ছবি: পিটিআই।
দলের সম্ভাব্য ‘মুখ’ই যে এমন বিপত্তি হয়ে উঠবেন, কে ভেবেছিল!
বিরোধীদের প্রায় সাফ করে দিয়ে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে জেতার পরে গেরুয়া বসনধারী যোগী আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসানোকে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বলেছিলেন অনেকে। একটা সময় মোদীর পরবর্তী মুখ হিসেবেও ভাবা হচ্ছিল যোগীকে। সেই আদিত্যনাথই পরপর পরীক্ষায় ফেল করে দলের অন্দরে তুমুল চাপে। এমনকি তাঁকে সরানোর দাবিও উঠল।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপিরই দুই বিধায়ক আজ প্রকাশ্যে সরব হন যোগীর বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধে বিজেপির বিধায়ক শ্যাম প্রকাশ তো ফেসবুকে আস্ত কবিতাই লিখে ফেলেছেন। কবিতায় শ্যাম লিখেছেন, ‘‘মোদী নাম সে পা গয়ে রাজ, কর না সকে জনতা মন কাজ। জনতা ওউর বিধায়ক ত্রস্ত, অধিকারী অধ্যক্ষ ভি ভ্রষ্ট (মোদীর নামে রাজত্ব পেয়েছেন, কিন্তু জনতার মনের মতো কাজ করতে পারেননি। জনতা ও বিধায়ক ত্রস্ত, প্রশাসন দুর্নীতিগ্রস্ত)।’’ আর এক বিধায়ক সুরেন্দ্র সিংহ সরাসরি যোগী প্রশাসনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘‘যোগী প্রচার করেছিলেন। হারের দায় তাঁরও। পুরো সরকার দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। আমজনতা সুবিধা পাচ্ছেন না।’’ যোগীকে সরাতে দিল্লিতে দরবারও করছেন তাঁরা।
২০১৯-র কথা মাথায় রেখেই যোগীর উপরে ভরসা করেছিল বিজেপি। কিন্তু তাঁকে নিয়ে খুশি নন মোদী-শাহরা। কিন্তু লোকসভার আগে তাঁকে সরালে ভুল বার্তা যেতে পারে, সে আশঙ্কাও রয়েছে। ফলে হিন্দুত্বের মুখই বিজেপির নতুন কাঁটা!
মোদীর ‘বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত সংখ্যালঘু মুখ জাফর সরেশওয়ালা কৈরানার ফলের পরে আজ বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতিকেই আক্রমণ করেছেন। কৈরানায় জয়ী তবস্সুম আর বিহারের তেজস্বীকে সরাসরি অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘এই ফল ২০১৯ সালের জন্য বড় শিক্ষা। মেরুকরণের রাজনীতি আর কাজ করবে না। একজোট হয়ে দাঁড়ালেই সাফল্য আসবে। কোনও নেতাকেই ‘শেষ’ বলা যায় না। লালু প্রসাদ তেমনই এক দৃষ্টান্ত।’’
বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘জ্যোতিষীরা পইপই করে বলেছিলেন, নয়ডা যাবেন না। নয়ডা গেলে উত্তরপ্রদেশে কেউ ক্ষমতায় ফেরেন না। বাস্তুদোষ, গ্রহদোষ আছে। কিন্তু যোগী মানলেন কই?’’