তখন তিনি রান্নাঘরের বড় শিশির পিনাট বাটার ব্যবহার করেন। কিন্তু সপ্তাহান্তে তাঁর স্বামী সকালের জলখাবার বানান। আর তিনি সে সময়ে ফ্রিজের পিছন দিকে থাকা ছোট ছোট পিনাট বাটারের প্যাকেট ব্যবহার করতেন। খুঁজে দেখা গেল সেই প্যাকেটগুলি ওই নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া সংস্থারই। দুধের শিশু সেই জলখাবার খেত না। তাই সে অসুস্থও হত না। যেহেতু খুব অল্প পরিমাণে স্যালমোনেলা বাকিদের শরীরের যেত, তাই তাঁরা কেউ তেমন গুরুতর অসুস্থ হয়েও পড়েননি যে, হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
কেলসির টিকটক অ্যাকাউন্টের ঝলক।
গোটা ঘটনাটি সম্প্রতি টিকটকে জানিয়েছেন কেলসি। শুনে তাজ্জব হয়েছেন তাঁর বহু অনুগামী। আবার অনেকে মন্তব্য করেছেন যে, অসুস্থতার কারণ যখন জানা গিয়েছে, তখন আশা করা যায়, সমস্যা আর থাকবে না।