নির্বাচন কমিশনের চাপে নড়ে বসল উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। কমিশনের পত্রাঘাতের পর আজ রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের নেতা আজম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী প্রচারে লাগাতার সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর অভিযোগ উঠছিল বিজেপির অমিত শাহ ও সমাজবাদী নেতা আজম খানের বিরুদ্ধে। অমিত শাহের বিরুদ্ধে আগেই রাজ্য প্রশাসন অভিযোগ দায়ের করলেও এ যাবৎ ছাড় পেয়ে আসছিলেন মন্ত্রী আজম খান। গত কাল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিবের কাছে লেখা চিঠিতে আজমের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করার কারণ জানতে চায় কমিশন। তারা এও সন্দেহ প্রকাশ করে, শাসক দলের নেতা হওয়ায় আজমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কমিশনের ওই কড়া চিঠির পরেই আজ তড়িঘড়ি গাজিয়াবাদের মাসুরি থানায় আজমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ছড়ানো, জাতীয় সংহতি নষ্ট করার অভিযোগ করা হয়েছে।
গাজিয়াবাদ পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি জনসভায় আজম দাবি করেন, কার্গিল জয়ের মূল কারিগর হলেন সেনার মুসলিম জওয়ানেরা। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যের ১৮ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের দিকে তাকিয়েই এ ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন আজম। সপা নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব চাইছেন আজমের মাধ্যমে ওই রাজ্যে মুসলিম ভোটকে সংগঠিত করতে। কমিশন জানিয়েছে, উস্কানিমূলক ওই মন্তব্যে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট হয়েছে। ওই মন্তব্য জাতীয় সংহতিরও অন্তরায়। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “কমিশন ব্যবস্থা নেওয়ায় তাও অভিযোগ দায়ের হল। না হলে তাও হত না।”
বিজেপি নেতা অমিত শাহ ওই একই দোষে দোষী বলেই মনে করছে কমিশন। সম্প্রতি গোষ্ঠী সংঘর্ষে বিধ্বস্ত মুজফ্ফরনগরে গিয়ে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়কে বদলা নেওয়ার আহ্বান জানান অমিত। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের দাবি, “ওই বদলা আসলে ভোটের বাক্সে নেওয়ার কথা বলেছেন অমিত শাহ।” কিন্তু স্বভাবতই সেই যুক্তি মানতে রাজি হয়নি কমিশন। তারা মনে করছে, আজমের মতো অমিতও ওই রাজ্যে উস্কানিমূলক বিবৃতি দিয়েছেন।
গত কালই নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই দুই বিতর্কিত নেতাকে কার্যত ঘরে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। সপা নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব জানিয়েছেন, “আমরা আজম খানের ওপর থেকে ওই নিষেধাজ্ঞা তোলার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন জানাব।” একই আর্জি জানাতে চান অমিত শাহ।