শেষের সে দিন কিন্তু ভয়ঙ্কর

২০৭০ সালে যদি মুম্বই তীরবর্তী সমুদ্রতল ০.৫ মিটার বাড়ে তা হলে ১ কোটি মানুষ এবং ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেবল মুম্বই নয়, উপকূলবর্তী প্রায় সব শহরেরই কম বেশি এমন দশা হবে। সাংহাই, ব্যাঙ্কক, মিয়ামি, হো চি মিন সিটি, নিউইয়র্ক, টোকিও, আলেক্সান্দ্রিয়া, আমস্টার্ডাম কেউ রেহাই পাবে না। রেহাই নেই কলকাতা ও ঢাকার, কারণ গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলেও সমুদ্রের জলতল বাড়ছে। উদ্বিগ্ন হয়ে জানালেন পারমিতা মুখোপাধ্যায়।২০৭০ সালে যদি মুম্বই তীরবর্তী সমুদ্রতল ০.৫ মিটার বাড়ে তা হলে ১ কোটি মানুষ এবং ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেবল মুম্বই নয়, উপকূলবর্তী প্রায় সব শহরেরই কম বেশি এমন দশা হবে। সাংহাই, ব্যাঙ্কক, মিয়ামি, হো চি মিন সিটি, নিউইয়র্ক, টোকিও, আলেক্সান্দ্রিয়া, আমস্টার্ডাম কেউ রেহাই পাবে না। রেহাই নেই কলকাতা ও ঢাকার, কারণ গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলেও সমুদ্রের জলতল বাড়ছে। উদ্বিগ্ন হয়ে জানালেন পারমিতা মুখোপাধ্যায়।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৪ ০০:০০
Share:

ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয়। কী বললেন, ও সব গাঁজাখুরি কথা? কী জানি বাপু, স্বপ্নটা দেখে ইস্তক মনের ভেতর কেমন খচখচ করছে। সেই ছোট্টবেলায় কে যে মনের ভেতর এমন একটা ‘উদ্ভুট্টে বিশ্বেস’ ঢুকিয়ে দিয়ে গেছিল, সে আর মাথা থেকে তাড়ানো গেল না। ভোরবেলা আধো ঘুমে কোনও স্বপ্নটপ্ন দেখলে পরে তা যদি ভাল হয় তো মেজাজটা বেশ ফুরফুরে থাকে, কিন্তু খারাপ দেখলে মনের মধ্যে হাজারটা কাঁসর ঘণ্টা বাজতে থাকে— সত্যি হয়ে যাবে না তো! যে এই স্বপ্নের ভূত মাথায় ঢুকিয়েছিল সে অবিশ্যি একটা উপায়ও বাতলেছিল। সেটি হল খারাপ দেখলে সেটি সর্বসমক্ষে প্রকাশ করে দেওয়া। তা হলে ফাঁড়া না কী কেটে যাবে। স্বপ্নটি আর সত্যি হবে না। তা ভাবছি, এ ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতিটি অবলম্বন করেই দেখা যাক। আপনাদের খুলেই বলি স্বপ্ন বৃত্তান্তটা।

Advertisement

স্বপ্নের ভেতর দেখি কী জানেন, বেশ মজা করে মেরিন ড্রাইভে ঘুরে বেড়াচ্ছি। একদিকে ঝকঝকে রাস্তা। সাঁ সাঁ করে গাড়িগুলো চলে যাচ্ছে। আর একদিকে সমুদ্র। ঢেউ ভাঙছে একের পর এক। সন্ধে হব হব। ধীরে ধীরে জ্বলে উঠছে রাস্তার দু’পাশের আলোগুলো। রাস্তাটা অর্ধচন্দ্রাকারে বেঁকে গিয়েছে মালাবার হিলের দিকে। যেন সত্যিই কুইনস নেকলেস। এই গরমের সন্ধেয় আমি বেশ একখানা কাঠি আইসক্রিম ললিপপের মতো চুষতে চুষতে সাগরের দিকের ফুটপাথে উঁচু বাঁধানো জায়গাটায় বসে আছি। আমার মতো বসে রয়েছে অনেকে। শোভা দেখছে সমুদ্রের।

এই পর্যন্ত ঠিকই ছিল বুঝলেন। তারপরই ঘটল ঘটনাটা। বেশ নিবিষ্ট মনে আইসক্রিমের কাঠিটা চুষতে চুষতে অনতিদূরে বসা কপোত-কপোতীর প্রেমালাপে মনোনিবেশ করতে না চাইলেও মনটা বার বার বেগড়বাই করছিল। তাই স্থান পরিবর্তন করার জন্যে উঠতে যাব.... ও মা এ কী গেরো রে বাবা। কিছুতেই আর উঠতে পারছি না। পাও নাড়াতে পারছি না। কে যেন আমাকে স্টিকিং প্লাস্টার দিয়ে এঁটে দিয়েছে শক্ত করে। আর গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো দেখি সাগরের জল যেন একটু একটু করে বাড়তে শুরু করেছে। কোই হ্যায়, মুঝে বাঁচাও—চিৎকার জুড়লুম। একবার নয়, পরিত্রাহি চিৎকার বার বার। কিন্তু কেউ ছুটে এল না। আসবে কী করে, সকলেরই আমার মতো দশা। পা আটকে গেছে মাটির সঙ্গে। কেউ ছুটতে পারছে না। আমরা অসহায়ের মতো দেখছি, সাগরের জল বাড়ছে একটু একটু করে। কত দীর্ঘ সময় যে ও ভাবে বসে রইলাম। তিল তিল করে প্রহর গুনছি। কীসের, না মৃত্যুর।

Advertisement

সমুদ্রের জল বাড়তে বাড়তে প্রথমে স্পর্শ করল পায়ের পাতা। শিউরে উঠলাম আমি। এই সেই জল যার ঠান্ডা পরশ কত সময় আমাকে আনন্দ দিয়েছে। আজও তা শীতল কিন্তু তাতে মরণের হিম স্পর্শ। ধীরে ধীরে জল উঠে এল কোমরে, তার পর বুকের কাছে, তার পর গলা, চিবুক, ওষ্ঠ। আর এক সেন্টিমিটার তার পরই ডুবে যাবে আমার নাক। আর এ জন্মের মতো শেষ হয়ে যাবে আমার জীবনের স্পন্দন। চারিদিকের অবিরাম হাহাকার মৃত্যু চিৎকারের মধ্যে আমি নিশ্চেষ্ট হয়ে বসে থাকি। কোনও উপায় নেই— না নিজেকে বাঁচাবার বা অন্যদের। জল নাসিকা স্পর্শ করার ঠিক পরমুহূর্তে আকাশ বাতাস বিদীর্ণ করে এক ভয়ঙ্কর অট্টহাস্যর হা হা ধ্বনি কানে আসে। ‘এই হল তোদের চরম সাজা। এত দিন তোরা নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়ুল মেরেছিস। ধ্বংস করেছিস গাছপালা। যথেচ্ছ বাড়িঘর, কলকারখানা বানিয়ে আবর্জনায়, ধোঁয়ায় বিষিয়ে তুলেছিস এই পৃথিবীর মাটি ও বাতাস। কী ভেবেছিস? প্রকৃতি এর শোধ নেবে না? নে, এই হল তার প্রতিশোধ, প্রকৃতির প্রতিশোধ।’

কী ভয়ঙ্কর। জলের তলায় এতটুকু বাতাসের জন্য প্রাণটা যখন হাঁকপাক করছে। মনে হচ্ছে বাতাসের অভাবে এ বার বোধহয় হৃৎপিণ্ডটা ফেটে যাবে, ঠিক তক্ষুনি ঘুমটা ভেঙে গেল। বিশ্বাস করুন, একদম সত্যি মনে হয়েছিল স্বপ্নটা। তাই ঘুম ভাঙার পরও শিরদাঁড়া দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল ভয়ের হিমশীতল স্রোত।

কেন এমন একটা স্বপ্ন দেখলাম, তার পিছনে নিশ্চয়ই কোনও কারণ আছে। না না, আমি স্বপ্ন বিশেষজ্ঞ নই তবে এই বিশেষ স্বপ্নটার পিছনে যে কারণ তা অনেক ভেবে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি এবং এর একটা ব্যাখ্যাও হাজির করব আপনাদের কাছে। উঁহু, এই ব্যাখ্যায় কোনও কল্পবিজ্ঞানের কাহিনি নেই কিংবা অলৌকিকতা। এর পেছনে রয়েছে বিজ্ঞানীদের সুচিন্তিত গবেষণাপ্রসূত এক ভবিষ্যদ্বাণী।

তার আগে বলি, দিন তিনেক আগেই ছিল জুন মাসের পাঁচ তারিখ। দিনটা কিন্তু একটি বিশেষ দিন। মনে পড়ছে কি? হ্যাঁ, সদ্য বিগত হয়েছে দিনটা। নিশ্চয়ই মনে আছে জুন মাসের পাঁচ তারিখটা ছিল বিশ্ব পরিবেশ দিবস। একটু বলে নিই এর পূর্ব ইতিহাস প্রসঙ্গে। প্রতি বছর এই দিনটি সারা বিশ্বে পরিবেশ দিবস হিসেবে পালন করা হয় প্রকৃতি এবং আমাদের পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য। ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে এই পরিবেশ দিবস পালন করা হয়। ১৯৭২ সালে ইউনাইটেড নেশনস জেনারেল অ্যাসেম্বলি কর্তৃক এর সূচনা হয় এবং ১৯৭৩ সাল থেকে প্রথম বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হতে থাকে। সারা বিশ্বে এক একটি শহরে এই দিনটি পালন করা হয় এবং প্রতি বছর এই দিনটির জন্য এক একটা থিম গ্রহণ করা হয়। যেমন ২০১১ সালে নিউ দিল্লিতে পালন করা হয়েছিল বিশ্ব পরিবেশ দিবস। থিম ছিল ‘ফরেস্ট: নেচার অ্যাট ইয়োর সার্ভিস’। ২০১২ সালে থিম ছিল ‘গ্রীন ইকনমি: ডাস ইট ইনক্লুড ইউ’? জনসাধারণের জীবনযাপন ও কার্যকলাপের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দেওয়া হয়েছিল সবুজ অর্থনীতিকে। আয়োজক দেশ ছিল ব্রাজিল। ২০১৩ সালের থিম ‘থিঙ্ক, ইট, সেভ’। খাদ্য অপচয়ের বিরুদ্ধে স্লোগান। আয়োজক দেশ ছিল মঙ্গোলিয়া।

এ বার বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মূল লক্ষ্য Small island developing states (SIDS)। এতে জোর দেওয়া হবে আবহাওয়া পরিবর্তন, আবর্জনা পরিষ্কার, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ওপর। এ বারের স্লোগান ‘Raise your choice, not the sea level’. যে সব দ্বীপপুঞ্জ চারিদিকে সমুদ্রের জল ঘেরা, সেই সব দ্বীপ আবহাওয়া পরিবর্তন ও সাগরের জল বৃদ্ধি এই দুইয়েরই শিকার। একে তো এই সব ছোট ছোট দ্বীপগুলি মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা এবং এ সব জায়গায় প্রাকৃতিক সম্পদও সীমিত। দ্বীপগুলির উপকূলে জীবিকার সন্ধানে বেড়েই চলে জনসংখ্যার চাপ। এর ওপর রয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন—সাইক্লোন, হারিকেন, সুনামি, অগ্ন্যুৎপাত। এই সব দ্বীপে সমুদ্রের জল বৃদ্ধি বা আবহাওয়ার পরিবর্তনের মোকাবিলা করার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নেই কোনও আধুনিক ব্যবস্থা। রাষ্ট্রপুঞ্জের ডিপার্টমেন্ট অফ ইকনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাফেয়ার বাহান্নটি স্মল আইল্যান্ড ডেভেলপিং স্টেটস বা সিডস (SIDS)-এর একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাটি ভৌগোলিক অবস্থানের দিক দিয়ে তিন ভাগে বিভক্ত। ক্যারিবিয়ান কমিউনিটি, প্যাসিফিক আইল্যান্ড ফোরাম এবং ইন্ডিয়ান ওশান কমিশন। ক্যারিবিয়ানের মধ্যে রয়েছে অ্যাঙ্গুইলা, বাহামাস, কিউবা, ডোমিনিকা, গিয়ানা, বার্বাডোস, হাইতি, জামাইকা, পুর্য়েতো রিকো, সুরিনাম, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো প্রভৃতি। প্যাসিফিক বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে পড়ছে কুক আইল্যান্ড, ফিডি, মার্শাল আইল্যান্ড, পালাউ, পাপুয়া, নিউ গিনি, সলমন আইল্যান্ড, টোঙ্গা ইত্যাদি। আফ্রিকা, ভারত মহাসাগর, ভূমধ্যসাগর ও দক্ষিণ চিন সাগর অঞ্চলে অবস্থিত বাহারাইন, কোমোরাস, মালদিভস, মরিশাস, সেশলস, সিঙ্গাপুর প্রভৃতি।

এই সব দ্বীপপুঞ্জে রয়েছে অনেক প্রতিকূলতা। বার্বাডোস বা অন্য অনেক দ্বীপকে অনেক ক্ষেত্রে খাবার, জ্বালানি, গৃহ বা অন্য কোনও নির্মাণের কাঁচামাল পর্যন্ত আমদানি করতে হয়। মালদিভস এবং পাপুয়া নিউ গিনিতে পঞ্চাশ থেকে আশি ভাগ স্থলভাগ সমুদ্রের মিন (mean) জলতলের থেকেও নিচু। সেশলসে প্রায় আশি ভাগ নির্মাণ ও জনসংখ্যা উপকূলের ধারে অবস্থিত। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নব্বইয়ের দশকে প্রায়ই সাইক্লোনের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। পালাউতে এল নিনোর প্রভাবে দেখা দিয়েছে খরা।

সমুদ্রোপকূলবর্তী শহরগুলোও কিন্তু সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি থেকে রেহাই পাবে না যদি পরিবেশ দূষণের ফলে ক্রমাগত আবহাওয়ায় কার্বনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর ফলে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে উপকূল তীরবর্তী বাড়িঘর, বিপর্যস্ত হতে পারে জনজীবন। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর মূল কারণ হল অতিরিক্ত মাত্রায় কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ, যার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে এবং বরফ গলে চলে আসছে সাগরে। ফলে বেড়ে যাচ্ছে সমুদ্রের জলতল। এর পাশাপাশি গাছপালা কেটে করা হচ্ছে নগরায়ণ। অতএব বাঁচার রাস্তা আমরা নিজেরাই আটকে দিচ্ছি।

ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনার তথ্য অনুসারে বিজনেস ইনসাইডার দেখাচ্ছে ২০৭০ সালে যদি মুম্বই তীরবর্তী সমুদ্রতল ০.৫ মিটার বাড়ে তা হলে ১ কোটি মানুষ মানুষ এবং ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলার সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেবল মুম্বই নয়, উপকূলবর্তী প্রায় সব শহরেরই কম বেশি এমন দশা হবে। সাংহাই, ব্যাঙ্কক, মিয়ামি, হো চি মিন সিটি, নিউইয়র্ক, টোকিও, আলেক্সান্দ্রিয়া, আমস্টার্ডাম কেউই রেহাই পাবে না। রেহাই নেই কলকাতা ও ঢাকারও, কারণ গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলেও সমুদ্রের জলতল বাড়ছে।

গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর জন্য আবহাওয়া পরিবর্তিত হচ্ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং যথেচ্ছ জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এই শতকের শেষে মুম্বইয়েরও অনেক অংশ জলমগ্ন হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যেগুলো সমুদ্র তীরবর্তী নিচু জায়গা। ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ-এর রিপোর্টও বলছে এ কথা।

তা হলে দেখলেন তো আমার দেখা ওই ভয়ঙ্কর স্বপ্নটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়। স্বপ্নে মেরিন ড্রাইভ দেখেছি, হয়তো সেটি আমার একান্ত প্রিয় জায়গা বলে। প্রিয় কোনও কিছু নিয়েই তো মানুষের মনে আগে আশঙ্কার মেঘ তৈরি হয়।

তাই আসুন না, আমরা সবাই মিলে শপথ নিই পরিবেশকে আমরা নষ্ট হতে দেব না, কিছুতেই না। যদি নিজেদের পৃথিবীকে নিজেরা না রক্ষা করি, তা হলে পৃথিবীই বা আমাদের রক্ষা করবে কী করে?

জ্যৈষ্ঠ শেষ হতে চলল। আষাঢ়ের মেঘের দেখা মিলছে আকাশে। প্রস্তুত হই আমরা বৃষ্টির জন্যে। মুম্বইয়ের বৃষ্টি তো আর যে সে বৃষ্টি নয়, শুরু হলে আর থামতেই চায় না।

এ বার শেষ করার পালা। তার আগে জিগ্যেস করি আপনাদের, বলি এ বার প্রাণভরে হাপুস মানে আলফানসো খেয়েছেন তো? ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞায় এ বার হাপুস আর বিদেশে কদর পায়নি। যে হাপুস অন্যান্য বার ছুঁতে পারি না, সেই হাপুস বার কয়েক দিন কিনে ফেললুম, ভাবা যায়। একশো টাকা কিলো। এই প্রায় মাসখানেক আগে কলকাতায় গিয়ে এ বার গোলাপখাস ছাড়া পাকা আম একটাও কপালে জোটেনি (আত্মীয়স্বজনরা অবিশ্যি বলেছিলেন আর ক’দিন থাকো, জষ্টি না পড়লে কি আম পাকে) অথচ মুম্বই এসে দেখি আমের রমরমা। বাদামি, কেসর, ল্যাংড়া আর সবার ওপরে হাপুস। একটাই আফসোস যে এখানে হিমসাগর দেখতে পাই না। হিমসাগর খেতে হলে এই গরমেও কলকাতায় যেতেই হবে। আপনারা কী বলেন?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement