পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর অভিযানে হার মেনে বুধবার পুলিশের হাতে ধরা দিলেন অসম পুলিশের মোষ্ট ওয়ান্টেড তালিকায় নাম থাকা ‘কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন’ (কেএলও) জঙ্গি সংগঠনের এক জঙ্গি নেতা-সহ মোট দু’জন। তাঁরা আত্মসমর্পণের সময়ে পুলিশের হাতে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র তুলে দিয়েছেন। কেএলও জঙ্গিরা বুধবার বিকেলে কোকরাঝাড় জেলার পুলিশ সুপারের অফিসে ওই দুই জঙ্গি আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসমর্পন করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ধরা দেওয়া এক জঙ্গির নাম ধনঞ্জয় বর্মন ওরফে দয়াল বর্মন ওরফে যতিন বর্মন ওরফে সনাতন বর্মন ওরফে মৃদুল। তাঁর বাড়ি কোকরাঝাড় জেলার গোসাইগাঁও থানার দক্ষিণ চৌতারা গ্রামে। তিনি সংগঠনের স্বঘোষিত কোকরাঝাড় এবং ধুবুরি জেলা কমান্ডার ছিলেন।
অপর জনের নাম, গোপাল বর্মন ওরফে জয়দেব বর্মন। তাঁর বাড়ি কোকরাঝাড় জেলার গোসাইগাঁও থানার দক্ষিণ চৌতারা গ্রামে । আত্মসমর্পনের সময় জঙ্গিরা জার্মানে তৈরি একটি অত্যাধুনিক এইচকে ৩৩ অ্যাসল্ট রাইফেল,দুটি অত্যাধুনিক গ্রেনেড, ২টি ম্যাগাজিন এবং বেশ কিছু তাজা গুলি পুলিশের হতে তুলে দেন।
পুলিশ জানায়, অসম পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় নাম ছিল ওই কেএলও জঙ্গি নেতার। তাঁকে জীবিত অবস্থায় কেউ ধরিয়ে দিতে পারলে ৫ লক্ষ টাকার পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। ওই কেএলও জঙ্গির ছবিও প্রকাশ করেছিল অসম পুলিশ। তারা জানায়, ধনেঞ্জয় বর্মন ২০১০ সালে কেএলওর খাতায় নাম লিখিয়ে নাগাল্যান্ড এবং মায়ানমারে সামরিক প্রশিক্ষন নেন। প্রায় দু’বছর সেখানে থাকার পর ২০১২ সালে কোকরাঝাড় এবং জেলার কমান্ডার করা হয় তাঁকে। অন্যদিকে, গোপাল বর্মন ওরফে জয়দেব বর্মন ২০১০ সালে কেএলওর খাতায় নাম লিখিয়ে মায়ানমারে সামরিক প্রশিক্ষন নেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুরজিত সিং পানেস্বর জানান, কোকরাঝাড় জেলায় বেশ কয়েকটি অপহরণ এবং খুনের ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন ওই দুই কেএলও জঙ্গি। অসম পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড নামের তালিকায় তাঁদের নাম রয়েছে। মাস ছয়েক আগে কোকরাঝাড় জেলার কেএলও জঙ্গিদের তত্পরতা বেড়ে যাওয়ায় জেলায় ঘাঁটি গেড়ে থাকা ৮ জন কট্টর কেএলও জঙ্গির নাম ঘোষণা করেছিল অসম পুলিশ। এঁদের মধ্যে সেনা পুলিশের সঙ্গে সর্ংঘষে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন ৪ জন। পুলিশ ও যৌথবাহিনীর অভিযানে হার মেনে ওই দুই কেএলও জঙ্গি বুধবার ধরা দেয় পুলিশের হাতে।