উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পিটিআইয়ের তোলা ফাইল চিত্র।
দেশভাগের সময় ভারতে থেকে গিয়ে মুসলিমরা দয়া করেননি। এমনটাই মনে করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর কথায় বিভাজনের সময়, “এঁরা (মুসলিমরা) কোনও উপকার করেননি। এঁরা দেশের উপর কোনও দয়া করেননি।” ‘বিবিসি হিন্দি’-র কাছে একান্ত সাক্ষাত্কারে বুধবার এই বিস্ফোরক মন্তব্য করে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে যোগী।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে দেশজোড়া বিক্ষোভ তথা দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে বার বার মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে। এই আবহে যোগী আদিত্যনাথের দাবি, “মুসলিমদের উচিত ছিল বিভাজনের বিরোধিতা করা, যার ফলে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল।” সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে জড়িয়ে শাহিন বাগের আন্দোলন নিয়েও গত কালের সাক্ষাত্কারে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন যোগী। শাহিন বাগের নামোল্লেখ না করে তিনি বলেন, “এক বিশেষ সম্প্রদায়ের পুরুষেরা আসলে কাপুরুষ। নিজেরা কম্বল মুড়ি দিয়ে বাড়িতে বসে রয়েছেন আর (সিএএ) আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে মহিলা ও সন্তানদের বাইরে পাঠাচ্ছেন।”
গত ডিসেম্বর থেকে সিএএ-র পাশাপাশি জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র বিরুদ্ধে শাহিন বাগে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বসেছেন রাজধানীর মহিলারা। তবে যোগীর দাবি, শাহিন বাগে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হচ্ছে না। মুখে এ দেশে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সমর্থনের কথা বললেও শাহিন বাগ নিয়ে উল্টো কথা বলেছেন যোগী। তাঁর কথায়, “এখানে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হচ্ছে না। আশপাশের বাসিন্দা এবং নিত্যযাত্রীদের তাতে অসুবিধা হচ্ছে।”
আরও পড়ুন: ‘শাহিন বাগে আত্মঘাতী বোমারু তৈরি করা হচ্ছে’, বিতর্কিত মন্তব্য গিরিরাজের
আরও পড়ুন: ‘কিছু টিউবলাইট এমনই’, রাহুলকে পাল্টা কটাক্ষ মোদীর
শাহিন বাগ নিয়ে এই প্রথম নয়, এর আগেও বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। শনিবার একটি নির্বাচনী জনসভায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে অরবিন্দ কেজরীবালকে আক্রমণ করে তাঁর অভিযোগ, দিল্লিবাসীদের উন্নয়নের বদলে শাহিন বাগের আন্দোলনকারীদের বিরিয়ানি খাওয়াতেই বেশি ব্যস্ত কেজরীবাল। তাঁর কথায়, “দিল্লিবাসীদের পরিশ্রুত জল সরবরাহ করতে পারেন না। বিআইএস-এর সমীক্ষা জানিয়েছে, দিল্লি সরকার লোকজনকে বিষাক্ত জল খাওয়াচ্ছে। কিন্তু শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীদের বিরিয়ানি খাওয়াতে পারেন অরবিন্দ (কেজরীবাল)।” সেই সঙ্গে ওই জনসভাতেই তাঁর আরও দাবি ছিল, নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই “আমরা প্রত্যেক সন্ত্রাসবাদীকে চিহ্নিত করা শুরু করেছি। এবং বিরিয়ানির বদলে তাঁদের গুলি খাওয়াচ্ছি।”