ত্রিপুরায় দশ হাজার শিক্ষক নিয়োগ অবৈধ

ত্রিপুরায় সরকারি স্কুলের ১০ হাজারের বেশি শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করল ত্রিপুরা হাইকোর্ট। ২০১০-’১৩ সালের মধ্যে শুধু মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার ১০৩২৩ জনকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে নিয়োগ করে। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কয়েক জন প্রার্থী হাইকোর্টে যান। রায় দিতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি দীপক গুপ্ত ও বিচারপতি স্বপন দেবনাথের ডিভিশন বেঞ্চ সামগ্রিক নিয়োগ পদ্ধতিকেই অবৈধ ঘোষণা করে নতুন ও স্বচ্ছ পদ্ধতি তৈরি করে মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

আশিস বসু

আগরতলা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৪ ০৩:০১
Share:

ত্রিপুরায় সরকারি স্কুলের ১০ হাজারের বেশি শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করল ত্রিপুরা হাইকোর্ট।

Advertisement

২০১০-’১৩ সালের মধ্যে শুধু মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকার ১০৩২৩ জনকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে নিয়োগ করে। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কয়েক জন প্রার্থী হাইকোর্টে যান। রায় দিতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি দীপক গুপ্ত ও বিচারপতি স্বপন দেবনাথের ডিভিশন বেঞ্চ সামগ্রিক নিয়োগ পদ্ধতিকেই অবৈধ ঘোষণা করে নতুন ও স্বচ্ছ পদ্ধতি তৈরি করে মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে। নিয়োগ করতে হবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ভিত্তিতে।

মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, “আজ বিকেলেই ত্রিপুরায় এসে পৌঁছেছি। রায়ের সার্টিফায়েড কপির অপেক্ষায় রয়েছি। তার আগে মন্তব্য করা উচিত হবে না।” শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী বলেন, “রায় বিশ্লেষণ করেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” তবে স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে, সরকার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা ভাবছে।

Advertisement

আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী অরুণচন্দ্র ভৌমিক, অরিজিৎ ভৌমিক, পুরুষোত্তম রায়বর্মনরা জানান, ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় শিক্ষা অধিকার আইন চালু হওয়ার পরেও বামফ্রন্ট সরকার যে নীতির ভিত্তিতে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে নিয়োগ করেছিল, তা সংবিধান-বিরোধী বলে আদালত জানিয়েছে। রায় অনুসারে ওই সব চাকরিই বাতিল হয়ে যাবে। এত দিন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মৌখিক পরীক্ষার উপরই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হতো। তাতেও দাঁড়ি টেনে দিয়েছে আদালত। প্রয়োজনে সার্ভিস কমিশন বা স্বশাসিত সংস্থা এই নিয়োগ-নীতি রূপায়ণ করবে বলে আদালত জানিয়েছে। অ্যাডভোকেট-জেনারেল বিজন দাস বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের শিক্ষক নিয়োগ নীতিকে বাতিল করে নতুন নিয়োগ-নীতি তৈরি করতে বলেছে আদালত। কী ভাবে তা করা হবে তার নির্দেশিকাও দিয়েছে।’’ তিনি জানান, এই দশ হাজার শিক্ষকের নিয়োগ ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। তার পর তা আর বৈধ থাকবে না।

আদালতের আজকের রায়ে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির স্বভাবতই উল্লসিত। তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। রাজ্যে শিক্ষা দফতরের নিয়োগ-নীতি আদতে শাসক দলের দুর্নীতিকে এত দিন প্রশ্রয় দিয়েছে। আজ আদালতে সেটাই প্রমাণিত হল।” প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক সিন্হার মতে, ‘‘শিক্ষা ক্ষেত্রে বামফ্রন্ট সরকারে নিয়োগ নীতি যে অসাংবিধানিক, আদালতের রায়ে তা প্রমাণিত হল।” অবশ্য সিপিএমের মুখপাত্র গৌতম দাসের ব্যাখ্যা, ‘‘১৯৭২ থেকে কার্যকর স্কুলশিক্ষা দফতরের নিয়ম মেনেই বামফ্রন্ট সরকার এই নিয়োগ করেছে।” উল্লেখ্য, রাজ্যে স্কুল-শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এখনও ‘টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট’ (টেট) চালু হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement