Cima Art Gallery

আঠার ব্যবহারে তৈরি ত্রিমাত্রিক ছবির ইনস্টলেশন: সিমা গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী

আঠার সঙ্গে রং মিশিয়ে নেন শিল্পী। মাঝেমাঝে তাতে মেশানো হয় গ্রামের মাটিও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:৪৪
Share:

প্রদর্শনীর কার্ড।

কখনও ক্যানভাসে। কখনও বা খালি ফ্রেমেই তৈরি হচ্ছে ছবি। এক জায়গায় জড়ো হচ্ছে স্মৃতিরা। ফুটে উঠছে হাহাকার। চোখে পড়ছে ঘরে ফেরার গল্পও।

Advertisement

অতিমারিতে জর্জরিত সময়ের সঙ্গে মানিয়ে যখন চলতে চেষ্টা করছে গোটা বিশ্ব, শহর কলকাতা তখন সাক্ষী থাকছে এমনই এক অনন্য অভিজ্ঞতার। আগামী ১২ তারিখ থেকে সিমা গ্যালারিতে শুরু হচ্ছে তরুণ শিল্পী প্রশান্তশশীকান্ত পাতিলের একক প্রদর্শনী। এক মাস ধরে চলা সেই প্রদর্শনীতে তাঁর ত্রিমাত্রিক ড্রয়িংয়ের ইনস্টলেশনে ধরা পড়বে এ সময়টাকে ঘিরে তৈরি হওয়া নানা ভাবনা। গেরস্থালির ভালবাসা থেকে ভঙ্গুর সময়ের ভয়াবহতা, সবটাই ধরা আছে তাঁর থিমে।

২০১৯ সালে ‘সিমা অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্ত শিল্পী প্রশান্ত মহারাষ্ট্রের একটি ছোট্ট শহর কোরেগাঁওয়ের বাসিন্দা। তাঁর শিল্পের মাধ্যমটি অপ্রচলিত। এ কাজ নিছক ড্রয়িং নয়। এটি খানিকটা ভাস্কর্যের মতোই। তরল পদার্থে তৈরি সেই ছবি জমাট বেঁধে সৃষ্টি করে অপরিচিত এক আবহের। একটি যন্ত্রে আঠা ভরে, তা ব্যবহার করেই আঁকা হয় এই ছবি। কখনও আবার সেই আঠার সঙ্গে রং মিশিয়ে নেন শিল্পী। মাঝেমাঝে তাতে মেশানো হয় গ্রামের মাটিও।

Advertisement

শিল্পী প্রশান্তের কাজের মাধ্যমটি কষ্টসাধ্য। সময়সাপেক্ষও। এক-একটি ছবি শুকোতে কখনও গড়িয়ে যায় সপ্তাহ। তবে এক বার সবটা শুকিয়ে যাওয়ার পরে সেই ছবি দেখে মনে হবে, যেন লেস কিংবা কাপড়ের মতোই জড়িয়ে ফেলা যাবে গায়ের সঙ্গে। অর্থাৎ, এই ছবি শুধু দেখার নয়। ছোঁয়ারও। বলা ভাল, ছুঁয়ে দেখার।

সিমা গ্যালারির তরফে মুখ্য প্রশাসক প্রতীতি বসুসরকার জানান, এটিই প্রশান্তের প্রথম একক প্রদর্শনী। তিনি বলেন, ‘‘প্রশান্তের কাজ একেবারেই নতুন ধারার। এটিকে আমি ‘স্কাল্পচারাল ড্রয়িং ইনস্টলেশন’ বলে থাকি। ওঁর কাজ দেখলে মনে হয় যেন অ্যালিসের কল্পজগতে ঘোরাঘুরি করতে হচ্ছে। নিজের কাজে ও যে ভাবে ছায়াকে ব্যবহার করে, তা দেখার মতো।’’

এ বারের প্রদর্শনীতে প্রশান্তের শিল্পে বিশেষ জায়গা পাচ্ছে আলো-ছায়ার কারুকাজ। সত্যজিৎ রায়ের ছবির সাদা-কালো জগতের কথা যেন মনে করায় সেই কাজ। ছায়া যেমন ক্ষণস্থায়ী, তেমনই চারপাশের অনেক কিছুই থাকে শুধু ক্ষণিকের জন্য। শিল্পী বলছেন, ‘‘যা কিছু ক্ষণস্থায়ী, তাকেই নিজের কাজে জায়গা দিয়েছি। ছায়ার মতো ক্ষণস্থায়ী তো খুবই কম জিনিস হয়। তাই ছায়াকে ব্যবহার করেই আমার ভাবনা বোঝাতে চেয়েছি। ছায়ার মাধ্যমেই খুজে নিচ্ছি জীবনে স্মৃতি, ভয়, ঘরের ধারণার মতো গুরত্বপূর্ণ অথচ দ্রুত বদলাতে থাকা কিছু ভাবনা।’’

এই কাজে যেমন থাকছে সৌন্দর্যের ছোঁয়া, তেমন ধরা থাকছে ভয়াবহতাও!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement