প্রশ্ন: বিজ্ঞানের ছাত্রী। বায়োটেকনোলজি নিয়ে উচ্চশিক্ষার ইচ্ছে। রাজ্যে ও বাইরে কোথায় পড়ব? বিদেশে পড়াশোনার সুযোগই বা কেমন?
পরমা দত্ত, উত্তরপাড়া
কলিকাতা, যাদবপুর, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের বিভিন্ন স্টেট ও সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়েই বায়োটেকনোলজি বা আনুষঙ্গিক বিষয়ে এম এসসি, এম ফিল, পিএইচ ডি করতে পারে ছেলেমেয়েরা। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (www.jnu.ac.in) কম্বাইন্ড বায়োটেকনোলজি এন্ট্রান্স এগজামিনেশন নামে একটি পরীক্ষা পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে অনেক প্রতিষ্ঠানে বায়োটেকনোলজি ছাড়াও এগ্রিকালচারাল বায়োটেকনোলজি, এনভায়রনমেন্টাল বায়োটেকনোলজি, ইন্ডাসট্রিয়াল বায়োটেকনোলজি, মেরিন বায়োটেকনোলজি, মলিকিউলার বায়োলজি এবং বায়োটেকনোলজি-তে এম এসসি পড়া যায়। কোথাও কোথাও আবার এই পরীক্ষা দিয়ে এম টেক কোর্সেও যোগ দেওয়া যাবে। বায়োটেকনোলজি বা আনুষঙ্গিক বিষয়ে গবেষণার উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠান—
• ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স বেঙ্গালুরু (আইআইএসসি)
www.iisc.ernet.in
• ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউটস অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইআইএসইআর)
• ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি)
• ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইমিউনোলজি
www.nii.res.in
• ইনস্টিটিউট অব বায়োইনফরমেটিক্স অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড বায়োটেকনোলজি
www.ibab.ac.in
• ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট
www.iari.res.in
• রাজীব গাঁধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি
http://rgcb.res.in
• ন্যাশনাল সেন্টার ফর সেল সায়েন্সেস
www.nccs.res.in
• জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চ
www.jncasr.ac.in
• ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি
http://iicb.res.in
• বোস ইনস্টিটিউট
www.jcbose.ac.in/home
• ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস
www.niced.org.in ইত্যাদি
মলিকিউলার বায়োলজি, জেনেটিক্স, নিউরোসায়েন্স, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স-এর মতো বিভিন্ন বিষয়ে স্পেশালাইজেশন করা যায়। পিএইচ ডি করতে হলে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট (নেট)-এ উত্তীর্ণ হতে হবে। কিংবা দেওয়া যায় গ্র্যাজুয়েট অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (গেট) পরীক্ষা। সিএসআইআর/ইউজিসি, ডিবিটি, আইসিএমআর-এর মতো হরেক প্রতিষ্ঠান নিজস্ব নেট পরীক্ষা পরিচালনা করে। আর আইআইটিগুলি নেয় গেট পরীক্ষা।
স্নাতকোত্তর স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষার ক্ষেত্রে কিন্তু শুধু কলেজের সিলেবাসটাই পড়লে চলে না। বাইরের খবরও রাখতে হয়। এর জন্য একাধিক সংবাদপত্র, পত্রিকা পড়া প্রয়োজন। খেয়াল রাখতে হবে কোথায় বায়োটেকনোলজি সংক্রান্ত নতুন কী ঘটছে, কী ধরনের গবেষণা হচ্ছে। সাধারণত এমসিকিউ আকারেই প্রশ্ন আসে।
বিদেশে পড়াশোনা
অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই বিদেশে যায় এম এসসি-র পরে, পিএইচ ডি বা উচ্চতর গবেষণা করতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া বা ব্রিটেন, জার্মানির মতো দেশে পড়তে যায় তারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেতে জিআরই, টোয়েফ্ল দিতে হবে। ব্রিটেন-এ পড়তে আইইএলটিএস পরীক্ষা দিতে হয় ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য। তার পর অ্যাকাডেমিক রেকর্ডের ভিত্তিতে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ মেলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে। ইউরোপের অন্যান্য দেশেও এই একই পদ্ধতিতে ভর্তি, তবে সেখানে আইইএলটিএস দিতে হয় না। এখন সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলিতেও পড়তে যাচ্ছে অনেকে। বিদেশে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রোটিওমিক্স, জেনোমিক্স, সেলুলার নেটওয়ার্কিং, স্ট্রাকচারাল বায়োলজি, কম্পিউটেশনাল বায়োলজির মতো বিষয়গুলি নিয়ে গবেষণা করে ছাত্রছাত্রীরা। এ ছাড়া, সিস্টেম্স বায়োলজি-ও এখন বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে গবেষণার ক্ষেত্রে।
ইউরোপের প্রতিষ্ঠানগুলিতে পূর্ণ সময়ের স্কলারশিপ কমই পাওয়া যায়। অন্য দিকে, কম হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত পুরো স্কলারশিপই দিয়ে থাকে ছেলেমেয়েদের। এম এসসি স্তরে স্কলারশিপ কম মিললেও, পিএইচ ডি বা আরও উচ্চতর পড়াশোনার ক্ষেত্রে বৃত্তি বেশ ভালই পাওয়া যায়।