শ্বশুরের হাতে যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হতো প্রায়শই। শেষ পর্যন্ত ২০০৮-এর সেপ্টেম্বরে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ওই পূত্রবধূ। মঙ্গলবার এই মামলার রায় ঘোষণার সময় বিচারক কামিনী লউয়ের পর্যবেক্ষণ, পরিবারের মধ্যে মেয়েদের যৌন হেনস্থা সমাজে ক্ষতর চেহারা নিচ্ছে। তাঁর ব্যাখ্যা, এটা এমনই এক অপরাধ যে পরিবারের বাকি সদস্যরাই সব সময় চেষ্টা করেন, এমন ঘটনা যেন পাঁচ-কান না হয়।
দিল্লির সুলতানপুরি এলাকায় ভরত সিংহ রাওয়াতের বাড়ি। তার ছেলের বিয়ে হয় ২০০৬ সালে। ছেলে কর্মসূত্রে বাইরে থাকলেও বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন রাওয়াতের পুত্রবধূ। সেই সুযোগে ছেলের বউকে নানা ভাবে উত্যক্ত করত রাওয়াত। ২০০৮ এর ৩ সেপ্টেম্বর বছর চব্বিশের ওই তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় বাপের বাড়ি থেকে। সঙ্গে পাওয়া যায় সুইসাইড নোট। সেখানে শ্বশুরের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের স্পষ্ট অভিযোগ জানিয়ে যান ওই পুত্রবধূ।
আদালতে শুনানি চলার সময় যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে রাওয়াত। এমনকী, অন্য এক যুবকের সঙ্গে পুত্রবধূর অবৈধ সম্পর্ক ছিল বলেও দাবি করে। আজ ৬৩ বছরের রাওয়াতকে দশ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে দিল্লির ওই আদালত।
এই মামলা প্রসঙ্গে বিচারক মন্তব্য করেন, যে সময় পুত্রবধূকে নিরাপত্তা দেওয়ার দরকার ছিল, সে সময় শ্বশুর নিজেই তাঁকে হেনস্থা করে। ওই তরুণী শুধু নিজেকেই শেষ করেননি, ভাবী সন্তানকেও পৃথিবীর আলো দেখাননি। প্রতি দিন যে যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে তাঁকে যেতে হতো, সে সময় তাঁর কাছে মৃত্যুও শ্রেয় ছিল বলেই আত্মহননের পথ শেষমেশ বেছে নেন তিনি। মেয়েরা যদি নিজেদের বাড়িতেই সুরক্ষিত না থাকে, তা হলে অন্য কোথায়ই বা তারা নিরাপদ বোধ করবে, এ দিন সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিচারক কামিনী লউ। ইভ-টিজিং সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় সমাজে মহিলাদের প্রাপ্য সম্মান না-দেওয়া নিয়ে মঙ্গলবার ক্ষোভ জানিয়েছেন দিল্লির দায়রা আদালতের বিচারক বিমলকুমার যাদবও।