—প্রতীকী ছবি
কে আছেন, আর কে নেই দলে হিসেব রাখেনি যুব কংগ্রেস! গত মার্চে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার দলত্যাগের সময়েই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন জবলপুরের হর্ষিত সিঙ্ঘই। শুক্রবার তাঁর কাছে আসতে থাকে একের পর এক অভিনন্দন বার্তা! নতুন পদপ্রাপ্তির জন্য।
কী ব্যাপার? জবলপুরে যুব কংগ্রেসের নির্বাচন ছিল সে দিন। ১২ ভোটে জিতে হর্ষিত হয়েছেন ‘সাধারণ সম্পাদক’! আর তার পরেই কংগ্রেস বিধায়ক ও কর্মীদের অভিনন্দনের ঢল শুরু হয়ে যায়। হতবাক হর্ষিত। তাঁর কথায়, “সবচেয়ে হাস্যকর ব্যাপার হল, ওই নির্বাচন নিয়ে কারও মাথাব্যথাই নেই, আর আমি কিনা হয়ে গেলাম সাধারণ সম্পাদক! সিন্ধিয়াজির সঙ্গে কংগ্রেস ছেড়েছি গত ১০ মার্চ। যুব কংগ্রেসের নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলাম তিন বছর আগে।”
কী কারণে এমনটা ঘটেছে, হর্ষিতই ব্যাখ্যা করেন সেটা। মননোনয়পত্র জমা নেওয়ার পর থেকে বারবারই পিছিয়ে গিয়েছে যুব কংগ্রেসের নির্বাচন।
প্রথমে মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য। পরে লোকসভা ভোটের কারণে। গত মার্চে জ্যোতিরাদিত্যের সঙ্গে বিজেপিতে যাওয়ার পরে হর্ষিত যুব কংগ্রেসের ওই নির্বাচন থেকে তাঁর নাম বাদ দিতে বলেন। কী কারণে দল ছাড়ছেন, তা জানিয়ে ই-মেল করতে বলা হয় তাঁকে। হর্ষিত সেই অনুযায়ী রাহুল গাঁধী ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথকে সব জানিয়ে ই-মেল করেন। কিন্তু ন’মাসেও খাতা থেকে তাঁর নাম বাদ দিয়ে উঠতে পারেনি যুব কংগ্রেস! হর্ষিতের কথায়, “গোটা মধ্যপ্রদেশেই যুব কংগ্রেস এ ভাবে চলছে। সংগঠনে যে নেই, তাকেও নির্বাচিত করছে।”
ভুল বোঝার পরই বাতিল হয়েছে হর্ষিতের নির্বাচন। রাজ্যের প্রাক্তন যুব কংগ্রেস প্রধান কুণাল চৌধরীর অভিযোগ, “মনোনয়নপত্র বাতিল নিয়ে মিথ্যা বলছেন হর্ষিত। ছেড়ে যাওয়া দলকে বদনাম করতে সস্তা কৌশল নিয়েছেন।”
হর্ষিতের এই ঘটনায় শুধু যে জবলপুরেই যুব কংগ্রেস ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মুখে পড়েছে, তা নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ ছড়াচ্ছে, কার দোষে এমনটা হয়েছে, তা পর্যালোচনায় কংগ্রেস নিশ্চয়ই একটি ‘শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি’ গড়বে এবার। কংগ্রেসের লোকজন ঘরোয়া ভাবে কবুল করছেন, এটাই কংগ্রেসের উপসর্গ। নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে অভিযোগ তোলা বিক্ষুব্ধ নেতাদের চিঠির চাপে অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী সবে মাত্র কয়েক রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা বদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মধ্যপ্রদেশে সরকার টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ কমল নাথ এখনও একাধারে প্রদেশ সভাপতি, আবার পরিষদীয় দলনেতা। জল্পনা, একটি পদ হয়তো তাঁকে খোয়াতে হতে পারে। কিন্তু দলের মাথায় মাথায় এই ধরনের বদলে কি ময়দানের ছবিটা কিছু বদলাবে? এটাই বেশি ভাবাচ্ছে কংগ্রেস কর্মীদের। হর্ষিতের নির্বাচন তো বাড়তি বিড়ম্বনা।