সোহরাবুদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় ক্লিনচিট পাওয়ার পরেই দিল্লি জয়ের ঘুঁটি সাজাতে শুরু করলেন অমিত শাহ।
বছর ঘুরতেই রাজধানীতে বিধানসভা নির্বাচন। নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে দিল্লি জয়ের কৌশলটি আজই চূড়ান্ত করে ফেললেন বিজেপি সভাপতি। দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অমিত শাহ জানান, দিল্লিতে একার জোরে সরকার গড়ার জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকার ইতিমধ্যেই ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রেখেছে। এ বারে সেটিকে পুঁজি করে যে কোনও মূল্যে বিরোধীদের ধরাশায়ী করে বিজেপিকে দিল্লির মসনদ দখল করতে হবে। তাঁর মতে, যে অঙ্কে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডে নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে সরকার গড়েছে বিজেপি, সেই সমীকরণ মেনেই দিল্লিতে প্রচার করা হবে। আর প্রচারের হাতিয়ার হবে মোদী সরকারের নেওয়া এক গুচ্ছ সিদ্ধান্ত।
কী সেই সিদ্ধান্ত?
বিজেপি সূত্রের মতে, দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল-সহ বাকি দলগুলিকে ধরাশায়ী করার জন্য রাজধানীতে সবচেয়ে বড় জনগোষ্ঠী শিখদের আবেগের বিষয়টি ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। শিখ-বিরোধী দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। দাঙ্গার তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৯০০-র বেশি কলোনিকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রায় ষাট লক্ষ মানুষের স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তা ছাড়া ছট পুজোর দিন ছুটি ঘোষণা করে বিহার থেকে দিল্লিতে নানা কাজে আসা মানুষদের মন জয়ের চেষ্টা হয়েছে। দিল্লির যে মধ্যবিত্ত শ্রেণি গত ভোটে কেজরীবালের দিকে ঝুঁকে ছিলেন, তাঁদের জন্য সংস্কারের এক গুচ্ছ পদক্ষেপ অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমেই নিয়ে এসেছে মোদী সরকার। লোকসভা নির্বাচনে মোদীর উপরে ভরসা রেখেই দিল্লির সাতটি আসনে বিজেপিকে জিতিয়েছিলেন ভোটাররা। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে মোদী দিল্লির ভোটের আগেই সংস্কারের যে সিদ্ধান্তগুলি নিচ্ছেন, তার প্রভাব মধ্যবিত্ত সমাজে পড়বে বলেই মনে করছে বিজেপি।
দলের এক শীর্ষ নেতা জানান, এই সামগ্রিক কৌশলের পরে বিরোধীদের হাতে আর কোনও অস্ত্র থাকবে না। এমনকী স্বচ্ছ ভারত অভিযানের মাধ্যমে অরবিন্দ কেজরীবালের নির্বাচনী প্রতীক ঝাড়ুটিও আম আদমি পার্টির কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সংসদের অধিবেশন চলার সময়ে মোদীর নির্দেশে দলের ২০০-র বেশি সাংসদ দিল্লির নানা জায়গায় সভা করেছেন। প্রতিশ্রুতি পালনের ভয়ে কেজরীবাল ৪৯ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। মোদী এসে সেগুলি সব পূরণ করে দিয়েছেন। এ বারে সেগুলিকেই হাতিয়ার করে প্রচার করতে হবে বিজেপি নেতাদের।