সিপিএমের সঙ্গে বিবাদের জেরে কেরলে বাম জোট ছেড়ে বেরিয়ে নতুন সঙ্কটে পড়ল আরএসপি। সিপিএমের বিরুদ্ধে শুধু প্রার্থী দেওয়াই নয়, কেরলে কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রস্তাবও মেনে নিয়েছেন আরএসপি-র রাজ্য নেতৃত্ত্ব। কেন্দ্রে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-কে তারা সমর্থন করবে, এই আশ্বাসের বিনিময়ে আরএসপি-কে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। আরএসপি-র রাজ্য নেতৃত্বও সোমবার রাতে ওই শর্ত মেনে নেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন। যার জেরে পশ্চিমবঙ্গ এবং জাতীয় স্তরেও বামফ্রন্টে আরএসপি-র অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের রাজ্য কমিটিতে সাসপেন্ড করার কথা ভাবছেন আরএসপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
আরএসপি-র সাধারণ সম্পাদক টি জে চন্দ্রচূড়ন কেরলেরই নেতা এবং গোটা ঘটনাপ্রবাহের সময়ে তিনি সেখানেই উপস্থিত। কিন্তু দলের রাজ্য নেতৃত্ব বিদ্রোহ ঘোষণা করে এলডিএফ থেকে বেরিয়ে এসে সরাসরি কংগ্রেসের হাত ধরতে রাজি হবেন, এতটা চন্দ্রচূড়নেরও ধারণা ছিল না। তিনি এ দিন দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছেন, কেরলের আরএসপি নেতৃত্ব নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তিনি সেখানে একেবারে কোণঠাসা। পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে দলের নির্দেশে এ দিনই দিল্লি থেকে তিরুঅনন্তপুরম পৌঁছেছেন আরএসপি-র কেন্দ্রীয় নেতা অবনী রায়। কিন্তু এরই মধ্যে কেরলের রাজ্য সম্পাদক এ আজিজ ঘোষণা করে দিয়েছেন, কংগ্রেসের প্রস্তাব মেনে তাঁরা ইউপিএ-কে সমর্থনে রাজি। পরিস্থিতি ঘোরালো দেখে জরুরি আলোচনা চালাচ্ছেন আরএসপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যাঁদের মধ্যে অনেকেই বাংলার নেতা।
কংগ্রেস মনেনীত প্রার্থীকে সমর্থন করবে না বলে গত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত ছিল আরএসপি। এখন তারাই কংগ্রেসের শিবিরে যেতে রাজি হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গেও বামফ্রন্টের সমীকরণে প্রভাব পড়ার সমূহ সম্ভাবনা। সেই আশঙ্কা আঁচ করেই আরএসপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য এ দিন রাতে বলেছেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে যাওয়ার কথা ভাবাই যায় না! রাজ্য নেতৃত্ব যদি ওঁদের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে রাজি না হন, তা হলে রাজ্য কমিটিকে সাসপেন্ড করার মতো বেদনাদায়ক পথে যেতে হতে পারে আমাদের।” দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আরও বক্তব্য, দিল্লিতে গত ১ মার্চ কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে কেরলের দুই নেতা আজিজ এবং এন কে প্রেমচন্দ্রন উপস্থিত থাকলেও এমন কোনও ভাবনার কথা তাঁরা এক বারও জানাননি। তার পরে হঠাৎ এক তরফা সিদ্ধান্ত তাঁরা নিলেন কেন, প্রশ্ন উঠেছে দলেই।
অবস্থা সামলাতে কেরল সিপিএম আরএসপি-র সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনায় রাজি হন। কিন্তু এ দিন বৈঠকে আরএসপি যায়ইনি। বরং, মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চান্ডি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ চেন্নিথালা এবং প্রদেশ সভাপতি ভি এম সুধীরনের সঙ্গে কথা বলে কংগ্রেস শিবিরে যাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।