আজকাল পড়াশোনা থেকে কাজ, বা বন্ধুদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে উঠে আসা কোনও বিষয়ে খটকা— সব ক্ষেত্রেই গুগল সার্চ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। স্মার্টফোন হাতে থাকার অর্থ, আমরা সবাই একটা ‘ইনফরমেশন সুপার-হাইওয়ে’র মধ্যে সারা ক্ষণ চলাফেরা করছি। তাই আজকে আলোচনা করব ‘সার্চ’ নিয়ে। কী করে আমরা আরও ভাল করে, এবং তার থেকেও জরুরি ঠিক ভাবে, সার্চ করতে পারি।
কোনও প্রশ্ন যখন গুগলকে করছ, সেটার উত্তর তোমার সার্চে কখনও দেবে না। যেমন, যদি তুমি জানতে চাও, পৃথিবীর আকৃতি কী, তা হলে কি লিখবে ‘পৃথিবী কি সমতল?’ যদি আমরা সেটা লিখি, গুগল কিন্তু গোটা কয়েক ওয়েবসাইট দেখাবে, যেখানে বলা আছে যে পৃথিবী সমতল। তাই পৃথিবীর আকার জানতে হলে লিখতে হবে: ‘পৃথিবীর আকৃতি কী?’ কী ভাবে পর পর শব্দগুলো বসাচ্ছ, সেটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। ‘Sky blue’ আর ‘blue sky’ সার্চ করলে কিন্তু আলাদা আলাদা উত্তর পাবে। তাই নিজের সার্চকে আরও নির্দিষ্ট করার জন্য আগে একটু ভেবে নেবে যে, তুমি ঠিক কী জানতে চাও। চট করে যদি দেখে নিতে চাও, কী ভাবে নিজের সিভি লিখবে, তা হলে এমনি গুগল সার্চ না করে ‘ইমেজ’ সার্চ করলে দেখবে, অনেক রকমের সিভির উদাহরণ পাচ্ছ। ‘ইমেজেস’, ‘ভিডিয়োজ়’, ‘নিউজ়’— গুগল-এর এই বিভিন্ন ‘ট্যাব’ ব্যবহার করতে শুরু করলে দেখবে, তোমার সার্চ আরও কার্যকর ও তাড়াতাড়ি হবে।
পড়াশোনার ক্ষেত্রে নিজের অনলাইন সার্চকে আরও উপযোগী করতে কিছু নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের কথা জেনে রাখা ভাল। যেমন, বই বা নিবন্ধের জন্য ‘Google Scholar’, ‘RefSeek’, ‘ResearchGate’-এর মতো ওয়েবসাইট আছে, যেখানে তোমার কাজের বিষয়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য পেতে পারো।
গুগল-এর কিছু বিকল্পও আছে। যেমন, ‘Duckduckgo’। গুগল আমাদের সব সার্চের উপর নজর রাখে, এবং আমাদের সার্চের ইতিবৃত্ত দেখে সেই ধরনের বিজ্ঞাপন দেখায়। আবার গুগল যে হেতু জানে যে তুমি কোথায় বাস করো, সেই অনুযায়ী নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক কিছু দেখায়ও না। মনে করে, ওটা হয়তো তোমার কাজে লাগবে না। তাই গুগলে কোনও বই বা লেখা না পেলে, ‘ডাকডাকগো’-তে খুঁজে দেখতে পারো।
আর একটা জিনিস মাথায় রেখো। গুগলে কিছু থাকা মানেই যে সেটা ঠিক, তার কিন্তু কোনও মানে নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে, গুগল একটা সার্চ ইঞ্জিন মাত্র। কোনও খবর যদি গুগলে থাকে, তার মানেই এই নয় যে, সেই খবরটা সত্যি। আমাদের কাজের ক্ষেত্রেই হোক কিংবা পড়াশোনা— নিজের চিন্তাধারার স্বাধীনতা থাকা জরুরি। তাই গুগলে যদি কিছু পড়ো, চেষ্টা করবে সেই বিষয়ে শুধু একটা আর্টিকল পড়ে নিজের মতামত তৈরি না করে, গোটা কয়েক লেখা পড়ে ফেলার। তা হলে সেই বিষয়ে তোমার দক্ষতা বাড়বে। সঙ্গে নানা দৃষ্টিকোণের সঙ্গেও পরিচিতি ঘটবে।
অল্প গুগল ভয়ঙ্করী, এই কথাটা মনে রাখলেই চলবে।