বিতর্কিত ধর্ম প্রচারক জাকির নাইক।
জঙ্গি-যোগে ফের নাম জড়াল বিতর্কিত ধর্ম প্রচারক জাকির নাইকের। ভারতে আইএসের নিয়োগকারী সন্দেহে আরশিদ কুরেশিকে গ্রেফতারের পর পুলিশের দাবি, সে জাকিরেরই সহযোগী। ২০০৪ থেকে সে জাকিরের সংগঠন ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত। জনসংযোগ আধিকারিক হিসেবে মাসে ৪৪ হাজার টাকা বেতনও পেত কুরেশি। আপাতত তাকে চার দিনের জন্য হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে জাকিরের সংস্থা মুখে কুলুপ আঁটলেও, চাপে প়ড়ে সুর নরম করেছেন খোদ কর্তা। গ্রেফতারি এড়াতে দেশে ফিরবেন না বলে জানিয়েছিলেন গত সপ্তাহেই। আর এখন বলছেন— ‘‘সরকার যখনই বলবে, তখনই ফিরব।’’ সৌদি শহর জেড্ডা থেকে সম্প্রতি স্কাইপে তিনি এমনটাই জানিয়েছেন বলে দাবি এক সংবাদমাধ্যমের।
কেরল পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযানে নভি মুম্বই থেকে বুধবার রাতে কুরেশিকে গ্রেফতার করে মহারাষ্ট্রের বিশেষ সন্ত্রাস দমন শাখা। সূত্রের খবর, কেরল থেকে নিখোঁজ এক পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই কুরেশিকে গ্রেফতার করা হয়। কেরল সরকার সম্প্রতি ২১ জনের নিখোঁজ তালিকা প্রকাশ করেছে। এর একটা বড় অংশ ইরাক কিংবা সিরিয়ায় গিয়ে আইএসে যোগ দিয়েছে বলে আশঙ্কা গোয়েন্দাদের। আর এদের মগজধোলাইয়ের পিছনে কুরেশিরই হাত দেখছে পুলিশ। তাদের দাবি, গত ১২ বছর ধরে কুরেশি ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত। তাই কেরল-সহ ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুবক-যুবতীদের আইএসে যোগদান নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে জাকিরের সংগঠন।
জাকির নিজে অবশ্য প্রথম থেকেই কোনও জঙ্গিকে চেনেন না বলে দাবি করে আসছেন। পুলিশ তবু ওত পেতেই রয়েছে। দেশে ফিরলেই তিনি গ্রেফতার হতে পারেন বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর। এর আগে কেরলের এক বাবা অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তাঁর দুই ছেলে জাকির নাইকের সঙ্গে দেখা করার পরেই সিরিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। একই অভিযোগ তাঁর সংগঠনের কর্মী আরশিদ কুরেশির বিরুদ্ধেও। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মান্তরিত করে আইএসে যোগ দিতে বাধ্য করার অভিযোগ এনেছেন কেরলের বাসিন্দা এবিন জ্যাকব। এবিনের বোন মরিয়ম ও তাঁর স্বামী বেস্টিন ভিনসেন্ট বেশ কিছু দিন ধরেই বেপাত্তা। আশঙ্কা, কুরেশির প্ররোচনাতেই তাঁরা সিরিয়ায় গিয়ে জঙ্গি দলে নাম লিখিয়েছেন। এবিনের অভিযোগ, লাইব্রেরিতে আটকে রেখে কুরেশি তাঁরও মগজধোলাইয়ের চেষ্টা করে। তাঁকে ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনেও যোগ দিতে বলা হয়। এবিন অবশ্য সেই ফাঁদে পা না দিয়ে কেরলে ফিরে আসেন। আর ফিরেই কুরেশির বিরুদ্ধে কোচি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।