ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী হামলা

বাঙালি-সহ নিহত তিন কোবরা জওয়ান

রাত পোহালেই ছত্তীসগঢ়ে লোকসভা ভোটের প্রথম দফার ভোট। তার আগে আজ দুই জেলায় মাওবাদী হানায় আতঙ্কের পরিবেশ রাজ্যে। নিহত হয়েছেন সিআরপিএফ-এর কোবরা বাহিনীর তিন কম্যান্ডো। এর মধ্যে রয়েছেন মুর্শিদাবাদের কান্দির বাসিন্দা চন্দ্রকান্ত ঘোষ নামে এক বাঙালিও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৩৮
Share:

রায়পুরে আনা হচ্ছে আহত জওয়ানকে। —নিজস্ব চিত্র।

রাত পোহালেই ছত্তীসগঢ়ে লোকসভা ভোটের প্রথম দফার ভোট। তার আগে আজ দুই জেলায় মাওবাদী হানায় আতঙ্কের পরিবেশ রাজ্যে। নিহত হয়েছেন সিআরপিএফ-এর কোবরা বাহিনীর তিন কম্যান্ডো। এর মধ্যে রয়েছেন মুর্শিদাবাদের কান্দির বাসিন্দা চন্দ্রকান্ত ঘোষ নামে এক বাঙালিও।

Advertisement

ছত্তীসগঢ় ছাড়াও ১০টি রাজ্য ও ৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে কাল তৃতীয় দফার ভোট। ৯২টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন প্রায় ১১ কোটি লোক। এর মধ্যে রয়েছে রাজধানী দিল্লির নাম। আবার গোষ্ঠী সংঘর্ষে বিধ্বস্ত মুজফ্ফরনগরের মতো আসনও। তার আগে আজ ছত্তীসগঢ়ের জঙ্গি হানা কপালে ভাঁজ ফেলেছে নির্বাচন কমিশনের।

ছত্তীসগঢ়ে যদিও মাওবাদী অধ্যুষিত বস্তার একাই ভোট ময়দানে নামছে কাল। এই বস্তার লোকসভা কেন্দ্রের বুরকাপাল এলাকায় ভোটকর্মীদের পৌঁছে দিতে গিয়েছিল কোবরা বাহিনীর একটি দল। ফেরার পথে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ জঙ্গিদের মুখে পড়ে তারা। সুকমার অতিরিক্ত এসপি নীরজ চন্দ্রকর বলেন, “সকাল সকাল পোলিং অফিসারদের বুথে পৌঁছে দিয়ে ফিরছিল দলটি। সে সময় চিন্তাগুফা থানার কাছে ঘটনাটি ঘটে।” এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানালেন, পায়ে হেঁটে ফিরছিলেন জওয়ানরা। জঙ্গিরা পিছন দিক থেকে আক্রমণ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রায় ১০০ মাওবাদীর একটা বিশাল দল তিন দিকে থেকে ঘিরে ফেলে জওয়ানদের। আর তার পরই শুরু হয়ে যায় গুলিযুদ্ধ। মাওবাদীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তিন জওয়ানের দেহ। ডেপুটি কম্যান্ডার-সহ জখম হয়েছেন তিন জন। নয়াদিল্লি থেকে সিআরপিএফ-এর আইজি জুলফিকার হাসান বলেন, “গুলির লড়াইয়ের সময় মাওবাদীদেরও অন্তত চার জন মারা গিয়েছে বলে আমাদের আহত জওয়ানরা জানিয়েছেন। যদিও তাদের দেহ মেলেনি। গভীর জঙ্গলে পড়ে ছিল দেহগুলি। ধারণা করা হচ্ছে, মাওবাদীরা পরে সেগুলি তুলে নিয়ে যায়।”

Advertisement

বস্তারের ৮০ শতাংশ ভোট কেন্দ্রই মাওবাদী অধ্যুষিত স্পর্শকাতর এলাকায়। সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে প্রায় ২৫০০০ জওয়ান নামানো হয়েছে। নিরাপত্তার খাতিরে মোট ২৩৮টি বুথকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাতে বস্তারের বিভিন্ন অঞ্চলে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে মাওবাদীরা। তার ইঙ্গিত মিলেছে আজই। বুধবার সকালে আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে বিজাপুরে। জখম হন দুই সিআরপিএফ জওয়ান। নির্বাচনী প্রচারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সামলাতে সেখানে গিয়েছিলেন তাঁরা। বিজাপুরের এসপি প্রশান্ত অগ্রবাল বললেন, “মাটিতে প্রেসার বম্ব পুতে রাখা ছিল। পায়ের চাপ পড়তেই বিস্ফোরণ।” তবে কোনও হতাহতের খবর নেই। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, জখম দু’জনই এ মুহূর্তে বিপন্মুক্ত।

ভোটের মুখে পরিস্থিতি সামলাতে যৌথ অভিযানে নেমেছে পুলিশ এবং সিআরপিএফ। “সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছি। আর যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট মেটে, সে চেষ্টাও করছি আমরা”, বললেন দিল্লির এক শীর্ষস্থানীয় কর্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement