অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
মঞ্চ মূলত আর্থিক বিষয়ে আলোচনার। কিন্তু সেখানেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), তাৎক্ষণিক তিন তালাক, ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ নিয়ে বিরোধীদের এক হাত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সমস্যায় জর্জরিত ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র কিংবা ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার কোনও প্রত্যয়ী দাওয়াই শোনা গেল না তাঁর মুখে। পুরনো পাতা থেকেই নিজের সাফল্যগাথা গেয়ে গেলেন তিনি! যা দেখে বিরোধীদের একাংশের দাবি, ‘‘একেই তো অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরানোর রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না কেন্দ্র। তার উপরে সিএএ, এনআরসি, দিল্লির হিংসার বিরুদ্ধে দেশ জোড়া বিক্ষোভ। এই প্রবল চাপের মুখে হয়তো নতুন করে বলার কিছু খুঁজে পাননি মোদী।’’
একটি সংবাদমাধ্যম আয়োজিত যে অনুষ্ঠানে মোদী আজ এ সব বললেন, বিজ্ঞাপন অনুযায়ী তার অন্যতম ‘স্পনসর’ ছিল ইয়েস ব্যাঙ্ক। এ দিনই যার ভরাডুবি রুখতে মাঠে নামতে হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে। স্টেট ব্যাঙ্ককে কিনতে হচ্ছে শেয়ার। সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিরোধীদের কটাক্ষ, ‘‘অর্থনীতি নিয়ে নতুন কোনও সুখবর থাকলে, তবে তো সেই সম্পর্কে বলবেন প্রধানমন্ত্রী। অর্থনীতির হাল তো এ দিনের ঘটনাতেই স্পষ্ট।’’
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, স্থিতাবস্থা ভাঙার মৌচাকে ঢিল ছোড়ার স্পর্ধা দেখিয়েছেন বলেই পুরনো ব্যবস্থায় লাভের গুড় খাওয়া শ্রেণির সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁর সরকারকে। এঁদের কথা ও কাজে বিস্তর ফারাক। উদাহরণ হিসেবে বলেন, ‘‘অনেকে লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে মুখর। অথচ তিন তালাক রোখার বিলের বিরোধী। শরণার্থীদের অধিকারের কথা বিশ্বকে বলেন। কিন্তু তাঁরাই সিএএ-বিরোধী। সংবিধানের জয়গান গেয়েও অনেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে দেওয়ার বিরোধী। রায় পক্ষে না-গেলেই অনেকের মুখে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের মনোভাব নিয়ে।’’
আরও পড়ুন: আটক ওমর আবদুল্লার নতুন ছবি প্রকাশ্যে
এ দিন ফের ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হওয়ার স্বপ্ন ফেরি করেছেন মোদী। বলেছেন, তাঁর জমানাতেই অর্থনীতির মাপে বিশ্বে ১১ থেকে ৫ নম্বরে উঠে এসেছে ভারত। এক বারও বলেননি কতটা সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা। বিরোধীরা বলছেন, মোদী বরাবরের মতো এ বারেও পুরো ছবি তুলে ধরেননি। যেমন বলেননি, কত দিন বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে কাশ্মীরকে। সিএএ-তে শরণার্থীদের সুবিধা দেওয়ার ভিত্তি ধর্ম। বিরোধীদের প্রশ্ন, সঙ্কট থেকে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে বার করা বা ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই কোথায় মোদীর বক্তৃতায়?