তিন গুণ হতে পদ্ম-তোড়ায় সব রং চান মোদী

বিরোধীদের পরিসরটি আরও ছোট করতে গোটা দেশে দশ কোটি সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামল নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ জুটি। প্রধানমন্ত্রী চাইছেন, এই অভিযানে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে গিয়ে বিজেপি সব ধর্ম ও বর্গকে সামিল করুক। দিল্লিতে অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতরে আজ দলের সদস্য নবীকরণ অনুষ্ঠানে প্রথম সদস্য হলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি বলেন, “এ দেশের বিবিধতায় যেন নজরে আসে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১৬
Share:

বিরোধীদের পরিসরটি আরও ছোট করতে গোটা দেশে দশ কোটি সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামল নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ জুটি। প্রধানমন্ত্রী চাইছেন, এই অভিযানে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে গিয়ে বিজেপি সব ধর্ম ও বর্গকে সামিল করুক।

Advertisement

দিল্লিতে অশোক রোডে বিজেপির সদর দফতরে আজ দলের সদস্য নবীকরণ অনুষ্ঠানে প্রথম সদস্য হলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি বলেন, “এ দেশের বিবিধতায় যেন নজরে আসে বিজেপি। সমাজের সব বর্গের মানুষ যেন বলতে পারেন, তাঁদের প্রতিনিধি রয়েছে বিজেপির ফুলের তোড়ায়। তার জন্য দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে যেতে হবে দলকে। বিজেপি যেন সর্বস্পর্শী, সমাজের সব অংশের প্রতিনিধি হতে পারে।” এখন বিজেপির সাড়ে তিন কোটির মতো সদস্য রয়েছে। অমিত শাহ সেটি বাড়িয়ে আরও তিন গুণ করতে চাইছেন। আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে এই কাজটি সম্পন্ন হবে।

বিজেপি সূত্রের মতে, একের পর এক ভোটে জয়ের পর নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে নরেন্দ্র মোদী এ বারে সংখ্যালঘু থেকে দলিত- সমাজের সব অংশকেই বিজেপিতে সামিল করতে চাইছেন। তার মধ্যেই জোর দেওয়া হচ্ছে যুবক ও সমাজের শিক্ষিত বর্গকে। যাঁরা রাজনীতির ব্যাপারে উন্নাসিক। যে কারণে মোদী এই বিষয়ে বিশেষ জোর দিয়ে বলেন, “অনেকে রাজনীতিকে খারাপ বলে মনে করেন। তা যদি হত, মহাত্মা গাঁধী এখানে পা রাখতেন না। সমাজের এই অংশকে দূরে রাখলে গণতন্ত্রে খামতি থেকে যাবে।”

Advertisement

যুবকদের কাছে টানার জন্য বিশ্বের অন্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কী পদক্ষেপ করা হয়, তা হাতেকলমে দেখার জন্য দলের নেতাদের বিদেশ ভ্রমণের কথাও বলেন মোদী। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে যুবকরা কী ভাবে রাজনীতিতে পা রাখেন, তা শিখে এ দেশেও তার সফল রূপায়ণ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। দলের নেতাদের কাছে তাঁর দাওয়াই, নীচের স্তরে যত প্রসার ঘটবে দলের, ততই নিচু তলা থেকে উপরে ঠিকঠাক তথ্য পৌঁছবে। মানুষ কী চাইছেন, তা পৌঁছবে উপরমহল পর্যন্ত। তার ভিত্তিতেই উপর থেকে কার্যকরী হয় এমন কর্মসূচি গ্রহণ করা সম্ভব। সমাজের সব বর্গ সঙ্গে থাকলে তবেই এটি সম্ভব। তা হলেই সকলের জন্য উন্নয়নের সুফল নীচে পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া যাবে।

সদস্য সংগ্রহের অভিযানের মধ্য দিয়ে আসলে বিরোধী রাজনীতির পরিসর আরও ছোট করে দিতে ও নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়াতে চাইছে বিজেপি। সমাজের উচ্চবর্গ থেকে গরিব-গুর্বো, সব ধর্ম, জাত-পাতের উপরেই নজর রয়েছে দলের। অমিত শাহের নির্দেশ, সংখ্যালঘুরাও যেন দলে আসেন সমান হারে। বিজেপির সদস্য নেই এমন কোনও গ্রাম যেন না থাকে দেশে।

এর জন্য বিজেপির সদস্য হওয়ার নিয়মও অনেক সরল করা হয়েছে। আজ প্রথম সদস্য হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদী একটি টোল-ফ্রি নম্বর প্রকাশ্যে আনেন। সেখানে ফোন করে নিজের ঠিকানা, নাম জানালেই শুরু হয়ে যাবে সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া। এর পর বিজেপির কোনও কর্মী পৌঁছে যাবেন সেই ব্যক্তির কাছে। কথা ছিল, মোদী প্রথম সদস্য হওয়ার পর অমিত শাহ দ্বিতীয় সদস্য হবেন। কিন্তু মোদী সদস্য হওয়ার পরেই নম্বরটি উপস্থিত বিজেপি কর্মী-নেতাদের সামনে চলে আসে। একে একে সকলে সেই নম্বরে ফোন করতে থাকেন। ফলে মোদীর পর অমিত শাহ যখন ফোন করতে যান, সেই নম্বর তখন ব্যস্ত। মাত্র দু’মিনিটের মধ্যেই প্রায় হাজার জন ফোন করে বিজেপির সদস্য হয়ে যান।

এই প্রথম দিল্লিতে সদস্য হলেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী নিবাস ৭ নম্বর আরসিআর রোডের ঠিকানা দিয়ে। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ অবশ্য তাঁর গুজরাতের ঠিকানাতেই সদস্যপদ নবীকরণ করিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement