যোগী আদিত্যনাথ।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে উত্তরপ্রদেশে বিক্ষোভের সময়ে নিহতদের সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বললেন, ‘‘কেউ যদি মরতে আসে, তা হলে বেঁচে থাকবে কী ভাবে?’’
সিএএ নিয়ে বিক্ষোভের জেরে রাজ্যে ২২ জন নিহত হয়েছে। বিক্ষোভ আটকাতে পুলিশের বলপ্রয়োগ নিয়েও সমালোচিত হয়েছে বিজেপির সরকার। তবে প্রশাসনের যে কোনও হেলদোল নেই, মুখ্যমন্ত্রীর কথাতে তা স্পষ্ট। বিধানসভায় যোগী আজ বলেন, ‘‘যদি কেউ মরার ইচ্ছে নিয়ে আসে, তা হলে বেঁচে থাকবে কী ভাবে?’’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ওই সব ঘটনায় পুলিশের গুলিতে কেউ মারা যাননি। তাঁর কথায়, ‘‘যাঁরা নিহত হয়েছে, দাঙ্গাকারীদের গুলিতেই মারা গিয়েছে তাঁরা। মানুষকে মারার জন্য যদি কেউ রাস্তায় নামে, তবে হয় তার প্রাণ যাবে, না হলে মরবেন পুলিশকর্মীরা।’’
সিএএ-র বিরোধিতায় উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন প্রান্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। লখনউ, কানপুর, প্রয়াগরাজে এখনও বিক্ষোভ চলছে। প্রতিবাদীদের একহাত নিয়ে যোগী বলেন, ‘‘আজাদির স্লোগান দেওয়া হয়েছে। কীসের আজাদি? জিন্নার স্বপ্ন পূরণ করব না কি গাঁধীর স্বপ্নের দিকে এগোব আমরা? ডিসেম্বরে হিংসার সময়ে (সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের জেরে) পুলিশ যে কাজ করেছে, প্রশংসার যোগ্য। রাজ্যে কোনও দাঙ্গা হয়নি।’’ আদিত্যনাথের দাবি, গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন তিনি। একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের মুখোশের আড়ালে থেকে কেউ যদি পরিবেশ বিষিয়ে দিতে চায়, হিংসা ছড়ায়— তা হলে সে ভাষা বোঝে, সেই ভাষাতেই তাকে বোঝাতে হবে।’’
তবে বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশের গুলিতে কোনও মৃত্যু হয়নি বলে যোগী যে দাবি করেছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, বিজনৌরে সিএএ বিরোধী এক বিক্ষোভকারীকে গুলি করে মারার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন সেখানকার পুলিশ কর্তারা। যোগী আজ দাবি করেন, হিংসা ছড়াচ্ছিল যারা, নিজেদের মধ্যে লড়াই করেই প্রাণ গিয়েছে তাদের।
সোমবার ইলাহাবাদ হাইকোর্টে যোগী সরকার জানিয়েছে, সিএএ বিরোধী বিক্ষোভের জেরে রাজ্যে ২২ জন নিহত হয়েছেন। এই বিক্ষোভ আটকাতে পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে ১৮ মার্চ জনস্বার্থ মামলার শুনানি। তার আগে আজ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘হিংসার পিছনে সিমি ও তাদেরই অন্য নাম পিএফআইয়ের কথা সামনে এসেছে। ফলে যে কোনও রকম সমবেদনা জানানোর অর্থ, পিএফআই ও সিমিকে সমর্থন করা।’’