নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত চার অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখল দিল্লি হাইকোর্টও। দায়রা আদালতের মতো হাইকোর্টও স্পষ্ট জানিয়ে দিল, “বিরলের মধ্যে বিরলতম” এই অপরাধের সাজা ফাঁসি ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে একটি বাসের মধ্যে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করা হয় বছর তেইশের এক তরুণীকে। দু’সপ্তাহের মাথায় মৃত্যু হয় প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীটির। উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী। দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সারতে গঠন করা হয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল দায়রা আদালত।
লঘু শাস্তির আর্জি নিয়ে এর পর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত এবং মুকেশ। ঠিক ছ’মাসের মাথায় আজ দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি রেবা ক্ষেত্রপাল এবং প্রতিভা রানির বেঞ্চও জানিয়ে দিল, “দায়রা আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। খারিজ করা হয়েছে অপরাধীদের আর্জি।”
বিচারপতিরা বলেন, “ওদের অপরাধ পরিকল্পিত, জঘন্য এবং সমাজের গায়ে বরাবরের মতো ক্ষত রেখে গিয়েছে।” শুধু তা-ই নয়, বিচার ব্যবস্থার উপরও ছাপ ফেলেছে এই ঘটনা। হাইকোর্ট জানায়, ডিএনএ রিপোর্টে সব অপরাধ প্রমাণ হয়েছে। এবং ওই চার জনই যে অপরাধী, সে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে আদালত। তা ছাড়া আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে পাওয়া সব তথ্যই ওদের বিপক্ষে গিয়েছে।
গত বার দায়রা আদালত সাজা ঘোষণা করার পরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন আসামী পক্ষের আইনজীবী। এ দিন দিল্লি হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার পরও সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। বলেন, “কত দিন ধরে আদালতে পড়ে ছিল মামলাটি। হঠাৎই আজ সিদ্ধান্ত নিল হাইকোর্ট।” এমনকী নির্ভয়া-কাণ্ডকে ‘রাজনৈতিক হত্যা’-ও বলেন তিনি। জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টে যাবেন।
আদালতে ছিলেন নির্ভয়ার বাবা-মা। রায় ঘোষণার পর হাতে হাত ধরে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় দু’জনকে। বললেন, “আমরা খুশি। বিচারব্যবস্থার উপর আমাদের পুরো ভরসা আছে। ফাঁসি যে বহাল থাকবে, তা জানাই ছিল। কিন্তু যে দিন ফাঁসি হবে, স্বস্তি মিলবে সে দিন।”