World Emoji Day

ইমোজির মায়ায় মজে প্রবীণেরাও

অনুভূতি, আবেগের এই অক্ষর বা বর্ণমালার মধ্যে স্পষ্টতই একটি ভাষা বা ভাষার প্রতিকল্প দেখছেন কবি জয় গোস্বামী।

Advertisement

ঋজু বসু

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৫:৪২
Share:

ছবি সংগৃহীত।

নিছক ছবি নয়। নিতান্তই আনকোরাও কি বলা যায় এতশত চিহ্নের ছবিকে? প্রশ্নটা অবান্তর এই ‘বিশ্ব ইমোজি দিবসে’। যাঁরা স্মার্টফোনে তত সড়গড় নন বা বয়সে খানিক প্রবীণ তাঁরাও বিচিত্র ইমোজি ভাণ্ডার এড়াতে পারছেন না।

Advertisement

অনুভূতি, আবেগের এই অক্ষর বা বর্ণমালার মধ্যে স্পষ্টতই একটি ভাষা বা ভাষার প্রতিকল্প দেখছেন কবি জয় গোস্বামী। শুক্রবার তিনি বলছিলেন, “আমার ফোন খানিক সেকেলে। তবু হাসি মুখ, কান্না মুখ বা ভেংচি-কাটা মুখের মতো চিহ্নগুলোর সঙ্গে আমিও পরিচিত। কিছু-কিছু আমার মেয়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকি।” জয় হাসছেন, “ভাষা বা শব্দও তো চিহ্ন বিশেষ। এই সব নতুন চিহ্নও যুগের হাওয়া বেয়েই ভাষায় ঢুকে পড়ছে।” নতুন প্রজন্মকে বুঝতে এই চিহ্নগুলিকে বোঝার একটা দায়ও থেকেই যায় বলে মনে করছেন তিনি। আর এক অগ্রজ সাহিত্যিক বাণী বসুও মনে করাচ্ছেন - “ভাষার ঝক্কিতে না-ঢুকে এও এক রকমের আকার-ইঙ্গিতে ভাষা! যা আগেও ছিল।”

বাংলা কবিতাতেও ভ্রূপল্লবে ডাক দেওয়ার কথা বলেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তারও বহু আগে ছড়ার সঙ্গে মিলিয়ে ছবি এঁকে ভাষা নিয়ে মজা করেন সুকুমার রায়ও। তাঁর ‘চক্ষু দুটি ছানাবড়া মুখখানা তাঁর হাঁড়ি’ সদৃশ হারুর ছবিটিকে কারও কারও একেলে ইমোজির প্রতিরূপ বলে মনে হতে পারে। ইমোজি দিনে নিজেদের ব্র্যান্ড চেনাতে বিবিধ পণ্যই নানা রকম মজাদার মুখের ছবি নিয়ে টুইটার-ইনস্টাগ্রামে মরিয়া। অস্ট্রেলিয় ইমোজি বিশারদ জেরেমি বার্জের সৌজন্যে বছর পাঁচ-ছয় ধরেই দিনটি জনপ্রিয়। শুক্রবার টুইটার ট্রেন্ডিংয়ে ইমোজি-দাপট বিলক্ষণ মালুম হয়েছে।

Advertisement

পিকটোরিয়াল বা ছবিওয়ালা লিপি জনপ্রিয় ছিল অতীতের সুমেরীয় বা মিশরীয়দের মধ্যে। “না, না সে-সবের সঙ্গে বড়জোর সূর্যটা ছাড়া আজকের ইমোজির মিলই নেই!”--- সাবধান করছেন, লিপি তত্ত্ববিদ তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক সুস্মিতা বসু মজুমদার। কোভিড-আবহে মাস্ক-ঢাকা মুখটাই যখন ক্রমশ আমাদের সবার মুখ হয়ে উঠছে, তখনও ভাষার নানা পরত বোঝাতে ইমোজিই হতে পারে মুশকিল আসান। পারস্পরিক দূরত্বের যুগে ইমোজির ছোঁয়াও প্রলেপ দিতে পারে। তবে ইমোজির গেরোয় মাপা হাসি, কপট রাগ বা চাপা কান্নাকে পড়তে কিছু ভুলও হওয়া সম্ভব। সেই যে পরশুরাম বলে গিয়েছেন, যাঃ মানে হ্যাঁ-ও হতে পারে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement