হোলিতে মেতেছেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
বারাণসী কার?
নরেন্দ্র মোদী না অরবিন্দ কেজরীবালের? না কি অন্য কোনও দলের। দু’দিন আগেই বারাণসী কেন্দ্রে মোদীর নাম চূড়ান্ত করেছে বিজেপি। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ মার্চ ওই কেন্দ্রে মোদীর বিরুদ্ধে কেজরীবালের নাম ঘোষণা করতে চলেছেন আম আদমি পার্টি (আপ) নেতৃত্ব। ফলে সব মিলিয়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে হঠাৎ করে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে প্রাচীন ওই জনপদটি।
আপ শিবির সূত্রের খবর, দলের পক্ষ থেকে মোদীকে হারাতে বিজেপি- বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে প্রার্থী না দেওয়ার জন্যও আবেদন জানাতে চলেছে কেজরীবালের দল।
সব মিলিয়ে এখন বড় মাপের লড়াই দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে বারাণসী। যদিও আপ নেতৃত্ব অবশ্য এখনও সরকারি ভাবে ওই কেন্দ্র থেকে কেজরীবালের নাম ঘোষণা করেননি। কেজরীবাল জানিয়েছেন, “আগামী ২৩ মার্চ বারাণসীতে একটি জনসভা করা হবে। সেখানেই গণভোটের মাধ্যমে ঠিক হবে আমি ওই কেন্দ্র থেকে মোদীর বিরুদ্ধে লড়ব কিনা। মানুষ যা রায় দেবেন তা আমি মাথা পেতে নেব।” দলীয় সূত্রে অবশ্য খবর, কেজরীবালের বারাণসী-যাত্রা প্রায় নিশ্চিত।
মোদীকে আক্রমণের প্রশ্নে পিছিয়ে নেই কেজরীবাল। বারাণসীর পাশাপাশি গুজরাতের একটি আসন থেকেও লড়ার কথা রয়েছে মোদীর। যা এখনও ঘোষণা হয়নি। মোদী বারাণসীতে হেরে যাওয়ার ভয়েই দু’টি আসনে লড়ছেন বলে কটাক্ষ করেছেন কেজরীবাল। তাঁর কথায়, “দেশ এক জন সাহসী প্রধানমন্ত্রী চাইছে। এমন কাউকে নয়, যিনি হেরে যাওয়ার ভয়ে দু’টি আসনে লড়ছেন।” পাশাপাশি ইয়েদুরাপ্পার মতো দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের টিকিট দেওয়া প্রশ্ন তুলেছেন আপ নেতা।
একই সঙ্গে, মোদীর লড়াইকে আরও কঠিন করে তুলতে অন্য রাজনৈতিক দলগুলিকেও একজোট হয়ে প্রার্থী দেওয়ার জন্যও বার্তা দিতে চাইছেন আপ নেতৃত্ব। যদিও শেষ পর্যন্ত মোদীর বিরুদ্ধে কেজরীবালকে সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস শিবির দাবি করেছে, মোদী ও কেজরীবাল দু’জনেই বহিরাগত। ফলে ওখানে স্থানীয় প্রার্থী দেওয়া হবে। অন্য দিকে সপা ও বিএসপিও এখন বারাণসী প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। আপ শিবির অন্য দলগুলির সমর্থন পাবে কি না তা বলবে সময়। কিন্তু প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি অনাস্থা দেখিয়ে রাজনীতির আঙিনায় পা রেখেছিলেন কেজরীবাল। এখন তিনিই যদি সেই রাজনৈতিক দলের সমর্থন নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে জোট গড়েন সে ক্ষেত্রে বিজেপির তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে। ইতিমধ্যেই বিজেপি সাংসদ শাহনওয়াজ হুসেন বলছেন, “কেজরীবাল বুঝতে পারছেন তাঁর জনপ্রিয়তা পড়তির দিকে। তাই এখন মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে নিজের হারানো জনপ্রিয়তা ফিরে পেতে চাইছেন।”
অন্য দিকে কেজরীবাল নিজে মনে করেন, মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামলে একাধিক বার্তা দেওয়া সম্ভব হবে। প্রথমত আপ নেতাদের মতে, ভোট যত এগিয়ে আসছে তত প্রাসঙ্গিকতা হারাচ্ছে কংগ্রেস। পরিবর্তে বিজেপির বিকল্প হিসেবে উঠে আসছে আপ। বারাণসীতে লড়লে দেশবাসীকে সেই বার্তা দেওয়া যাবে। দ্বিতীয়ত, বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়লে দলীয় কর্মীদের উজ্জীবিত করা যাবে বলে মনে করেন কেজরীবাল। যেমন তিনি করেছিলেন দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের বিরুদ্ধে লড়ে। শাহনওয়াজ হুসেনের কটাক্ষ,“শীলা আর মোদী যে এক নন তা ফল বেরোলেই বুঝবেন কেজরীবাল।”