ফাইল ছবি
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন শেষ। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসে আর ফিরছেন না রাষ্ট্রপতি পদে সদ্য পরাজিত প্রার্থী যশবন্ত সিন্হা। আজ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ফলাফল ঘোষণার পরে এই নিয়ে ভাবনা চিন্তা করেছি। স্থির করেছি, আর কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেব না। রাজনৈতিক দলে যোগ না দিয়েও মানুষের সঙ্গে থাকব।” যশবন্ত ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাঁর তৈরি করা রাষ্ট্রীয় মঞ্চতেই ফের তাঁকে সক্রিয় হতে দেখা যাবে। সেখান থেকে তিনি ‘নিজের কথা’ বলতে পারবেন। এ ছাড়া অন্য কোনও মঞ্চ তৈরি করবেন কি না, তা পরে স্থির করবেন।
গত বছর মার্চ মাসে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন যশবন্ত। দলের জাতীয় সহ সভাপতিও হন। পরপর তিন জন রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পরে বিরোধী পক্ষ থেকে যশবন্তকে চূড়ান্ত করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘বৃহত্তর কারণে’ তিনি তৃণমূল ছাড়ছেন। তিনি হেরে যাওয়ার পরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়, তা হলে কি যশবন্ত আবার তৃণমূলে ফিরবেন? আজ সেই সম্ভাবনা আপাতত নাকচ করে দিয়েছেনযশবন্ত নিজেই।
নিজের পুরনো দলে আর না ফিরলেও যশবন্ত আজ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তৃণমূল এবং নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি। বলেছেন, “আমি সব চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছি বাংলা থেকে। অথচ সেখানে আমি একবারও প্রচারে যাইনি। মমতা আমায় জানিয়েছিলেন যে, অন্য রাজ্যগুলিতে বেশি মনোযোগ দিতে, তিনি পশ্চিমবঙ্গের ভোটের বিষয়টি দেখে নেবেন।” যশবন্তের ক্ষোভ রয়েছে জেডিএস-এর ভূমিকা নিয়ে। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী বাছাইয়ের বৈঠকে দেবেগৌড়া এবং কুমারস্বামী দু’জনেই এসেছিলেন। তাঁরা বিরোধীদের সঙ্গেই ভোট দেওয়ার বিষয়ে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেন যে আমায় ভোট দিলেন না, তা বোধগম্য হল না!” জেএমএম-এর হেমন্ত সোরেনের তাঁকে ভোট না দিয়ে বিজেপি প্রার্থীর পাশে দাঁড়ানোর পিছনে শুধু মাত্র আদিবাসী তাস নয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থার জুজুও দেখছেন যশবন্ত।
যশবন্তের বক্তব্য, “যদি শিবসেনা ভেঙে না যেত এবং যারা কথা দিয়েছিল, তারা ভোট দিত (জেএমএম এবং জেডিএস) তা হলে আমার ভোট শতাংশ ৪৫ শতাংশে পৌঁছে যেত। আমি তা সত্ত্বেও যা ভোট পেয়েছি, তা এর আগে রাষ্ট্রপতি পদে যে কোনও হেরে যাওয়া প্রার্থীর চেয়ে বেশি।” অন্য দিকে তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, মমতা রাষ্ট্রপতি ভোটে বিরোধী দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তার প্রমাণ, শত বিরোধিতা সত্ত্বেও পরাজিত প্রার্থী হিসাবে রেকর্ড সংখ্যক ভোট যশবন্ত সিন্হার পক্ষে পড়া।