দলাই লামা। ফাইল চিত্র।
‘মেকি’ চিন নয়, ‘মুক্ত এবং গণতান্ত্রিক’ ভারতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে চান বৌদ্ধ ধর্মগুরু দলাই লামা। হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় আমেরিকার ইনস্টিটিউট অফ পিস (ইউএসআইপি)-এর তরফে আয়োজিত দু’দিন ব্যাপী এক আলোচনাচক্রে এমনটাই জানালেন তিনি। এই আলোচনাচক্রে ১৩টি দেশের ২৮ জন তরুণ ‘শান্তিরক্ষক’ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে দলাই লামার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছেন।
দলাই লামা তাঁর বক্তব্যে চিনের রাজনৈতিক ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি জানান, ‘কৃত্রিম’ এবং ‘আরোপিত’ চিনের বদলে ‘মুক্ত এবং স্বাধীন গণতন্ত্রের দেশ’ ভারতে মারা গেলেই তিনি বেশি শান্তি পাবেন। নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় এই ধর্মগুরু বলেন, “আমি ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে বলেছিলাম, আমি আরও ১৫-২০ বছর বাঁচব। আমি ভারতেই মারা যেতে চাই, কারণ ভারতের মানুষের কাছে আমি আন্তরিক ভালবাসা পেয়েছি। এর মধ্যে কোনও কৃত্রিমতা দেখিনি।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “চিনের আধিকারিকদের মধ্যে আমার মৃত্যু হলে তাঁরা আমায় যে শ্রদ্ধা জানাবেন, তা একেবারেই মেকি এবং কৃত্রিম একটা বিষয় হবে।”
চিনের সমালোচনা করে তিনি জানান, তিনি এবং তাঁর ধর্মের মানুষরা চিনে অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় ছিলেন। কার্যত বাধ্য হয়েই যে তিনি ভারত সরকারের কাছে আশ্রয় চান, তা-ও জানিয়েছেন তিনি। তবে, ভারতে সুখেই আছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “আমি ভারত সরকারের সম্মাননীয় অতিথি। আমাদের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্কের একটা সুদীর্ঘ ঐতিহ্য আছে।’’ উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে চিন তিব্বতকে দখল করার পর দলাই লামা ভারতে এসে আশ্রয় নেন। তিব্বত নিয়ে তার পর বহু বার চিনের সঙ্গে বোঝাপড়ায় আসতে চাইলেও সাফল্যের মুখ দেখেননি তিনি।
বিশ্বে শান্তিপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ার জন্য ৮৭ বছরের এই ধর্মগুরুকে সারা বিশ্ব সম্মানের চোখে দেখে। চিনের তিব্বত-নীতি নিয়ে অতীতেও বহু বার সরব হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।