তারকা-বিমানের ঢেউ সামলাতে হিমশিম

সামনে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে। তাঁর পিছনেই রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন। তাঁর পিছনে অনিল অম্বানী। একটু দূরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আমদাবাদের আকাশে বিশ্বের তাবড় ভিআইপিদের নিয়ে বিমানের ভিড়। বিমানগুলো একের পর এক নেমে আসছে রানওয়েতে। সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো, থামতেই চায় না। কোনওটা বড় বোয়িং, কোনওটা আবার ছোট বিজনেস জেট। একসঙ্গে এতগুলো বিমানের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে অস্থির আমদাবাদের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-র অফিসারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৪
Share:

সামনে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে। তাঁর পিছনেই রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন। তাঁর পিছনে অনিল অম্বানী। একটু দূরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আমদাবাদের আকাশে বিশ্বের তাবড় ভিআইপিদের নিয়ে বিমানের ভিড়।

Advertisement

বিমানগুলো একের পর এক নেমে আসছে রানওয়েতে। সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো, থামতেই চায় না। কোনওটা বড় বোয়িং, কোনওটা আবার ছোট বিজনেস জেট। একসঙ্গে এতগুলো বিমানের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে অস্থির আমদাবাদের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-র অফিসারেরা।

সাধারণ দিনে সকাল সাতটা থেকে এগারোটার মধ্যে বড়জোর ২০-২৫টি বিমান ওঠানামা করে আমদাবাদ বিমানবন্দরে। কিন্তু, রবিবার সকালে ওইটুকু সময়ের মধ্যেই বিমান ওঠানামার সংখ্যাটি বেড়ে প্রায় ৬৫ হয়ে যায়। তার মধ্যে ছিল বহু ভিআইপি বিমান। তা ছাড়া, এয়ার ইন্ডিয়া, জেট এবং ইন্ডিগোর অতিরিক্ত উড়ানও ছিল। গুজরাতের শিল্প সম্মেলনে যোগ দিতে সারা বিশ্ব থেকে বহু মানুষ আসছেন দেখে এই তিনটি বিমানসংস্থা দিল্লি ও মুম্বই থেকে আমদাবাদে বিশেষ উড়ান চালানোর কথা ঘোষণা করেছিল। এক অফিসারের কথায়, “একটা বিমানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তো অন্য বিমানে আমেরিকার বিদেশসচিব। অতিরিক্ত উড়ানের ভিড়ে ভিআইপির বিমানের জন্য চাপ আরও বেড়ে গিয়েছে।”

Advertisement

ভাইব্র্যান্ট গুজরাত-এর দিনগুলোতে এমন যে হতে চলেছে, তা অবশ্য আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছিলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বেশ কিছু দিন আগেই বার্তা এসেছিল, সম্মেলন শুরুর আগের রাত থেকেই আসতে শুরু করবে বেশ অনেকগুলো বিশেষ বিমান। শনিবার মাঝরাতে আমদাবাদের মাটি ছোঁয় মার্কিন বিদেশ সচিব জন কেরির উড়ান। আমদাবাদ বিমানবন্দরের অধিকর্তা আর কে সিংহ জানান, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ব্যক্তিগত বিমান নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির আসার খবর আসছিল। তিনি বলেন, “যে অফিসারেরা নির্দিষ্ট সংখ্যক বিমানের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করেন, এত উড়ান সামলাতে তাঁদের উপরে খুব চাপ পড়ে যেত। তাই, এই তিন দিনের জন্য সমস্ত অফিসারের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।” বিমানবন্দরের ভিতর দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন গুজরাত সরকারের প্রোটোকল অফিসারেরা। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতার জন্য রাখা হয়েছে ওই অফিসারদের।

বিমানবন্দরের অধিকর্তা জানান, আমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাধারণ দিনে ১৪০টি বিমান ওঠানামা করে। ৩০টা পার্কিং বে রয়েছে এই বিমানবন্দরে। সম্মেলনে আসা সমস্ত ভিআইপির ব্যক্তিগত বিমান সারা দিন পার্কিং বে-তে দাঁড়িয়ে থাকলে সাধারণ যাত্রিবাহী বিমানের দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া যাবে না। ভারত ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব, মার্কিন বিদেশসচিব, অনিল ও মুকেশ অম্বানী, কুমারমঙ্গলম বিড়লা, সাইরাস মিস্ত্রি, শশী রুইয়ার মতো হাতে গোনা কয়েক জনের বিমানের ঠাঁই হলেও বাকি সব ব্যক্তিগত বিমান আমদাবাদ থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বডোদরা, ইনদওর ও উদয়পুর বিমানবন্দরে। গুজরাতের বিমান পরিবহণ দফতরের অফিসার যশপাল রাঠৌর গাঁধীনগর থেকে বলেন, “কোন কোন ভিআইপি ব্যক্তিগত বিমান নিয়ে আসছেন, তার তালিকা আগে থেকেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়। রবিবার আমদাবাদ ছাড়াও বেশ কিছু ব্যক্তিগত বিমান বডোদরা বিমানবন্দরেও নামানো হয়।” রবিবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে সন্ধ্যায় ব্যক্তিগত বিমান নিয়ে অনেক ভিআইপি যে যাঁর গন্তব্যে ফিরে যান। কিন্তু সোমবার সকালে আবার ১২টি নতুন বিজনেস জেট নেমেছে আমদাবাদে। অফিসারদের ধারণা, মঙ্গলবার পর্যন্ত এই সব ব্যক্তিগত বিমানের ওঠানামা চলতেই থাকবে।

বলে রাখা ভাল, বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনের জন্য একটিও ব্যক্তিগত বিমান নামেনি কলকাতায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement