এ বার আর পরোক্ষে নয়, রাজ্যসভা নির্বাচনে নিজের দুই প্রার্থীকে জেতাতে সরাসরি লালুপ্রসাদের সঙ্গে কথা বললেন নীতীশ কুমার। একদা মিত্র, পরবর্তী কালে পরস্পরের চরম শত্রু নীতীশ ও লালু দীর্ঘদিন পর পরস্পরের সঙ্গে কথা বললেন। যোগ সূত্র অবশ্যই বিজেপি। আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে নীতীশ জানান, “রাজ্যসভায় জেডিইউয়ের দুই প্রার্থীকে জেতাতে আমি গত কাল টেলিফোন করে লালুপ্রসাদের সঙ্গে কথা বলি। তাঁর দলের ২১ বিধায়কের সমর্থন আমি চেয়েছি।” একই সঙ্গে তিনি জানান, “আমি কংগ্রেস ও সিপিআই বিধায়কদেরও সমর্থন চেয়ে ওঁদের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছি। এ বার ওঁরা ওঁদের সিদ্ধান্ত নেবেন।”
বিজেপিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নীতীশ বলেন, “এক বিজেপি নেতার বাড়িতে বসে রাজ্যসভার বিক্ষুব্ধ প্রার্থী ঠিক হয়েছে। আসলে বিজেপি রাজ্যে অস্থিরতা তৈরি করতে চায়।” নীতীশের ক্ষোভ, “প্রথমে বিজেপি বলেছিল রাজ্যসভায় তারা প্রার্থী দেবে না। এখন রাজ্যসভার এই নির্বাচনকে নিয়ে ওরা চক্রান্ত করছে।” ইতিমধ্যে জেডিইউয়ের বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি-র ৮৪ ও তাদের ঘনিষ্ঠ ২ নির্দল বিধায়ক। রাজ্যসভার তিনটি আসনের মধ্যে জেডিইউ সভাপতি শরদ যাদব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন। বাকি দু’টি আসনে জেডিইউ প্রার্থী পবন বর্মা ও গুলাম রসুল বালিয়াভির লড়াই জেডিইউয়েরই দুই বিক্ষুব্ধ প্রার্থী অনিল শর্মা ও সাবির আলির। নীতীশ এ দিন বলেন, “আমি পদত্যাগ করার পরে এখন জিতনরাম মাঝির সরকার ভাল কাজ করছে বলে তাঁকে বিজেপি নানা ভাবে ঝামেলায় ফেলতে চাইছে। এই সরকার ভাল কাজ করলে ওরা সমস্যায় পড়ে যাচ্ছে। এখন ওরা তাড়াতাড়ি বিধানসভা ভোট করাতে চায়।” নীতীশ জানান, বিহারবাসী পাঁচ বছরের জন্য রায় দিয়েছেন বলেই তিনি বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করেননি।
বিজেপি যে লালু এবং নীতীশের ভোট ভাগাভাগির ফসল ঘরে তুলছে তা বুঝতে পেরে বিজেপিকে ঠেকাতে নীতীশ-লালু কাছাকাছি আসতে চাইছেন। লোকসভায় দুই দলের প্রাপ্ত ভোট বিজেপির থেকে বেশি। আগামী বিধানসভা ভোটে বিজেপি-কে ঠেকাতে নীতীশ-লালু জোট হবে কী না সেই প্রশ্নের উত্তরে নীতীশ বলেন, “এখনকার পরিস্থিতি নিয়েই আপাতত আলোচনা চলছে। আগামী দিনের সিদ্ধান্ত আগামী দিনেই নেওয়া হবে।”