লালডুহোমা। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সহকারীর পদ থেকে নিজে মুখ্যমন্ত্রী হতে সময় লেগে গেল ৪৬ বছর! ১১ জন মন্ত্রীকে নিয়ে মিজ়োরামের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আজ শপথ নিলেন জ়েডপিএম দলের সভাপতি, প্রাক্তন আইপিএস লালডুহোমা। শুক্রবার রাজভবনে তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করালেন রাজ্যপাল হরি বাবু কাম্ভামপতি।
শপথগ্রহণে হাজির ছিলেন দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলা ও জ়োরামথাঙ্গা। উল্লেখ্য, লাল থানহাওলার সঙ্গে মতানৈক্যের জেরেই লালডুহোমা কংগ্রেস ছেড়েছিলেন। জ়োরামথাঙ্গার সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে ছেড়েছিলেন এমএনএফ। ১৯৭২-৭৭ পর্যন্ত লালডুহোমা ছিলেন রাজ্যের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী সি ছুয়াঙ্গার প্রধান সহকারী। পরে আইপিএস হন তিনি। ১৯৮২-৮৪ ইন্দিরা গান্ধীর সুরক্ষার দায়িত্ব ছিল তাঁর। রাজনৈতিক জ্ঞান দেখে ইন্দিরাই তাঁকে মিজ়োরাম কংগ্রেসের দায়িত্ব দিয়ে রাজ্যে পাঠান। হন সাংসদ। তার কিছু দিন পরেই ইন্দিরা নিহত হন। ইন্দিরা-পুত্র রাজীব গান্ধীর আমলে, লালডুহোমার উদ্যোগেই লন্ডনে মিজ়ো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
নতুন মন্ত্রিসভায় ১২ জনের মধ্যে একমাত্র মহিলা সদস্য লালরিনপুই। ৭ জন মন্ত্রী এই প্রথম বার বিধায়ক হলেন। সে দিক থেকে দেখলে, ৪০টির মধ্যে ২৭টি আসনে জিতে চমকে দেওয়া সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়লেও, শাসনকাজে অনভিজ্ঞ দল নিয়েই মাঠে নামতে হচ্ছে লালডুহোমাকে। ঘাড়ে রয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার শরণার্থীর ভার। সেই সঙ্গে রাজ্যের বেকারত্ব, অনুন্নয়নের সমস্যাও শোচনীয়। আবার রাজনৈতিক ভাবে তাঁকে এমএনএফ, বিজেপি, কংগ্রেসের সঙ্গেও লড়ে যেতে হবে।
লালডুহোমা বলেন, মূলত রাজ্যের মহিলা ও যুবদের সমর্থনেই তাঁরা জিতেছেন। তাই তাঁদের উন্নয়নে, কর্মসংস্থানে, সীমানা সমস্যা ও শরণার্থী সমস্যার মোকাবিলায় নজর দেবে তাঁর সরকার। মায়ানমার ও বাংলাদেশের চিন-কুকি শরণার্থীদের সাহায্যদানে নারাজ কেন্দ্র কোনও সাহায্য পাঠায়নি। লালডুহোমা জানান, তাঁর সরকার শরণার্থীদের আরও ভাল ভাবে রাখা ও ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। অনতিবিলম্বে শরণার্থীদের বিষয়টি নিয়ে দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। রাজ্যে তাঁর প্রথম লক্ষ্য হবে কৃষকদের উন্নয়ন, রাজ্যের আর্থিক অবস্থার উন্নতিসাধন ও দুর্নীতিমোচন।