জয়পুর সাহিত্য উৎসবে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। পিটিআই
ভারতে গণতন্ত্রের ভিত পোক্ত করতে আরও শক্তিশালী বিরোধীর প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিজিতের মতে, গণতন্ত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে সরকারেরও উচিত বিরোধী শক্তিকে মর্যাদা দেওয়া। রবিবার জয়পুর সাহিত্য উৎসবে এ কথা বলেন তিনি।
আজ অভিজিৎকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভারতে থাকলে তিনি নোবেল পুরস্কার পেতেন কি না। ৫৮ বছরের অর্থনীতিবিদ কিন্তু বলেন, ‘‘সেটা সম্ভব হত বলে মনে করি না।’’ তার পরেই বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ভারতে প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু কাঠামোগত সমস্যা আছে। অভিজিতের কথায়, ‘‘এত বড় কাজ একা সম্ভব হয় না। পরিসর বাড়লে একসঙ্গে অনেকের সাহায্য পাওয়া যায়।’’ তাঁর নোবেল জয়ের কৃতিত্বের বেশির ভাগটাই দিয়েছেন তাঁর মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমআইটি-কে। তিনি বলেছেন, ‘‘এখান থেকে প্রচুর উপকৃত হয়েছি। বিশ্বের সেরা পড়ুয়ারা গবেষণা করেন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাজের অনেকটা জুড়েই আসলে অন্য অনেকের অবদান রয়েছে।’’
ভারতের অর্থনীতি নিয়ে তাঁর উদ্বেগের কথাও এদিন খোলাখুলি বলেন অভিজিৎ। তাঁর মতে, ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের আস্থাটাই নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। গাড়ি বিক্রি না-হওয়া যার অন্যতম বড় লক্ষণ। সেই সঙ্গে বললেন, দেশের ব্যাঙ্কিং শিল্প তীব্র সঙ্কটে। কিন্তু তাকে চাঙ্গা করে তোলার জন্য ত্রাণ দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই সরকার। তাঁর দাবি, শহর ও গ্রামীণ ক্ষেত্র যেহেতু পরস্পরের উপর নির্ভরশীল, তাই শ্লথ অর্থনীতি দেশে দারিদ্র কমানোর ক্ষেত্রেও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
আরও পড়ুন: মোদীকে সংবিধানের কপি পাঠাল কংগ্রেস
অভিজিতের কথায়, ‘‘সরকার জানেই না তারা কোন দিকে চলেছে, কিসের মধ্যে ঢুকছে। কেন্দ্র যদি আরও লগ্নি চায় এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে আরও সম্পৃক্ত হতে চায়, তা হলে আমজনতার কাছে তাদের সঠিক তথ্য-পরিসংখ্যান পৌঁছে দেওয়া জরুরি।’’ এর আগে ভারতীয় অর্থনীতির দুরবস্থা নিয়ে মুখ খোলায় অভিজিৎকে ‘বাম ঘেঁষা’ বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ।