এ ভাবেই গাছে বেঁধে চলে মার।
চুরির অভিযোগে বছর ৩২-এর এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারছেন কয়েক জন। আর কমপক্ষে জনা কুড়ি মানুষ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখছেন! যুবকটির সাহায্যের আর্তি শুনে হাসি-ঠাট্টাও করছেন কেউ কেউ! কয়েক জন আবার অসহায় যুবকটির কাছে গিয়ে অত্যাচারের ভিডিয়ো এবং ছবিও মোবাইলবন্দি করেছেন। পরে পুলিশ যুবকটিকে উদ্ধার করলেও শেষরক্ষা হয়নি। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই প্রাণ হারান যুবকটি। তত ক্ষণে ভিডিয়োয় ভাইরাল বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের বরেলীর এই ঘটনা। যার পরে বিরোধীরা ফের কাঠগড়ায় তুলেছেন ‘যোগীর জঙ্গল-রাজ’কে।
পুলিশ সূত্রের খবর, স্থানীয় এক সরকারি দফতর থেকে কয়েকটি জিনিস চুরির অভিযোগ ওঠে মাদকাসক্ত বলে পরিচিত ওয়াসিদ নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। দফতরটির দুই নিরাপত্তারক্ষী তাঁকে ধরে ফেলেন। এর পর গাছের সঙ্গে বেঁধে ওয়াসিদকে মারধর শুরু করেন ওই দুই রক্ষী। নিমেষেই তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন আরও কয়েক জন।
খবর পেয়ে পুলিশ এসে ওয়াসিদকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। যাঁদের জিনিস চুরির অভিযোগ উঠেছিল, তাঁরা তা ফেরত পেয়ে গিয়েছেন বলে থানায় গিয়ে জানান। ওয়াসিদ তাঁদের প্রতিবেশী, এই যুক্তিতে তাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করতে চাননি, এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সংসার সিংহ। ওয়াসিদের তরফে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরাও কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেননি। ওয়াসিদকে বেধড়ক ভাবে মারা হয়েছে স্বীকার করে নিলেও তাঁদের বক্তব্য ছিল, ‘আঘাত তেমন গুরুতর নয়’। যদিও ভাইরাল হওয়া আরও একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ডান হাঁটুতে চোটের কারণে থানায় বসে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ওয়াসিদ। আর তাঁর দিকে নির্বিকার তাকিয়ে রয়েছেন এক পুলিশকর্মী।
অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী, দু’পক্ষের ‘বোঝাপড়া’ শেষে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় ওয়াসিদকে। যদিও তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই তাঁর মৃত্যুর খবর পৌঁছোয় থানায়। ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ওয়াসিদের দেহ। পুলিশ সুপারের কথায়, ‘‘নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের খুব তাড়াতাড়ি গ্রেফতার করা হবে।’’